মোশাররফ হোসেন: বাংলাদেশে নির্বাচন এলেই আজকাল বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা বেশি করে তৎপর হয়ে ওঠেন ।বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ভাবখানা এমন যেন তাদের পছন্দের লোকজন বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন হতে হবে।
ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী রাষ্ট্রদূতরা কেবলমাত্র দুইজনের মধ্য কার কূটনৈতিক সম্পর্ক, সংস্কৃতি, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ বিষয়ক এবং উন্নয়নের সহযোগিতা কাজ করে থাকেন।
কেহ কারো দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন না। দেশের সার্বভৌমত্ব লংঙ্গন করার সুযোগ নেই। কোন দেশে নির্বাচন কীভাবে হবে, তা নিয়ে কিছুই বলা যায়না। এমনকি সরকারের উপর এসব বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করা যায় না।
সরকার প্রধান, মন্ত্রি, নির্বাচন কমিশন, দূর্নীতি দমন কমিশন, রাজনৈতিক দল, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী,সাংবাদিক, পেশাজীবি , এনজিও কাউকেই এ বিষয়ে কোন কথা বলার সুযোগ নেই।
বিশ্বের কোন ও দেশে এসব করা না গেলেও বাংলাদেশে এসব লংঙ্গন করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বার বার হস্তক্ষেপ করে চলেছে। এসব আইন বহির্ভূত কাজের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক আদালতে মামলা করলে অবাক হবার কিছুই থাকবেনা। দেশে ও বিদেশের আদালতে যাওয়া দেশপ্রেমিক জনগণের অধিকার আছে।
তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে একদা যারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, মার্কিনীদের কাল হাত ভেংগে দাও শ্লোগান দিতেন, এদের অনেকেই এখন মার্কিনীদের বলছেন, ওরা মানবতাবাদী ,গণতন্ত্র রক্ষা করছে। আসলেই কী তাই!
বরং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, গত নির্বাচনে ভোট চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তবে অপর এক অভিযোগে ট্রাম্প জর্জিয়াতে আত্মসমর্পণ করার পর ২০লক্ষ মার্কিন ডলারের জামিন পেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে আইনের লড়াই এরকম। আবার রিপাবলিকান সমর্থকেরা গত নির্বাচনের পর ক্যাপিটাল হিলে চড়াও হয়েছিল। এরকম গণতান্ত্রিক চর্চা অন্য কোন দেশে আছে কী ?
বর্তমানে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার পর এখন বিদেশীদের তৎপরতা বেড়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সবার দৃষ্টি বাংলাদেশের নির্বাচন।
উন্নয়নের মহাসড়কে এখন বাংলাদেশ।
ঠিক এরকম অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের শক্তি জনগণ। এ শক্তি সবসময় দেশকে রক্ষা যেমন করেছে তেমনি এগিয়ে নিয়েছে।
নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন সরকার শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবী করে যে আন্দোলন করছে বিএনপি তার কোন সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। বরং সাংবিধানে আছে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচিত সাংসদদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। আর তা পরিচালনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশন সাধীণভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। তাদের সকল প্রকার সহযোগিতা করবেন সরকার। এসময় আইনশৃঙখলা বাহিনীও তাদের সহযোগিতা করবেন।
অনির্বাচিত কাউকে নিয়ে অন্তর্বর্তী কোনও সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কোন আইন নেই। ৯০দিনের মধ্যে নির্বাচন শেষে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সরকার গঠন করবেন। এটাই গণতান্ত্রিক সকল দেশে ক্ষমতার পালাবদলের সাংবিধানিক আইন।
কিন্ত বাংলাদেশে কিছু ক্ষমতা লোভী এনজিও, পেশাজীবি, মিডিয়া, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী , উচচাভিলাসি সামরিক ও বেসামরিক আমলা রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে চলেছেন। তারা বিদেশের টাকায় চলেন। জনগণের ভোটে যারা কখনও নির্বাচিত হবার সম্ভাবনা নেই। তারা গুলশান, বনানীর বিদেশী দূতাবাসের রকমারি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
কেউ কেউ রাষ্ট্রবিরোধী কাজে অংশ নেন। কেউ কেউ আইএসআই, মোসাদ গোয়েন্দাদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে দেশবিরোধী কাজ করছেন বলে খবরের পর বাংলাদেশের আইন শৃঙখলা বাহিনী তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে ঢাকা থেকে জানা গেছে।
এরফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ১৪দলীয় জোট ,আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক মাঠের কর্মসূচি বাড়িয়েছে।
এসবের মধ্যেই বাংলাদেশের নির্বাচন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসী তৎপরতা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত সতর্ক বার্তা দিয়েছে। আসন্ন জি ২০ সম্মেলনের সময়ে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেবে।
বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ১৬ কোটি মানুষ ও রাজনৈতিক দল, পেশাজীবি, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র কৃষক শ্রমিক ,আইন শৃংখলা বাহিনী, সরকার সতর্ক আছেন।
বাঁশি বাজানো হলে দেশবিরোধী লোকজন কী করবেন? ভাবুন।