বিশেষ সংবাদদাতা : ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় রবিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছিল উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এক আদেশে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এর আগে সদরপুরেও একইভাবে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এ বিষয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেন, ‘১৪৪ ধারা খেলো বিষয় নয়। ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখে ১৪৪ ধারা জারির এ সিদ্ধান্ত হাস্যকর।’ ১৪৪ ধারা জারির ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।
ভাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিবুর রহমান খান বলেন, ‘ফেসবুকে সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে বেলা ১১টার দিকে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বানের কথা আমরা জানতে পারি। আবার ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনও একই সময় ওই স্থানে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের জন্য অনুমতি চায়। এর প্রেক্ষিতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সকাল ১০টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার কথা বলা হলেও এ সংক্রান্ত মাইকিং শুরু হয় সাড়ে ১০টা থেকে। হঠাৎ করে ভাঙ্গায় ১৪৪ ধারা জারি করার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন ও তার অনুসারীরা।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আমি বা আমার কোনো সমর্থকের কর্মসূচি আজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলাকায় ছিল না। তাই ১৪৪ ধারা জারির কোনো অবশ্যকতা ছিল না।
তিনি আরো বলেন, ‘ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখে ১৪৪ ধারা জারির এ সিদ্ধান্ত হাস্যকর। ১৪৪ ধারা একটি বড় বিষয়। জরুরি আপতকালীন সময়ে এর প্রয়োগ করা হয়। ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি খেলো করে দেয়া ঠিক হচ্ছে না।’
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভাঙ্গায় ১৪৪ ধারা জারির করার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে মনে করলে আমরাই ইউএনও’কে ১৪৪ ধারা জারির জন্য পরামর্শ দিতাম। পুলিশের সঙ্গে কোন রকম আলাপ না করেই উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। তার পরও ঘোষিত ১৪৪ ধারা রক্ষার জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’
উল্লেখ্য ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার উপ নির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হয়েও নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন জানান নিক্সন চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তীব্র বিরোধিতা করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলও চাওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে নিক্সন চৌধুরীর সমর্থনে নৌকা মার্কা জয়ী হয়। নির্বাচনের দিন রাতেই নিক্সন চৌধুরী দাবি করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোটে হারাবর জন্য এবং বালু ব্যবসায়ী বিএনপি প্রার্থীকে জেতাবার জন্য ফরিদপুর প্রশাসন নির্বাচনের দিন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে। এরপরই অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়া হয় একটি অডিও ক্লিপ। ১৩ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে নিক্সন চৌধুরী জানান, এই অডিও ক্লিপটি সুপার এডিট করা। তিনি এই কথাগুলো বলেননি। বরং তার বিরুদ্ধে সক্রিয় ব্যক্তিরা এটি তৈরি করেছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার ফরিদপুর সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের বিরুদ্ধে চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা করেন।