মোশাররফ হোসেন: একটি পতাকা, একটি দেশ, সবার প্রিয় বাংলাদেশ। চল চল ফোবানাতে চল…
গরমের শেষ পক্ষ চলছে টরেন্টোতে। ছাত্র ছাত্রীদের ছুটি শেষ। শনিবার থেকে সোমবার কর্মছুটি।
এরকম সময়ে বাঙালিদের বাংলাদেশ উৎসব ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ উত্তর আমেরিকার আয়োজন ফোবানা।যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন শহরে এ উৎসব চলছে এখন। টরেন্টো ডনভেলি পার্কওয়ে হোটেল ও টরেন্টো শেরাটনে ফোবানার উদ্বোধন হয়েছে। তবে মূলধারা সংযুক্ত বাংলাদেশ সোসাইটি এস সি আয়োজিত ফোবানা উৎসব ছিল জমজমাট। বাংলাদেশ কনসুলেটের কনসাল জেনারেল লুৎফর রহমান ডনভেলি পার্কওয়ের ইয়র্ক ভিলে কেক কেটে ফোবানা উৎসব উদ্বোধন করেন। এসময় ফোবানা স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, সদস্য ডঃ আবু যুবায়ের দারাসহ কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ সামসুল আলম, সদস্য সচিব খোকন রহমান, কনভেনর মোহাম্মদ হাসানসহ উৎসব পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কনসাল জেনারেল বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে বাঙালি সংস্কৃতির প্রসার ও চেতনার জাগরণে ফোবানার ভুমিকা প্রশংসনীয়। টরেন্টোতে এ কাজে বাংলাদেশ কনসুলেট সবসময় সহযোগিতা করবে।
অপরদিকে উত্তর আমেরিকা ও কানাডা ফোবানার প্রানপুরুষ ডঃ আবু যুবায়ের দারা বলেন, উত্তর আমেরিকা ও কানাডাতে বাঙালিদের লাল সবুজ পতাকা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তাদের অনুসরণ করবে আজকের প্রজন্ম। তবে এজন্য দরকার সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।
স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বলেন, কারা কি করছে সেটা বড় নয়। এটাই মূলধারার ফোবানা। কানাডার টরেন্টোর উৎসব আয়োজন সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
উদ্বোধন পর্বে অন্যান্যদের মধ্যে ভেনু কনভেনর ও চিটাগাং এসোসিয়েশন কানাডার ট্রাস্টী শিবু চৌধুরী, অন্টারিও আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আমিন মিয়া, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডঃ হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামননাই এসোসিয়েশন সভাপতি ডঃ এ এম তোহা, ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, তপন সাঈদ, মোহাম্মদ জাফর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জসিম উদ্দিন, সাংবাদিক এম আর জাহাঙ্গীর, শহীদুল ইসলাম মিন্টু, সঞ্জয় চাকি, ফুটবল খেলোয়াড় মামুন জোয়ারদার, রাজনীতির করিম রুমি, নিউইয়র্ক ফোবানার কাজী হুমায়ুন, ওয়াশিংটনের আলী, ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত, ফারজানা সাঈদ, শিল্পী প্রতীক হাসান, তিতাস শামীম, সদস্য সচিব খোকন রহমান প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
রাতে ডেনফোর্থ এভিনিউর লবঙ্গ রেস্টুরেন্টে নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল জমজমাট। এসময় খালেদ মাহমুদ মিলুর সন্তান প্রতীক হাসান ও কোলকাতা সা রে গা মা পার রাতুল গভীর রাত পর্যন্ত গান পরিবেশন করেন।
শেরাটন হেটেলের ফোবানা
