নাসিরুদ্দিন চৌধুরী
আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। আজ জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় উৎসবের আমেজে দিনটিকে পালন করবে। দিনটি এ্রভাবেই পালিত হয়ে আসছে। আজ সরকারী ছুটির দিন। জাতীয় শিশু-কিশোর দিবস। এদেশে যে হারে একটি বড় দলের প্রধান নেত্রীর ভুয়া জন্মদিন পালন করা হয়েছে, তাতে জন্মদিনের কথা বলতে ভয় লাগে। জাতির জনকের জন্মদিন সবকিছুর উর্ধ্বে অনেক বড় একটি দিন। কিন্তু জাতির জনকের শাহাদাত দিবসকে উপহাস করার জন্য কোন দলের দায়িত্বশীল নেত্রী মিথ্যা জন্মদিন পালন করতে পারেন এটা শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব।
তো বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধুই, তাঁকে তাঁর স্থান থেকে সরানো কোন বিএনপি বা খালেদা জিয়ার পক্ষে সম্ভব নয়। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তারা বঙ্গবন্ধুর নামই মুঝে ফেলতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ থেকে। যেখানে যত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বা অনুষঙ্গ তারা পেয়েছে, উপড়ে ফেলেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্থান তো বাঙালির হৃদয়ে, প্রতিটি বাঙালির হৃদয় জুড়ে বঙ্গবন্ধুর নিত্য জীবন্ত উপস্থিতি। বাঙালির রক্তে, অস্থি মজ্জায়, বাংলাদেশের প্রকৃতি, মাঠ-ঘাট, সবুজ শ্যামল প্রান্তর, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল মানচিত্র ব্যাপে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান- অধিষ্ঠান। সুতরাং এই বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা অসম্ভব এক অপপ্রয়াস। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অবিভাজ্য, অবিচ্ছেদ্য সত্তা। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধুও ততদিন বেঁচে থাকবেন।
আজকের এই দিন বাঙালির জন্য পুত পবিত্র একটি পুণ্যদিন। কারণ বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না। বাংলাদেশ না হলে বাঙালি জাতি পরিচিতি পেত না। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয়ে বাঙালি আজ যে বিশ্বে মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়ায়, সেটা বঙ্গবন্ধুর কারণেই সম্ভব হয়েছে। বাঙালির বহু বছরের সংগ্রাম বহুদিনের সংগ্রাম বিশ শতকে এসে বঙ্গবন্ধুর মধ্যে পরিপূর্ণতা, সফলতা খুঁজে পেয়েছে। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণ ঘটিয়ে বাঙালিকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। একারণে বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। একারণে প্রতিটি বাঙালিই বঙ্গবন্ধুর কাছে ঋণী। এই ঋণ অপরিশোধ্য।
১৭ মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মহিমামন্ডিত অনন্য একটি দিন-কারণ এদিন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবির্ভাবে ধন্য হয়েছিলো বাংলাদেশ। আমাদের মধ্যে যাঁরা এদিনটি দেখার সৌভাগ্যের অধিকারী হবেন, তাঁরা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম বলে বিবেচিত হবেন। আমরা হয়তো সেই ভাগ্যবান বাঙালি, যে আমাদের জীবনকালে সেই জ্যোতির্ময় মহাপুরুষের জন্মধন্য দিবসটি প্রত্যক্ষ করতে পারবো। আর একশো বছর পর আবার দিনটিরই দেখা পাবে বাঙালি জাতির অনাগত প্রজন্ম-ততদিনে আমাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা তিরোহিত হয়ে যাবে।
সুতরাং জাতির জনকের জন্মশতবর্ষের এই মাহেন্দ্রক্ষণটি আমাদের জীবনে যে অপার আনন্দ ও খুশির বার্তা নিয়ে এসেছে, তাকে বুকে ধারণ করে আসুন আমরা আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠি। যতটা জাঁকজমক ও বর্ণিল আনুষ্ঠানিকতায় সম্ভব, চলুন আমরা এই মহান দিবসটি উদযাপন করি-ব্যক্তিজীবনে ও জাতীয় জীবনে।
চট্টগ্রাম প্রান্তীয় জেলা হলেও আমাদের এই প্রিয় জেলাটির সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু গভীর আবেগময় হ্যার্দিক সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। সে আজকের কথা নয়, ১৯৪৩ সালে চট্টগ্রামের জননেতা এমএ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর। অতঃপর চট্টগ্রামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর যে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়, শুধু পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতেই তার পরিসমাপ্তি ঘটে। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম থেকেই নিয়েছেন। বস্তুত চট্টগ্রামের হাত ধরেই বঙ্গবন্ধু’র রাজনীতি ও নেতৃত্বের ক্রমবিকাশ ঘটে। সেজন্য আজো চট্টগ্রামবাসী বঙ্গবন্ধুকে তাদের আত্মার আত্মীয় হিসেবেই মনে করে। উৎসবের উল্লাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য চট্টগ্রাম ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছে।
আপাতত আমাদের ভাবনায় যেসব কর্মসূচি ভিড় করছে, তা; নিম্মে উল্লেখ করা হলো।
১. রচনা প্রতিযোগিতা : আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তঃ কলেজ, আন্তঃ স্কুল প্রতিযোগিতা। থানা ভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ২০ মার্চ ২১ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা চলবে।
২. চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা :
৩. বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা :
৪. বক্তৃতা প্রতিযোগিতা :
৫. টঙ্গীপাড়া গমন:
৬. বঙ্গবন্ধুর একটি বৃহদাকৃতির ভাস্কর্য স্থাপন
৭. বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানে স্মৃতিফলক স্থাপনÑ ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ১৭ মার্চ ২০২০ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি উদযাপন।
