মোশাররফ হোসেন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, বাতাসে কার্বন মনো অক্সাইড ও আর্কটিকে বরফের পাহাড়ে ফাটল মিলে কানাডার জীবন যাপন বদলে গেছে।
বসন্ত বাতাসে মে মাস থেকেই কানাডা জুড়ে দাবানলের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ বনানচল। এখন চলছে বায়ু দূষণ। তাপমাত্রা বেড়ে ৩০থেকে ৪০ ডিগ্রি হচ্ছে। আবার নেমে যাচ্ছে ১২ থেকে ২০। রীতিমতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
বনাঞ্চলের ৪১৩ টিতে আগুন লেগেছে। যার মধ্যে ২১৩টিতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পুড়ে গেছে ২লক্ষ ৮৪হাজার ৪২৯হেক্টর বনাঞ্চল। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৮০০০ বাড়ি। জরুরি ভাবে সরিয়ে নেয়া হয়েছে নাগরিকদের।
আলবার্টা, কুইবেক বৃটিশ কলাম্বিয়া, নোভো এসকোশিয়া, অন্টারিও, উইনভসর ও নোনাভাট, পিরিনস এডওয়ার্ড আইল্যান্ড সহ তিন টেরেটরিতে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার ও ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর সহযোগিতা নেয়া হয়েছে ৫ শতাধিক সেনা নিয়োগের কথা জানিয়েছেন জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের বিমানসহ বনাঞ্চলের সব সেবা প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করছে। অবস্থার উন্নতিতে দেশজুড়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ইউনিট যোগ দিয়েছেন। এসব খবর জানিয়েছে বিবিসি নিউজ।
এদিকে মংগলবার সকালে দাবানলের ধোঁয়া বাতাসে ভেসে হেলিফেকসর সেন্ট বেরি থেকে অটোয়া, আসওয়া, কিংস্টন ঘুরে টরেন্টোয় চলে আসে। বিশাল অন্টারিও লেক থেকে এটা ছড়িয়ে পড়ে বৃহত্তর টরেন্টোর ১১টি এলাকায়।
দিনভর আকাশ মেঘলা ছিল। কখনো রোদ, কখনো ধোঁয়াশা। শীতল বাতাস। তবে বায়ু দূষণ হয়েছে ৪থেকে ৬ মাত্রার। এটা ৭ হলে স্বাস্থ ঝুঁকি থাকে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের সংগে কথা বলে সিটিভি ও সিপি ২৪ জানিয়েছে।
স্বাস্থ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। অন্টারিও প্রদেশের সংসদ জরুরি আলোচনা করে জনগণের জন্য সতর্কতা ঘোষণা করেছে।
শ্বাসকষ্ঠরোধে মাস্ক পড়ার কথা বলা হয়েছে।
বৃটিশ কলাম্বিয়ার সেন্ট জন, হেলিফেকস, কুইবেকে খনি এলাকায় পাতালে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আলবার্টা ও একইভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে সিটি করপোরেশন।
গাছ লাগানো, পরিকল্পিত বনাঞ্চলেও কাজ হচ্ছে না। মানুষ প্রাকৃতিক অবস্থার ভারসাম্য রক্ষা না করে গবেষণার নামে, অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নেমেছে। পারস্পরিক সহযোগিতা না করে জলবায়ুর পরিবর্তনের কথা মনে না রেখে ধ্বংসাত্মক মিশন পরিচালনা করছে। এর প্রভাবে পৃথিবীর বায়ু দূষণ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বহু দেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তারা আর কবে সচেতন হবে। পৃথিবী বাঁচাতে এটা সময়ের দাবি। কেউ বলে ফাগুন, কেউ বলে পলাশের মাস… আমি বলি মানব সভ্যতার সর্বনাশ।