মোশাররফ হোসেন : পদ্মা সেতুর শত্রুরা আজ আর নেই…। বাঙালির অহংকার নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু আজ বিস্ময়। দ্বিতল সেতুর নীচ তলায় রেলপথ তৈরি হয়েছে। মার্চ মাসেই মাওয়া থেকে ভাংগা পরীক্ষামূলক রেল চলবে বলে প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন জানিয়েছেন। এখানে ৪১ কিলোমিটার পথ আছে।
ঢাকার মাওয়া স্টেশনের কাজ ৮৯ভাগ ও শরীয়তপুরের জাজিরা স্টেশন ৮৭ ভাগ কাজ হয়েছে। সেতুর রেলপথে লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এরপর পাথর দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ রেল শুরুর জন্য ইতোমধ্যে ৩০টি যাত্রীবাহী আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি কোচ এখন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। চীনের বিশেষজ্ঞদের কাছে কোচসমুহের বাবহার ও পরিচালনা বিষয়ক কাজ শিখে নিচ্ছেন বাঙালি রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারী। যার ১২টি শোভন, ৬টিএসি শয়ন, ৬টি এসি চেয়ার। এসব কোচের রঙলাল সবুজ । সৈয়দপুর কারখানার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাদেকুর রহমান ফোনে একথা জানিয়েছেন।
অপরদিকে প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) তাবাসসুম বিনতে ইসলাম বলেছেন, আগামী জুন মাসে ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেল চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চীনের এক্সিম ব্যাংকের ৮৫ভাগ ও বাংলাদেশের ১৫ ভাগ অর্থে ঢাকা যশোর এবং বরিশাল পটুয়াখালী পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত রেল চলবে ২০৩০ সালের মধ্যে।
ঢাকা গেন্ডারিয়া মাওয়া, ভাংগা… রাজবাড়ী, যশোর ২০৫,২ কিলোমিটার রেল চলবে। এ পথে ফরিদপুর পাচুরিয়া রাজবাড়ী লাইনে ১৪টি নতুন স্টেশন, কম্পিউটার পরিচালিত রিলে,ইনটারলকড সিগনাল, টেলিযোগাযোগ উন্নয়নে কাজ চলছে।
অপরদিকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথ ভাংগা -বরিশাল – পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা, পায়রা সমুদ্র বন্দর, বিমান বন্দর পর্যন্ত সংযুক্ত হবে।
এ পথে তালমা থেকে কাজ চলছে। টেকেরহাট, মাদারীপুর, গৌরনদী, বাকেরগঞ্জ, বিমান বন্দর, বরিশাল, পটুয়াখালী, আমতলি,পায়রা বিমান বন্দর, পায়রা সমুদ্র বন্দর, কুয়াকাটা রেল চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোট ১৯টি স্টেশনসহ ২১৩ কিলোমিটার রেললাইন তৈরি হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। ইতিমধ্যে বুড়িশ্চর নদীর ওপর গত ১৪ অক্টোবর ২০২১ পায়রা ব্রিজ খুলে দেয়া হয়েছে।
এরকম রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ২০১৬-৪৫ দোহাজারি কক্সবাজার, মংলা পোর্ট, টুংগিপাড়া -বরিশাল, পার্বত্য চট্টগ্রামে রেল সংযোগ কাজ করে এগিয়ে যেতে ৬টি ভাগে ২০২১- ২২ অর্থ বছরে বাজেট পাস করিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এতে মোট ২৩০টি প্রকলপ রয়েছে।যাতে বেয়ায় ধরা হয়েছে ৫,৫৩,৬৬২ কোটি টাকা।
এর আওতায় রয়েছে ৭৯৮,০৯কিলোমিটার নতুন ও ৮৯৭ কিলোমিটার বর্তমান ডুয়েল লাইন। সংস্কার ও আধুনিক প্রযুক্তির বাবহার। ১৮৮৪ সালের কোলকাতা খুলনা রেলপথ ১৯৬৫সালে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।২০০০সালে বন্ধন, মিতালি এক্সপ্রেস আবার শুরু হয়েছে।
মূলত মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত মানুষ সহ সকলের চলাচলের জন্য বর্তমান সরকার এ কাজ করেছে বলে রেল মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন।
তিনি ফোনে বলেন, দক্ষিণ কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারের ঘুমধুম, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কুয়াকাটা, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যশোর হয়ে কোলকাতা, চিলাহাটি দিয়ে ভারত, নেপাল, এশিয়ান রেলওয়ের সংগে যুক্ত করা হচ্ছে। ১৯৬০ সালের ১,১৪,০০০ কিলোমিটার রেলপথ এর আওতায় রয়েছে।