এক ম্যাচ হাতে রেখে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। বাকি ছিল ইংল্যান্ডের পর আইরিশদেরও ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য টাইগারদের সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সান্ত্বনার জয় পেয়েছে আইরিশরা। যদিও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ বগলদাবা করেছে স্বাগতিকরাই। শুক্রবার (৩১ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। আগের ম্যাচ থেকে একাদশে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে স্বাগতিকরা। বাদ পড়েন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। অন্যদিকে, একাদশে ঢুকেন শরিফুল ইসলাম এবং অভিষিক্ত রিশাদ হোসেন। প্রথম বলে চার মেরে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেছিলেন লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম ওভারে ৯ রান আসার পর মনে হচ্ছিল আগের দুই ম্যাচের মতো দুর্দান্ত ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে ডিপ পয়েন্টে জর্জ ডকরেলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ৪ বল খেলে ৫ রান করা লিটন। লিটনের বিদায়ের পর বাংলাদেশের ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত ছিলেন। তৃতীয় ওভারে ডিপ মিড উইকেটে কার্টিস ক্যাম্ফারের হাতে ধরা পড়েন ৪ রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের ওভারে ক্যাম্ফারের বলে অ্যাডায়ারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন ১৪ রান করা ওপেনার রনি তালুকদার। দলীয় ২৪ রানে ৩ উইকেট পড়লে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে অ্যাডায়ারের বলে মিড উইকেট সীমানার কাছে বেন হোয়াইটের হাতে ক্যাচ হন ৬ বলে ৬ রান করা সাকিব। পরের ওভারে বেন হোয়াইটের বলে টেক্টরের হাতে ক্যাচ তুলে ১২ রান করা হৃদয় ফিরে যান। অভিষেকে ব্যাট হাতে রিশাদ হোসেন রানের খাতা খোলেন ছক্কা মেরে। তবে দশম ওভারে আইরিশদের পক্ষে অভিষিক্ত ম্যাট হামফ্রেসের বলে বোল্ড হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৭ বলে ৮ রান করেন রিশাদ। দুই বল পর তাকে অনুসরণ করেন তাসকিন আহমেদ। হামফ্রেসের বলে ক্যাম্ফারকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৬১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর নাসুম আহমেদ ও শামীম হোসেন মিলে বাংলাদেশের ইনিংসের হাল ধরেন। অষ্টম উইকেটে দুজন মিলে ৩৩ রান তোলে টাইগারদের সম্মানজনক সংগ্রহের স্বপ্ন দেখান। তবে দলীয় ৯৪ রানে ভেঙে যায় তাদের জুটি। গ্যারেথ ডিলানির বলে পল স্টার্লিংয়ের ক্যাচ হয়ে আউট হন ১৩ রান করা নাসুম। নাসুম বিদায় নিলেও এক প্রান্ত আগলে লড়ে যাচ্ছিলেন শামীম। শামীমের ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকের ওপর ভর করেই বাংলাদেশের স্কোর তিন অঙ্কে পৌঁছায়। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ফিওন হ্যান্ডের শিকার হওয়ার আগে ৪২ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৫১ রান করেন শামীম। ১২৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ডকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও রস অ্যাডায়ার। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৭ রানে তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হন ৭ রান করা অ্যাডায়ার। ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে নিয়েই সাফল্য পান শরিফুল ইসলাম। প্রথম বলেই ৪ রান করা লরকান টাকারকে লিটন দাসের ক্যাচ বানান এ পেসার। ৪১ রানে দুই উইকেট পতনের পর পল স্টার্লিং এবং হ্যারি টেক্টর মিলে আয়ারল্যান্ডকে জয়ের দিকে টেনে নেন। তৃতীয় উইকেটে দুজন মিলে ৬৮ রানের জুটি গড়েন। ১২তম ওভারে স্টার্লিংকে শান্তর ক্যাচ বানিয়ে এ জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত লেগ স্পিনার রিশাদ। আউট হওয়ার আগে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ২২তম অর্ধশতক হাঁকানো আইরিশ অধিনায়ক ৪১ বলে ৭৭ রান করেন। তবে স্টার্লিং বিদায় নিলেও তাতে আয়ারল্যান্ডের জয়টা শুধু সাময়িক বিলম্বিত হয়েছে। হ্যারি টেক্টর এবং কার্টিস ক্যাম্ফারের ব্যাটে ইনিংসের পাঁচ ওভার থাকতেই বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। টেক্টর বলে রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে, বলে রানে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্ফার।