কানাডা আওয়ামী লীগের বিতর্কিত পকেট কমিটি নিয়ে গত ২৮ শে অক্টোবর, শনিবার ৩০৩০ ডেনফোর্থ এভিনিউয়ের রেড হট তন্দুরীর হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ নেতাকর্মীরা। উল্লেখ্য যে, গত ১৫ই অক্টোবর কানাডা আওয়ামী লীগের বিতর্কিত পকেট কমিটি সাংবাদিক সম্মেলন করে চরম মিথ্যাচার, ভুয়া তথ্য ও মনগড়া বক্তব্য দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের একটি লিখিত বক্তব্যে তারা পদ বঞ্চিত সদস্যদের প্রতিবাদ করতে উৎসাহিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কানাডা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও অন্টারিও আওয়ামী লীগের সদস্যদের দোষারোপ করেছে। যাহা চরম অসত্য. কেননা কমিটিতে যাদেরকে না জানিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারাও এ প্রতিবাদে শরীক ছিল। প্রতিবাদ হয়েছে বিশেষ করে একটি বিতর্কিত, অগ্রহণযোগ্য পকেট কমিটির বিরুদ্ধে। চারটি শিষ্য পদে নেতৃত্ব নেত্রী নির্বাচন করে দিবেন বলে দুই বৎসর পূর্বে টরন্টো ও মনট্রিয়ল শহরে সভা আহবান করে ফারুকি হাসান চারটি শিষ্য পদে একাধিক প্রার্থীর প্রার্থিতা গ্রহণ করেন। নেত্রী কতৃক এই চার পদে নেতৃত্ব নির্বাচিত সাপেক্ষে সকলকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নেত্রী বরাবরে পেশ করবেন। কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে পদলোভী, সুবিধাবাদী ও চরম বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি পকেট কমিটি গঠন করেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সেই কমিটি গত ২৩ শে সেপ্টেম্বর অনুমোদন দিয়েছেন বলে প্রচার করেন, যা তাদের সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিও ফুটেজেও এক নেতার বক্তব্যও উঠে আসে। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে তারা সেই কমিটির মূল কপি দেখাতে পারেননি। অধিকন্তু কমিটির যে কপি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে তারিখ উল্লেখ আছে ২১শে সেপ্টেম্বর। কমিটি অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘অনুমোদন দেওয়া হল বা দেওয়া গেল’ লিখা হয়ে থাকলেও এখানে ‘কাজ করার অনুমোদন দেয়া হল’ লিখা হয়। প্রথম ও তৃতীয় পৃষ্ঠায় দলীয় সভাপতির স্বাক্ষরে ‘শেখ হাসিনা’ স্বাক্ষরিত, কিন্তু দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ‘হাসিনা’ স্বাক্ষর দেখা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সরকারি ও বেসরকারি সকল ক্ষেত্রে কেবল ‘শেখ হাসিনা’ স্বাক্ষর করে থাকেন। স্বাক্ষর ও স্বাক্ষরের তারিখের এই তারতম্যের কারণে কমিটি অনুমোদনের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ বটে।
এই পকেট কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদের অনেককেই কমিটিতে রাখা হয় নাই। বিষয়টাকে জায়েজ করতে গিয়ে তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে প্রবাসী কমিটির সদস্য সংখ্যা ৭৫ জন এবং গঠনতন্ত্র অনুসরণ করতে গিয়ে সবাইকে কমিটিতে রাখা সম্ভব হয় নাই বলে মিথ্যাচার করা হয়। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে প্রবাসী কমিটির বিষয় কোন কিছু উল্লেখ নেই। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে তাদের ন্যূনতম কোন ধারণা নেই। গঠনতন্ত্রের সদস্যপদ ৫(২) ধারা মোতাবেক পূর্ণাঙ্গ সদস্য না হইলে কেহ সংগঠনের কোনও স্তরে কর্মকর্তা নির্বাচিত হইতে পারিবেন না। এক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রকে লঙ্ঘন করে কখনও নূন্যতম সদস্যও ছিলনা এমন কয়েকজনকে কমিটিতে কর্মকর্তা করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী তথাকথিত অভিষেকের দিন মানববন্ধনে সমবেত হয়ে বিতর্কিত পকেট কমিটি নিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে। এক পর্যায় ফারুকী হাসানের পালিত সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একনিষ্ঠ সৈনিক তাজুল ইসলাম। তথাকথিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমরুল ইসলাম সহ অন্যদের মুষ্টিঘাতে তাজুল ইসলাম ফুটপাতে লুটিয়ে পড়ে যা কোন রকমেই মেনে নেওয়া যায় না। সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি কর্তৃক অনুমোদিত কমিটির বিরুদ্ধে অশালীন আচরণ করা দলীয় সভাপতিকে অসম্মান করার শামিল। প্রতিবাদকারীরা কমিটি নিয়ে কোন অশালীন আচরণ করেন নি। প্রতিবাদকারীরা নিবেদিত প্রাণ কর্মী ও দলীয় সভাপতির প্রতি পরম শ্রদ্ধাশীল। নেত্রীকে অসম্মান করার প্রশ্নই উঠে না। বরং নেত্রীর নির্দেশনাকে উপক্ষা করে ফারুকি হাসান পকেট কমিটি গঠন করে প্রকারান্তরে নেত্রীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। প্রতিবাদকারীরা তাই সোচ্চার হয়েছে। ফারুকী হাসান দীর্ঘ ২০ বৎসর যাবত অন্টারিও আওয়ামী লীগকে কুক্ষিগত করে রাখে। এবার কানাডা আওয়ামী লীগের পকেট কমিটি করে কানাডায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিভাজন সৃষ্টি করে দলের ভাবমূর্তিকে দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ করেন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে ও প্রবাসে যখন আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত করা প্রয়োজন, তখন ফারুকি হাসানের এই ধরনের গর্হিত কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল। এই পকেট কমিটির গঠনের ফলে নির্বাচনের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখার দলীয় নির্দেশনা হল উপেক্ষিত। এই পকেট কমিটির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতিবাদ চলতে থাকবে আগামী দিনেও। দলীয় সভাপতি বরাবরে এ ধরনের কমিটির বিষয়ে অবহিত করা হবে। -বিজ্ঞপ্তি