মোশাররফ হোসেন : পদ্মা সেতুর সেই শত্রুরা আজ আর নেই ,,,। কোথায় হারিয়ে গেল চক্রান্তকারীরা আজ আর নেই,,। এটা পদ্মা সেতুর সূচনা দিনের জয়গান । আছে থিম সং।
আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে,, মিশে আছে বাংলাদেশে । নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে । যার রূপকার বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কন্যা শেখ হাসিনা । বাংলাদেশে চারবার নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌছে দিয়েছেন । পদ্মা সেতু , পায়রা সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকায় মেট্রোরেল সহ আরও একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শুরু হবার পর বদলে যাবে বাংলাদেশ । অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়ে মানুষের আয় বাড়বে । এটা দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের ভাল লাগছেনা । পরনির্ভর নয় , সয়ংসমপূরণোতা অর্জনে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান বাঘ ।
এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ১৮কোটি মানুষ মানুষের মধ্যে চলছে ক্ষণগণনা । পদ্মা সেতুর সূচনা হবে ২৫জুন ।সকাল ১০টায় মাওয়া প্রান্তে শেখ হাসিনা সেতুর ফলক উদ্বোধন করবেন ।এরপর দেশী ও বিদেশী সৃধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন । টোল দিয়ে সেতু অতিক্রম করে জাজিরা যাবেন। মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় যোগ দেবেন। আওয়ামী লীগের দক্ষিণ অনচলের ১৮টি জেলায় গণজাগরণ তৈরি হয়েছে । ১০লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটানোর জোর চেষ্টা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ । একই সাথে বাংলাদেশের সকল জেলা উপজেলা ও ইউরোপ , আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, অস্ট্রেলিয়া।
আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন সংগঠন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সময় আনন্দ উৎসব পালন করবে বলে জানা গেছে ।
পদ্মা সেতু নির্মাণের বিশাল আনন্দে অংশ নেবেনা বিএনপি । তারা সরকারের আমন্ত্রণ গোরোহন করেনি। তবে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দল,পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ দেশের জনগণের অংশগ্রহণে সেতু উদ্বোধন হবে ।
৬: ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু ২৬ জুন যানবাহন চলাচল করবে । ইতিমধ্যে টোলসহ যাবতীয় নির্দেশনা ঘোষণা করা হয়েছে । শুরুতে ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নীচ দিয়ে রেল চলবে বলে রেল মনতিরি জানিয়েছেন ।
সেতু নির্মাণ করার জন্য বিশশো ব্যাংক, এশীয় উননযন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক অর্থ দেবার চুক্তি স্বাক্ষর করে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তুলে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার অসুবিধায় পড়ে গিয়েছিল ।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক , জাতীয় ব্যাংক সমূহের রিজার্ভ এর মুনাফার টাকা নিয়ে শুরু হয়েছিল পদ্মা সেতুর নির্মাণ মহা প্রকলপ । এটা ছিল বাংলাদেশের দৃঢ়তা । শেখ হাসিনার সাহসিকতার সংগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ডঃ আতিউর রহমান, আবুল বারাকাত, ডঃ মসিউর রহমান, যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সচিব মোশাররফ হোসেন, পরবর্তীতে সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সহ বিভিন্ন সাহসী মানুষ সাফল্যের সঙ্গে পদ্মা সেতুর কাজ সমাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সর্বোপরি বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে টাকা দেবার আগে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ কানাডার আদালত খারিজ করে দেয় । এর নেপথ্যে ছিলেন বাংলাদেশের দুজন সম্পাদক, একটি ব্যাংকর সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ নোবেল জয়ী সহ অনেকে ।যার তথ্য প্রমান সরকারেরকাছে রয়েছে বলে জানা গেছে ।
পদ্মা সেতুর নির্মাণে চীন কারিগরী মহা প্রকলেপর কাজ শেষ করেছে । বিশ্ব ব্যাংক সরে দাঁড়ানোর জন্য দুই বছর বিলম্ব হয়েছে ।অসটেরেলিযার মিহি সিমেন্ট ও ইস্পাত মিলে সেতুর আয়ুষকাল ১০০বছর । ঝড় ,ভূমিকম্প ক্ষতি রোধে বিশেষ বেয়াবসথা রয়েছে ।থাকছে রঙিন আলোকরশ্মি খেলা ।
তিনটি বিশ্বরেকর্ড গড়েছে পদ্মা সেতু ।আমাজন নদীর পর খরসোরতা পদ্মা নদীর পানিপ্রবাহ বিশাল জলরাশি সমুদ্রে পতিত হয় ।রয়েছে সড়ক, রেল ও নৌযান চলাচলের উপযোগী বেয়াবসথা । গতিরোধে রয়েছে হালকা বাঁক ।নদীশাসনে নেয়া হয়েছে বিশ্বসেরা ডাচ কোম্পানির পরামর্শ ।নদীর তীরে গড়ে তোলা হবে বিশেষ নগর ।বিমান বন্দর।দক্ষিণের ১৮জেলার মানুষের জীবন বদলে যাবে । তিন ঘন্টায় ঢাকা গিয়ে আবার নিজ গ্রামে ফিরে আসবে মানুষ । স্বপ্ন এখন বাস্তব।
মহাভূমিকা পালন করেও শেখ হাসিনা নিজে নামে সেতু না করে ঐতিহাসিক কাজ করেছেন।যা বিরল।
একনজরে পদ্মা সেতু
আনুমানিক খরচ : ৩০,১৯৩ কোটি টাকা (ইউএস ডলার ৩.৮৬৮ বিলিয়ন)
মূল সেতুর দৈর্ঘ্য : ৬.১৫০ কিমি
প্রশস্ত : ২২.৫ মিটার
ভায়াডাক্ট : ৩.১৪৮ কিমি (রোড), ৫৩২ মি. (রেল)
অ্যাপ্রোচ রোড : ১২.১১৭ কিমি
উচ্চতা : ১২০ মি.
জমি অধিগ্রহণ : ১৪৭১ হেক্টর
মূল সেতুর কাজের উদ্বোধন : ১২ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম স্প্যান স্থাপন : ৭ অক্টোবর ২০১৭
অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ শুরু : ১২ নভেম্বর ২০১৩
মোট পিলার ও স্প্যান : ৪২টি ও ৪১টি
লেন : ৪ লেন
লোড লিমিট : ১০,০০০ টন
পানির মধ্যে গভীরতা : ১২২ মি.
মূল রেল প্রকল্পের কাজ শুরু : জুলাই ২০১৮
মোট রেললাইনের দৈর্ঘ্য : ১৬৯ কিমি
রেললাইন স্থাপনের আনুমানিক ব্যয় : ৩৯,২৪৬.৭৯ কোটি টাকা (ইউএস ডলার ৪.৫৫ বিলিয়ন)
রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ হবে : জুন ২০২৪