অপরদিকে শেরাটন হোটেলের ফোবানার অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডঃ জসিম উদ্দিন। এসময় উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান এম ইলিয়াস মিয়া, কনভেনর আবুল আযাদসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শুরুতে বিলম্ব হওয়ার জন্য প্রধান অতিথি এমপিপি সালমা জাহিদকে হোটেল ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
ডেনফোরথ বার্ভমাউন্ট রাজপথে মমতাজ ও বেবী নাজনীন
এদিকে শনিবার বিকেল থেকে রাত অবধি সেলিম চৌধুরী তাহমিনা, মীম, প্রতীক হাসান, বিন্দুকণা গানে মাতিয়ে তুলেছেন। তাদের আগে কানাডা ও যুক্তরাষ্টের শিল্পীবৃন্দ গান পরিবেশন করেন। সেলিম চৌধুরীর দয়াল তোমার সনে,, আজ পাশা খেলব রে শ্যাম,,
তাহমিনা মীম ওরে সাম্পান ওয়ালা,, মধু খই খই বিষ খাওয়াইলা,, বুকের ভিতর বাঁধি রাইখখোম তোয়ারে,, প্রতীক হাসান সেই মেয়েটি,, গানের সংগে মধ্যরাত অবধি নেচেগেয়ে ওঠেন সকল বয়সের শ্রোতা। এ যেন এক মায়াবী রাত। ২০ হাজার কিলোওয়াট সাউন্ড সিস্টেম আর আধুনিক মঞ্চে রঙিন আলোর খেলার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আগত জনপ্রিয় শিল্পীরা টরেন্টো মাতিয়ে তোলেন। ছিল পিকসেল সিস্টেম ডিজিটাল বড় পর্দা। যাতে কিংস্টন রোড পর্যন্ত মেলায় আগত মানুষ গান ও শিল্পীদের দেখতে পান।
৫০এর অধিক স্টলে রকমারি কাপড়, অলংকার, খেলনা, খাবার মিলে মেলাও ছিল জমজমাট।
কাল সারারাত ছিল স্বপনেরও রাত,,
বেশী নাজনীনের সুমধুর কন্ঠে যখন টরেন্টো দুলছে, ঠিক তখন গ্রিনিজবুকে নাম ওঠা, বাংলাদেশের লোক গানের কুইন শিল্পী মমতাজ গাইলেন, বুকটা ফাইট্টা যায়। টরেন্টোতে পড়ুয়া দুই কন্যাকে নিয়ে গাইলেন, তুই কনট্রাক্টর ,, অসাধারণ ভাবে নেচে গাওয়া গানের সংগে হাজার তিনেক শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে নেচে ওঠেন। সুরের মূর্ছনায় মমতাজ একে একে তার জনপ্রিয় পোলা তো নয় সে যে এমন একখান পোলা,, পাংখা পাংখা, আধাত্মিক , লোকজ গান গেয়ে যখন ইতি টানতে তখন রাত এগারটা।
অপরদিকে বেবী নাজনীনের জনপ্রিয় গান কাল সাররাত ছিল স্বপনের রাত,, স্মৃতির আড়াল থেকে বহুদিন পর , মেঘ ভেংগে উঠেছিল পূর্ণিমা চাঁদ,,,
এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আচল, , আমায় ঘুম ভাংগাইয়া গেল গো মরার কোকিলে,, গানগুলো শ্রোতাদের মোহিত করে।
শ্রীলঙ্কার তামিল টিভি আধুনিক পিকসেল পদ্ধতির স্ক্রীনে ৭টা থেকে রাত অবধি পুরো অনুষ্ঠান পরিবেশন করে।
শুধু তাই নয় তারা লাইভ সম্প্রচার করে শ্রীলঙ্কার সংগে বাংলাদেশ লিংক দিয়ে। ২০×৩০ ফুট আধুনিক মঞ্চে রঙিন আলোর প্রক্ষেপণ ও স্মোক, লেজারের আলোর খেলার মিশ্রণে অসাধারণ আন্তর্জাতিক মানের কাজ করে সবাইকে মুগ্ধ করে। সাউন্ড সিস্টেম ছিল ৬০ হাজার মেগাওয়াট। এরকম সমর্থনে টরেন্টোর কারিগর মিউজিক দারুণ কম্পোজিশনে শিল্পী ও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। কী বোর্ড, ড্রাম,তবলা, গীটার ছিল অসাধারণ। যা মুগ্ধ করেছে সবাইকে।ন
সব ছাপিয়ে ডঃ আবু যুবায়ের দারা সহ আয়োজক বাংলাদেশ সোসাইটি, সকল কর্মকর্তাবৃন্দকে
শিল্পী মমতাজ ও বেবী নাজনীনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ছিল সাফল্যের পালক।