৮. ডিসি হিলে বঙ্গবন্ধুর নামে নানা কিছু করা যেতে পারে। যেমন ডিসি হিলের নাম দেয়া যেতে পারে ‘বঙ্গবন্ধু উদ্যান’, পাহাড়ের ওপর স্যাটেলাইট কেন্দ্র স্থাপন, আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরি ও আর্ট গ্যালারি স্থাপন। সবার আগে ডিসি হিল থেকে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবন সরিয়ে উন্মুক্ত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী চট্টগ্রামে ব্যাপক জাঁজকমক ও বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে উদযাপনের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনসাধারণ তথা নাগরিকের সমন্বয়ে একটি ব্যাপক ভিত্তিক উদযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাত সমাজবিজ্ঞানী, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. অনুপম সেনকে চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-প্রফেসর ড. ইফেতখারউদ্দিন চৌধুরীকে এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, প্রবীণ সাংবাদিক, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, সংগঠক, লেখক নাসিরুদ্দিন চৌধুরীকে মহাসচিব করে ৫০১ সদস্য বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু’র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব আ.জ.ম নাছির উদ্দিনকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বৃহত্তম সাংস্কৃতিক সংগঠন চট্টল ইয়থ কয়ারের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জিতেন্দ্র প্রসাদ নাথ মন্টু, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আবুল কাশেম চিশতী, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্র, রাউজানের মেয়র দেবাশীষ পালিত, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মাহমুদুল হক, বিএমএ’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম, হাটহাজারীর নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম, সিডিএ’র সদস্য জসিমউদ্দিন শাহ ও কে বিএম শাহজাহান, চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও শৈবাল দাশ সুমন, সমাজসেবী দীপংকর চৌধুরী কাজল, চট্টল ইয়থ কয়ারের মহাসচিব অরুণ চন্দ্র বণিক, ব্যবসায়ী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক অনুপ বিশ্বাস, চট্টল ইয়থ কয়ারের সংগঠনিক সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও শিল্পী সুজিত ভট্টাচার্য দোলন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল পালিত, মুক্তিযোদ্ধা কিরণ লাল আচার্য।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের চট্টগ্রাম নিবাসী সকল মন্ত্রী, এমপিগণ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভা মেয়রগণ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব মোছলেম উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব এমএ সালাম চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম কমিটির সম্মানিত উপদেষ্টার পদ অলংকৃত করবেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল রাজনৈতিক, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, যুব সংগঠন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি, বিএমএ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনসহ, সকল নাগরিক ও উন্নয়ন সংগঠনকে সংশ্লিষ্ট করে কমিটির কাঠামো বিন্যস্থ করা হবে।
কে উদ্যোগ নিলেন সেটা বড় কথা নয়। উদ্যোগটা যথাযথ হয়েছে কিনা সেটাই বিবেচ্য বিষয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন সাধারণ মানুষের জন্মদিন নয়। সাধারণ মানুষের জন্মদিনও ঘটা করে পালন করা হয়। কেক কাটা হয়, বেলুন উড়ানো হয়, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও খানাপিনা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনও যদিন তাদের অনুরূপ অনুষ্ঠানসর্বস্ব হয়, তাহলে তা’ আলাদা কোনো তাৎপর্য বহন করে না। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান সূচিতে নিশ্চয়ই সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও সৃজনশীলতার ছাপ থাকতে হবে। শততম জন্মদিন হলে তো কথাই নেই।
আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন নয়। আগামী বছরই তিনি শতবর্ষে পদার্পণ করবেন। জাতির জনক বলেই আমরা এক বছর পূর্ব থেকে অনুষ্ঠান শুরু করেছি। আগামী বছর হবে মূল অনুষ্ঠান পরেয় বছরও আমরা অনুষ্ঠান করবো। আজ জামালখানে আওয়ামী লীগ নেতাকমীরা যদি দলে দলে এসে জামালখান লোকারণ্য করে তুলতে পারেন, তাহলে তারা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত অনুসারীর পরিচয় দেবেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মা তাতে শান্তি পাবে।
আজ ১৭ মার্চ জামাল খান স্কয়ারে ডা. খাস্তগীর স্কুলের সম্মুখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মোৎসবকে ঘিরে নগরীতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সবার চোখ এখন জামালখানের দিকে নিবন্ধ।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন পরিষদ আগামীকাল সকাল ১০টায় জামালখান স্কয়ারে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচি উপলক্ষ্যে খাস্তগীর স্কুলের সম্মুখে একটি মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। মঞ্চে সকাল ১০টায় কেক কেটে জন্মোৎসবের উদ্বোধন করা হবে। কেক কাটবেন যৌথভাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জনাব আ.জ.ম. নাছিরউদ্দিন, আন্তর্জাতিক খ্যাত সমাজবিজ্ঞানী, বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. অনুপম সেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
এরপর বঙ্গবন্ধুর বিশাল প্রতিকৃতি নিয়ে ঢোলবাদ্য বাজিয়ে নগরীতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে। নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতাকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং সর্বস্তরের পেশাজীবীদের অনুষ্ঠানে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।