টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহি বাস পারাপার হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে আন্তঃজেলা বাস চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রোববার (৯ মে) গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত এসব বাস গাড়ি পারাপার হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৮ মে) সকাল ৬টা থেকে রোববার (৯ মে) সকাল ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু্র উপর দিয়ে ২৬ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। পারাপারের মধ্যে ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রো, ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল বেশি। এরমধ্যে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহি বাসও সেতু পার হয়েছে। আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষ বিভিন্ন পন্থায় বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে।
সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা গেছে, অনেক মানুষ তাদের পরিবার নিয়ে ব্যাটারি চালিত, সিএনজি চালিত, লেগুনাযোগে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পারে আসছেন। এরপর কেউ উঠছেন খোলা ট্রাকে, কেউ বা মোটরসাইকেলে সেতু পার হয়ে পশ্চিমপাড়ে যাচ্ছেন। মালবাহী ট্রাকগুলোর প্রায় প্রত্যেকটিতেই মালামালের উপর যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়।
এছাড়া মহাসড়কে মাইক্রো ও ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল প্রচুর। এগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রীদের যেতে দেখা যায়। এতে মোটরসাইকেলে সেতু পূর্ব গোলচত্ত্বর হতে সেতুর পশ্চিম সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় পর্যন্ত জনপ্রতি দুইশ টাকা করে চারশ টাকায় দুইজন করে যাত্রী নিয়ে মোটরসাইকেলগুলো যাত্রী নিচ্ছেন। বেলা ১১টার বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পাড়ে মেসার্স উজ্জল ফ্লাওয়ার মিলসের একটি ট্রাক দাড়াতেই সেই ট্রাকে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন উত্তরবঙ্গগামী মানুষজন।
আরও পড়ুন:
এসময় কথা হয় বগুড়ার বাসিন্দা ফয়সাল হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ভোর রাতে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি। ভেঙে ভেঙে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পর্যন্ত আসছি। এরপর সেতু পার হওয়ার জন্য কোন বাস পাইনি। ফলে বাধ্য হয়ে খোলা ট্রাকে করে সেতু পার হয়ে পশ্চিম পাড়ে যাচ্ছি। এরপর সেখান থেকে আবার বগুড়ায় যাবো।
মির্জাপুরের গোড়াই এলাকায় বিল্ডিং কন্ট্রাকশনে কাজ করতেন শাহ মোহাম্মদ মানিক ও আব্দুল হামিক মিয়া। ঈদে বাড়ি যাবেন তাই গোড়াই থেকে প্রথমে সিএনজি চালিত অটোরিক্সাযোগে সখিপুর, এরপর টাঙ্গাইল হয়ে এলেঙ্গায়। তারপর এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পারে আসছেন সেতু পার হতে। এখন সেতু পার হয়ে কিভাবে যাবেন বাড়ি সেই চিন্তায় মগ্ন তারা।
যাত্রী পরিবহন করা ট্রাক চালক ইয়াকুব জানান, ট্রাকে মানুষ তোলা নিষেধ রয়েছে। তবে পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে সেতু পার হচ্ছি। পুলিশ দেখলেই মামলা দিয়ে দিবে। এতে সেতু পূর্ব গোলচত্ত্বর থেকে সেতুর পশ্চিম গোলচত্ত্বর ও সয়দাবাদ পর্যন্ত ট্রাকে জনপ্রতি ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫০টাকা করে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত জানান, নির্দেশ অমান্য করে দূরপাল্লার যেসব বাস মহাসড়কে চলাচল করছে তাদের ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে। তবে কিছু কিছু বাস কৃষি শ্রমিক পরিবহনের চলাচল করছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চলছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাতে কিছু বাস সেতু পার হয়েছে। তবে সেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রত্যেক সিটে একজন করে ছিল। এছাড়া মহাসড়কে ছোট ছোট যানবাহনের পাশাপাশি ট্রাকের সংখ্যা বেশি রয়েছে।