তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সিরিয়া সীমান্তের কাছে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঘটনায় নিখোঁজ বাংলাদেশি বগুড়ার গাবতলীর গোলাম সাঈদ রিংকুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রিংকুর চাচা হাসান বিন জলিল তরুণ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিংকুকে উদ্ধারের খবর দেয় তুরস্ক দূতাবাসের কর্মকর্তারা। রিংকুর চাচা জানান, নিখোঁজের খবর জানার পর শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীরা। রিংকুর জীবিত উদ্ধারের খবরে তার পরিবারে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। দূতাবাসের বরাত দিয়ে স্বজনরা জানান, রিংকু ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছিলেন। উদ্ধারকর্মীরা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেন। শীতের কারণে রিংকু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।তবে, তিনি গুরুতর আহত হননি। পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, গোলাম সাঈদ রিংকু বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কাগইল ইউনিয়নের দেওনাই গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানীর ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি ২০১১ সালে স্থানীয় কাগইল করুণাকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ২০১৩ সালে বগুড়া শহরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ২০১৫ সালে বৃত্তি নিয়ে তুরস্কে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান। রিংকু সেখানে কারামানমারাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগে অনার্স শেষ করেন। মাস্টার্স শেষ বর্ষে লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি কলেজে পার্টটাইম শিক্ষকতা করেন। তিনি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খাহরামানমারাসে বাস করতেন। রিংকু ও নূরে আলম নামে তার এক বন্ধু যে ভবনে থাকতেন সেটি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে নুর আলমকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ ছিলেন রিংকু। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্যমতে, স্থানীয় সময় সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়া সংলগ্ন তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছেই কম্পন ঘটে। এর গভীরতা ছিল ১৭.৯ কিলোমিটার। তবে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২৪.১ কিলোমিটার। প্রতিবেশি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পে সিরিয়ার বহুভবন ধসে পড়ে। বুধবার সকাল পর্যন্ত দুই দেশে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৭ হাজার ৮২৬ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তুরস্কে ৫,৮৯৪ জন ও সিরিয়ায় ১,৯৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।