দীর্ঘ এক বছরেও স্ত্রী ও কন্যার হদিস পায়নি ভূক্তভোগী চিত্তরঞ্জন। এই সময়ে থানা, আদালত, কেশবপুর, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, গ্রাম্য সূধীজন সর্বত্র ধর্না দিয়েছেন কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নগদ অর্থ, স্বর্নালঙ্কার তার থেকেও বড় কথা এক স্ত্রী ও একটি কন্যা যা তার সম্বল হারিয়ে গেছে পারিবারিক জীবন থেকে।
জানা গেছে, মৃত সুধির বিশ্বাসের পুত্র চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস (৬০) যশোর শহরের ৫নং ওয়ার্ড চোরমারা দিঘীর পাড় এলাকায় ভাড়া থাকতেন স্ত্রী দুলালী বিশ্বাস (৪০) ও কন্যা প্রতিমা বিশ্বাস (১৪) কে নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। তার গ্রামের সদর উপজেলার ১০নং চাঁচড়া ইউনিয়নের রুপদিয়া গ্রামে। তিনি চাষী কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এমন ভালোই চলছিল। কিন্ত বিধিবাম। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর যখন চিত্তরঞ্জন বাড়িতে ছিলেন না, তার জমানো শেষ সম্বল ৭৫ হাজার টাকা, স্বর্নের চেইন, এক জোড়া কানের দুল মোট দুই ভরি ওজনের স্বর্নালঙ্কারসহ কাপড়চোপড় এটা সেটা নিয়ে বাড়ি ছাড়ে। প্রথমে চিত্তরঞ্জন ভাবেন হয়তো বেড়াতে গেছে চলে আসবে। কিন্ত ১দিন দুদিন করে দিন পার হয় তবু তারা ফেরত আসেনি। তিনি তার মোবাইল ফোনে ফোন করলে দেখেন সেটি বন্ধ রয়েছে। এর ওর কাছে জেনে এবং লোকজনের কাছে তিনি শুনতে পান জনৈক ফুরকান তার স্ত্রী ও কন্যা কে নিয়ে অজানায় চলে গেছে। তখন তার আর বুঝতে বাকি থাকে না যে স্ত্রী ভূল পথে পা বাড়িয়েছেন।
তার মনে ভয় দানা বাঁধে যে, ফুরকান তার নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার নিয়ে হয়তো তার স্ত্রী ও কন্যা কে হত্যা করে থাকবে। তিনি বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান। বিজ্ঞ আদালতেও তিনি মামলা করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সদর যশোরে তার দায়েরকৃত মামলাটি চলমান। এছাড়া সদর সহকারী জজ আদালতের মামলাটি তদন্তভার পড়ে পিবিআইয়ের উপর। তবে সেখানেও সুফল মেলেনি।
চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস জানান, তিনি খুজতে যশোর খুলনা সাতক্ষীরা জেলার কোথাও বাদ রাখেননি। কেশবপুর উপজেলার পাজিয়া ইউপির মনোহর নগর শশুরবাড়ী কয়েক দফা খুজলেও শশুর পরিতোষ সরকার, শাশুড়ী সুচিত্রা সরকার কোন সদ্যুত্তর দেয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বর, গ্রামের সুধীজনের কাছেও তিনি বার বার ধর্না দিয়েছেন। কিন্ত কেউ তাদের খোজ দিতে পারেননি। খুজতে খুজতে এবং মানুষের দুয়ারে ধর্না দিতে দিতে তিনি পেরেশান। এখন তার মনে হচ্ছে ওরা হয়তো আত্মগোপন করে থাকবে। দিনে রাতে কত যে চোখের জল ফেলেছেন তিনি কিন্ত তাতেও কোন কাজ হয়নি।
যখনই শুনেছেন অমুক স্থানে তারা আছেন উড়ো খবর শুনেই তিনি সেখানে চলে গেছেন তারপর ব্যর্থ মনোরথে ঘরে ফিরেছেন খালি হাতে। একা ঘরে তার এখন প্রতিদিন কান্না ও খোজা ছাড়া আর যেন কোন কাজ নেই। কেউ হয়তো একটু সহায়তা করছেন, সামান্য সহানুভূতি দেখাচ্ছেন কিন্ত যাদের হাতে সেই দায়িত্ব সেই পুলিশ তাকে সামান্য সহযোগিতা করছে না। জনপ্রতিনিধিরা সহযোগিতায় এগিয়ে আসলেও শশুরবাড়ির লোকেদের অসহযোগিতায় তিনি থেকে গেছেন অন্ধকারে। এখন একদিকে স্ত্রী কন্যা কে খুজছেন।
বিজ্ঞ আদালত থানা পুলিশের পাশাপাশি চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস ঘোষনা করেছেন, তার স্ত্রী দুলালী বিশ্বাস ও কন্যা প্রতিমা বিশ্বাস কে
কেউ খুজে দিতে পারলে তাকে যথার্থই পুরস্কৃত করা হবে। অবশ্য এখনো পর্যন্ত সেই ঘোষনায় কেউ সাড়া দেয়নি তা বলাই বাহুল্য।