মোশাররফ হোসেন: কোভিড ১৯ এর দুর্বিসহ জীবন যাপন কাটিয়ে অনুকূল আবহাওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মূল উৎসব ঈদ উল ফিতর ছিল শুক্রবার। কানাডার টরেন্টোয় ২৫একর জায়গা জুড়ে ডেনটোনিয়া পার্ক। আমার ৩৩ তলা কনডো কমপ্লেক্সে এর পাশে যেখানে রয়েছে বাঙালির অহংকার মহান একুশে র স্থায়ী শহীদ মিনার। ফুটবল, বেসবল, টেনিস, বাস্কেটবল মাঠ।
শিশুদের রৌদ্র স্নানের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া। বাসার বেলকনি থেকে সব দেখা যায়। আর এখানের বেসবল মাঠের সবুজে ভরা ঘাসের অংশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের নামাজ। সকাল ১০টায় নামাজ এ যোগ দিতে বৃহত্তর টরেন্টোর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মুসলিম ভাই ও বোন, শিশু কিশোর যুবক-যুবতীর ঢল নামে। রোজা শেষে এ যে পরম করুণাময় আল্লাহর পরম উপহার ।
ইমাম সাহেব নামাজ শেষে কানাডা, বাংলাদেশ সহ বিশ্বজুড়ে সকল মানুষের কল্যাণের জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানান। বৃহস্পতিবার মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা নাসা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে বলে অবহিত করেন। সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে বলে জানার পর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শুক্রবার ঈদ উৎসব ঘোষণা করা হয়। আর এভাবেই আজ ঈদ আনন্দ হয়েছে ঘরে ঘরে। শহরের বিভিন্ন স্থানের মসজিদে। টরেন্টোর বায়তুল আমান মসজিদে ৫বার, বায়তুল মোকাররম, বায়তুল জান্নাহ, আবুবকর, মদিনা, সহ সব মসজিদে কাজের দিন হওয়ায় দফায় দফায় নামাজ আদায় করতে থাকেন মুসললিগণ।
ফজরের নামাজ পড়েই তৈরি হতে থাকে সবাই। সেমাই, ফিরনি, খেয়ে সকাল ৯টা থেকে ডেনটোনিয়া পার্কে ঈদের নামাজ আদায় করতে যেতে থাকে । দলে দলে যোগ দেন নামাজে। শীতের আমেজ কেটে গেলেও হালকা শীতের সহ রকমারি পোশাকে সেজে আসেন ।
এখানে বাংলাদেশ কনস্যুলেট টরেন্টোর কনসাল জেনারেল লুৎফুর রহমান, ফেডারেল এমপি নাথানিয়েল এরিসকিন ইসমিত, এমপিপি ডলি বেগম, মেরি মেকমোহন, অন্টারিও প্রদেশের এনডিপি সংসদ নেতা, মেয়র প্রার্থী কাউন্সিলর বেরাডফোরড, অলিভিয়াসহ বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ নামাজের আগে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বক্তৃতা করেন।
সবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার আলিঙ্গন, কোলাকুলি ।
উৎসবে মেতে ওঠেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এতে যোগ দেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান সহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ। মনট্রিয়াল, অটোয়া, আলবার্টা, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, ভানকুভার, কুইবেক, মেনিটোবা, সাসকাচুযানসহ সমগ্র কানাডা জুড়ে অনুষ্ঠানে মেতে ছিল সবাই ।
কানাডায় সব ধর্মের মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়, কানাডা উদার ও কললানকামী দেশ। এখানে ধমীয় উৎসব পালন করে সবাই। কারও উৎসবে বাঁধা দেয়া হয়না। সরকার সহযোগিতা করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।