1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
September 16, 2024, 3:25 am
সংবাদ শিরোনাম :

কোরআনে নবীজির পবিত্রতার ঘোষণা

  • প্রকাশিত : রবিবার, নভেম্বর ৮, ২০২০
  • 348 বার পঠিত

মোঃ আনিসুর রহমান : মহানবী (সা.) মানবজাতির জন্য আল্লাহর সর্বশেষ প্রেরিত রাসূল। আল্লাহ তাঁকে সর্বোত্তম শিক্ষক ও আদর্শ মানব হিসেবে প্রেরণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলের মধ্যে আছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ২১)

আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আয়াতটি মহানবী (সা.)-এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারণ তথা তাঁর কথা, কাজ ও অবস্থার অনুসরণ বিষয়ক একটি মূলনীতি। মানবজাতির জন্য মহানবী (সা.)-এর আগমন আল্লাহর বিশেষ দান, অনেক বড় অনুগ্রহ এবং স্পষ্টত উপহার। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘আল্লাহ মুমিনের ওপর অনুগ্রহ করেছেন যখন তাদের মধ্যে তাদের থেকে নবী প্রেরণ করেছেন।’ (সুরা : আল ইমরান, আয়াত : ১৬৪)

কবি হাসসান বিন সাবিত (রা.)-এর কবিতায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামগ্রিক পবিত্রতা ও সমকালীন বিশ্বাসের ধারণা পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘আমার চোখ আপনার চেয়ে সুন্দর কাউকে কখনো দেখেনি/আপনার চেয়ে উত্তম কাউকে তার মা জন্ম দেয়নি/আপনি সব দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন/কেমন যেন আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।’ (আহসানুল কাসাস : ২/২৮৪)

পবিত্র কোরআনে মহানবী (সা.)-এর সব ধরনের পবিত্রতার সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। যেমন—

১. চিন্তা ও মননের পবিত্রতা : মহানবী (সা.)-এর চিন্তা, ভাবনা ও মেধাশক্তি ছিল পঙ্কিলতামুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ২)

২. কথা ও বচনের পবিত্রতা : মহানবী (সা.) কথাবার্তায় সংযত ও পবিত্র ছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং তিনি মনগড়া কথাও বলেন না। এটা তো ওহি যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩-৪)

৩. শ্রবণশক্তির পবিত্রতা : পবিত্র কোরআনের আয়াত থেকে মহানবী (সা.)-এর শ্রবণশক্তির পবিত্রতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং তিনি মনগড়া কথাও বলেন না। এটা তো ওহি যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৩-৪)

৪. পবিত্র দ্বিনের ধারক : মহানবী (সা.) পবিত্র দ্বিন ইসলামের ধারক ও বাহক ছিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘তিনি সেই পবিত্র সত্তা, যিনি তাঁর রাসুলকে পথনির্দেশ ও সত্য দ্বিনসহ প্রেরণ করেছেন। যাতে তা সব দ্বিনের ওপর বিজয়ী হয়। যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৩৩)

৫. ওহি পৌঁছা ও তা গ্রহণে পবিত্রতা : মহানবী (সা.) সঠিকভাবে ওহি গ্রহণ ও তা প্রচার করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তাঁকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী প্রজ্ঞাবান—সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ৫-৬)

৬. হৃদয়ের পবিত্রতা : নবী করিম (সা.)-এর হৃদয়ের পবিত্রতা ঘোষণা করে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি যা দেখেছেন, তাঁর অন্তর তা অস্বীকার করেনি।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ১১)

৭. দৃষ্টিশক্তির পবিত্রতা : দৃষ্টিশক্তি নবী (সা.)-কে কখনো বিভ্রান্ত করেনি। আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর দৃষ্টিবিভ্রম হয়নি, দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যুতও হয়নি।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ১৭)

৮. অন্তরের পবিত্রতা : আল্লাহ মহানবী (সা.)-এর অন্তরকে সব ধরনের সংকীর্ণতামুক্ত করেন এবং তাতে প্রশস্ততা দান করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি কি আপনার হৃদয়কে প্রশস্ত করিনি?’ (সুরা : আশ-শরাহ, আয়াত : ১)

৯. মর্যাদা ও খ্যাতির পবিত্রতা : আল্লাহ মুহাম্মদ (সা.)-কে পৃথিবীর সর্বোচ্চ সম্মান, মর্যাদা ও খ্যাতি দান করেছেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং আমি আপনার খ্যাতিকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি।’ (সুরা : আশ-শরাহ, আয়াত : ৪)

১০. ভারমুক্ত জীবন : আল্লাহ মহানবী (সা.)-কে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিষ্কলুষ ও ভারমুক্ত রেখেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি অপসারণ করেছি আপনার ভার, যা ছিল আপনার জন্য অতি কষ্টদায়ক।’ (সুরা : আশ-শরাহ, আয়াত : ২)

১১. মানবতার বন্ধু : মহানবী (সা.) ছিলেন মানবতার বন্ধু। মানুষ ও মানবতা বিপন্ন হয় এমন বিষয়ে তিনি কষ্ট পেতেন। আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে এসেছে একজন রাসুল। তোমাদের যা বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১২৮)

১২. পবিত্র পথের দিশা দানকারী : রাসুলুল্লাহ (সা.) মানুষকে সরল ও সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি তো কেবল সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেন।’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৫২)

১৩. পবিত্র কিতাবের ধারক : নবীজি (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ কোরআন একটি আলোকদীপ্ত ঐশী গ্রন্থ, যা মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই এ কোরআন হিদায়াত করে সে পথের দিকে, যা সুদৃঢ় এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনদের সুসংবাদ দেয় যে তাদের জন্য আছে মহা পুরস্কার।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৯)

১৪. সেরা উম্মতের নবী : আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মদিকে ‘উত্তম জাতি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎ কাজে নিষেধ কোরো এবং আল্লাহতে বিশ্বাস করো।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)

১৫. আল্লাহর সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত সহচর : মহানবী (সা.)-এর সাহাবি বা সহচররা ছিলেন আল্লাহর সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরীক্ষা করেছেন। তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও পুরস্কার।’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ৩)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১০০)

১৬. সর্বাঙ্গীণ পবিত্রতার অধিকারী : মহানবী (সা.) ছিলেন সর্বাঙ্গীণ পবিত্রতার অধিকারী এবং আদর্শ মানুষের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’ (সুরা : কলাম, আয়াত : ৪)

সর্বাঙ্গীণভাবে পূতপবিত্র নবী (সা.)-এর অনুসরণই মানবজাতিকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘একজন রাসুল, যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতগুলো পাঠ করে, যারা মুমিন ও সৎকর্মপরায়ণ তাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে আনার জন্য।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ১১)

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park