মোশাররফ হোসেন: ভূমিহীন ও হত দরিদ্রদের জন্য বাড়ি দিয়ে বিশ্ব নেত্রী শেখ হাসিনা যখন বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন তখন একশ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা, নির্মাতা ও সুবিধা ভোগী রাজনীতিবিদরা যোগসাজশ করে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে বিশাল কাজের ক্ষতি করেছেন। সরকার অবশ্য জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিয়েছে। তদন্ত করে সকলকে আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়ার জন্য প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইতিহাস তৈরি করলে ও তার দেয়া ১লক্ষ ১৮হাজার ৩০৯টি বাড়ির মধ্যে ২২জেলার ৩৬ উপজেলায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে বলে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন। এ কাজে সংশ্ষ্টিতা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা র মুখখো সচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে । এতে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া হবে। জেলা প্রশাসক, নির্বাহী কর্মকর্তাসহ যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ঘর শুধু ঘর নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে এই বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে সবার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৈথিল্যের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেবেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন, অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি পেতেই হবে। কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, মোট ২২ জেলার ৩৬টি উপজেলায় ঘর নির্মাণে নানা অভিযোগ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে প্রশাসনের পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে সাবেক ইউএনও (বর্তমানে উপসচিব) শফিকুল ইসলাম, বগুড়ার শেরপুরের সাবেক ইউএনও মো. লিয়াকত আলী সেখ (বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক), মুন্সীগঞ্জ সদরের সাবেক ইউএনও রুবায়েত হায়াত, বরগুনার আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান ও মুন্সীগঞ্জ সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ পাঁচ কর্মকর্তাকে গত কয়েক দিনে পৃথক আদেশে ওএসডি করা হয়। ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জের সাবেক ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। বাকি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। যেসব উপজেলায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল সেসব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিদর্শন দলের সদস্যরা। তাদের প্রতিবেদনে ঘর নির্মাণে অনিয়ম ও অবহেলার চিত্র উঠে এসেছে। এ অনিয়মে জড়িত অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্লোগান হলো- ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এর সঙ্গে আমাদের সবার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ক্রটিবিচ্যুতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৈথিল্যের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি পেতেই হবে। কাউকেই বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।
নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে একটি অংশ তৈরি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের বাড়ি নিয়ে কথা উঠেছে। এসব বাড়ি কোথাও ভেংগে পড়েছে আবার কোথাও ধস নেমেছে । এরা কারা? আদর্শ কাজের পরিকল্পনা ধ্বংস করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।