তুচ্ছ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে হৃদয় হোসেন (২৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার বাবা আওয়ামী লীগ নেতা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ মামুন আহত হয়েছেন। ২০ জুলাই রাতে শহরের কৈগাড়ি এলাকায় এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। হৃদয় ২১ জুলাই সন্ধ্যায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মারা গেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দোকানসংলগ্ন গাছের পেরেকে (তারকাঁটা) লেগে গেঞ্জি ছিঁড়ে যাওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বাবা ও ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। তবে স্বজনরা দাবি করেছেন, পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন জানান, আবদুল মতিন (২৬) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ খবর পাঠানো পর্যন্ত মামলা হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মামুনুর রশিদ মামুন সারিয়াকান্দির চন্দনবাইশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় কড়িতলা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি পরিবার নিয়ে বগুড়া শহরের কৈপাড়ায় থাকেন। কৈপাড়া বাজারে হৃদয় ভ্যারাইটি স্টোর নামে তার একটি দোকান আছে। মামুন ও তার ছেলে হৃদয় ওই ব্যবসা পরিচালনা করেন। ২০ জুলাই মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বাবা ও ছেলে দোকানে ছিলেন।
এ সময় ধাওয়াপাড়া এলাকার সন্ত্রাসী স্বাধীন, তার সঙ্গী আবদুল মতিন, রাব্বী ও আশিকসহ ৪-৫ জন সিএনজি অটোরিকশার দোকানে আসে। তারা সিগারেট নিয়ে চলে যাওয়ার সময় দোকানের পাশে একটি গাছে থাকা পেরেক লেগে স্বাধীনের গেঞ্জি ছিঁড়ে যায়। স্বাধীন ও অন্যরা এজন্য হৃদয়কে দায়ী করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। হৃদয় এর প্রতিবাদ করলে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে স্বাধীন ছুরি বের করে হৃদয়ের পেটে ঢুকিয়ে দেয়। শিক্ষক আওয়ামী লীগ নেতা মামুন ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে রাব্বী তার পেটে ছুরিকাঘাত করে। এরপর দুর্বৃত্তরা বীরদর্পে চলে যায়।
আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা মামুন ও হৃদয়কে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঈদের দিন ২১ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হৃদয় মারা যান। নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে দোকানের পাশে গাছে থাকা পেরেক লেগে গেঞ্জি ছিঁড়ে যাওয়ায় দুর্বৃত্তরা বাবা ও ছেলেকে ছুরিকাঘাত করেছিল।
তবে হৃদয়ের মা দাবি করেছেন, এসব সন্ত্রাসী দোকানে জিনিস নিয়ে টাকা দেয় না। এ নিয়ে পূর্ববিরোধের জের ধরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হত্যায় জড়িত সন্দেহে ধাওয়াপাড়া এলাকার শাফিউলের ছেলে আবদুল মতিনকে আটক করা হয়েছে। মামলায় তার নাম এলে গ্রেফতার করা হবে। হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী স্বাধীনের নামে ওয়ারেন্ট আছে। হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।