সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে ‘বিজয়ী’ ঘোষিত মেয়র লুৎফুর রহমানের শপথ স্থগিত হয়ে গেছে। পুনরায় গণনা করতে বলা হয়েছে তিন কেন্দ্রের ভোট। পাশাপাশি মেয়র পদের গেজেটও স্থগিত করেছেন উচ্চ আদালত।
মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সোহেল আমিনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন ৩ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন। মঙ্গলবার এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আমিন।
আদালতের আদেশে কানাইঘাট ফাটাহিজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিবনগর দারুল কোরআন মাদ্রাসা এবং দুলর্ভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের ফলাফল পুনঃগণনার আদেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফাটাহিজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার শাখাওয়াত হোসেনকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
রিটকারী স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী সোহেল আমিন বলেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত কানাইঘাট পৌরসভা নির্বাচনে ৫নং ফাটাহিজল ভোট কেন্দ্রে মোট ভোট ছিল ২৭১১। কানাইঘাট পরিসংখ্যান অফিসের তথ্যমতে, এই ওয়ার্ডে ৫২৯ জন প্রবাসী রয়েছেন এবং অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ ভোট সেন্টারে শতভাগ ভোট কাস্টিং হলে ২১৮২ ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার থেকে প্রদত্ত ভোটার তালিকায় ২৬১১ ভোট কাস্টিং দেখানো হয়েছে।
যাতে আমার প্রাপ্ত ভোট ৬৬৬, দেখানো হয়েছে ২৬৯; দুর্লভপুর সেন্টারে আমার প্রাপ্ত ভোট ৭১৩, দেখানো হয়েছে ৫১৩ আর শিবনগর সেন্টারে আমার প্রাপ্ত ভোট ২৮৯, দেখানো হয়েছে ৮৯ ভোট। পৌর নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে আমাকে পরাজিত করে নৌকার প্রার্থীকে ১৪৬ ভোট বেশি দেখিয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
আমি পুনঃগণনা ও সঠিক নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার জন্য মহামান্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে মহামান্য হাইকোর্ট রিটটি আমলে নিয়ে দুই দিন শুনানির পর মঙ্গলবার কানাইঘাট পৌরসভার মেয়র পদের গেজেট ও শপথ স্থগিত ঘোষণা করেছেন।
নৌকা প্রতীক নিয়ে কানাইঘাটে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত মেয়র লুৎফুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, মিথ্যা অভিযোগ তুলে রিট করেছেন। এখনও বিস্তারিত জানি না, আদালতের সব কাগজপত্র পেলে বিস্তারিত বুঝব। তিনি বলেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই আমিও ন্যায়বিচার চেয়ে উচ্চ আদালতে যাব।