রংপুরের কাউনিয়ায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির মরদেহ দাফন-কাফনে এগিয়ে আসেনি পরিবার ও গ্রামবাসী। এমন অমানবিক আচরণের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উলফৎ আরা বেগমের অনুরোধে একটি স্বেচ্ছাসেবী দল শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে ওই ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সারাই ইউনিয়নের কাঁচু আলুটারী গ্রামে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের আব্দুল গফুর মাস্টারের ছেলে শাহাদত আলম (৩৫) সপ্তাহখানেক ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় তিনি নিজ বাড়িতে মারা যান।
এদিকে করোনার উপসর্গে নিয়ে মারা যাওয়ায় সংক্রমণের ভয়ে পরিবারের লোকজন এবং ওই গ্রামের কেউ তার মরদেহ গোসল ও দাফনে এগিয়ে আসেনি। প্রায় ১০ ঘণ্টা মরদেহ বাড়ির উঠানে পড়ে ছিল।
শাহাদত আলম ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। আগে থেকেই তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তার এক ভাই সমবায় অফিসার, এক ভাই খাদ্য পরিদর্শক ও এক বোনের ঢাকায় বিয়ে হয়েছে। বৃদ্ধা মাসহ বাড়িতে ছিলেন শাহাদত। মৃত্যুর পর তার মরদেহের পাশে মাকেও আসতে দেয়নি পরিবারের লোকজন।
পরে রাত ১০টার দিকে সারাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উলফৎ আরা বেগম খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ওই ব্যক্তির মরদেহ দাফনে সহযোগিতার জন্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক মাহমুদুল হাসান পিন্টু, জামিল হোসাইন, সোহেল, সুমন চৌধুরী, আরশাদুল ইসলাম, আলি আকবর হালিম ও জসিম জয়কে ফোন করেন। পরে স্বেচ্ছাসেবী দল শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক ওই ব্যক্তির মরদেহ বাড়ির পাশে কবরস্থানে দাফন করে।
সারাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।