সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু-পাথর তোলার সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক। আজ সোমবার দুপুরের দিকে উপজেলার ঘাগটিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার কামাল হোসেন দৈনিক সংবাদের তাহিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি এবং তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কামাল হোসেনকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থার একটি ভিডিও দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যায় আহত কামাল স্থানীয়দের কাছে তার বাঁধন খুলে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন, কিন্তু স্থানীয়রা যারা বেঁধে রেখেছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একজন আরেকজনকে বলাবলি করছেন।
তাহিরপুরের স্থানীয় সাংবাদিক আবির হাসান মানিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুপুর দেড়টার দিকে তাহিরপুরের ঘাগটিয়া এলাকায় যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু পাথর উত্তোলনের সংবাদ সংগ্রহে সেখানে যান কামাল। তখন বালু-পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতরা তার ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক মারধর ও পরে স্থানীয় বাজারে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখেন’।
ঘাগটিয়া গ্রামের মাহমুদুল ইসলাম, দীন ইসলাম ও রইস উদ্দিন প্রথমে হামলা করেন বলে স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জে জেলা পুলিশের তাহিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তাহিরপুরের বাদাঘাট ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পুলিশ বিষয়টি প্রাথমিক তদন্ত করে দেখছে। মামলা হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকের উপর হামলা ও নির্যাতন অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা।’
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে দীর্ঘদিনের আন্দোলন প্রতিবাদের পরও কঠোর আইনগত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এর সাথে জড়িতরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আর এরই বহিঃপ্রকাশ এই ঘটনা। দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হলে এরকম ঘটনা আরো ঘটতে থাকবে।’
তাহিরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই এলাকার অত্যন্ত দরিদ্র কিছু মানুষ বালু-পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। আমরা প্রায়ই অভিযান চালাতে যাই, তখন তারা পালিয়ে যায়। তবে সাংবাদিকের উপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনায় আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি এখন জানতে পেরেছি। মামলা হলে প্রশাসনিকভাবেও আমরা বিষয়টি দেখব’।