চলতি মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা ১০ হাজার প্রবাসীর হদিস পাচ্ছেনা বরিশালের বিভাগীয় প্রশাসন। গত ১৯ দিনে বরিশাল বিভাগের ১০ হাজার ৩০৩ জন প্রবাসী দেশে ফিরলেও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত হয়েছে মাত্র ৪০৭ জনের। গ্রামের ঠিকানায় না থাকায় প্রবাস ফেরতদের খুঁজে পাচ্ছে না সরকারি প্রশাসন।
এ কারণে তাদের যথাযথ কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পারছেন না তারা। তবে পুলিশের বিশেষ শাখার তালিকা অনুযায়ী সবাইকে খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় প্রশাসনের কমকর্তারা।
এদিকে প্রবাসফেরতদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে বরিশালের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি ও জনপ্রতিনিধিদের ভিডিও কনফারেন্স করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। একইভাবে করোনায় বিভাগের পুলিশ সদস্যদের করণীয় এবং প্রবাসফেরতেদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে জেলা ও থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেন রেঞ্জ ডিআইজি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর কাশীপুরে তাদের নিজ নিজ কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্স করেন তারা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গত পহেলা মার্চ থেকে দেশে ফিরেছেন বরিশালের ১০ হাজার ৩০৩ জন প্রবাসী। তাদের অনেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। এ কারণে তাদের সকলকে খুঁজে পাচ্ছে না প্রশাসন। গোয়েন্দা পুলিশের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৪০৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার।
বাকিদের খুঁজে পেতে বিভাগের ৬ জেলা ও ৪০ উপজেলা প্রশাসন কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। তিনি সম্মিলিতভাবে প্রবাসফেরতদের খুঁজে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার জন্য সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিসহ সকলের প্রতি আহবান জানান।
একই সাথে পর্যটন কেন্দ্র, পার্ক, কোচিং সেন্টার, শপিং মল, সিনেমা হলসহ জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেন তিনি। এর ব্যত্যয় হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
এদিকে সিভিল প্রশাসনের পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে পুলিশের করণীয় বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দেন ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার তার নিজ কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের নিজেদের সতর্ক থেকে প্রবাসফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
ডিআইজি বলেন, এই সংকট মোকাবেলায় সম্মিলত উদ্যোগ প্রয়োজন। প্রবাসফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার অনুরোধ করা হবে। কেউ যদি হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা অমান্য করেন তাদের সরকারি নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা হবে।
এদিকে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, প্রবাসফেরতদের মাধ্যমেই করোনা ছড়াচ্ছে। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে না পাড়লে বড় বিপর্যয় হতে পারে। কারো মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে আইসোলুশনে রাখাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে করোনা সংক্রামণ থেকে দূরে থেকে রোগীদের সেবা দিতে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের অন্যান্য জেলা সদর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য পিপি (সুরক্ষা সরঞ্জামাদি) সরবরাহ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার থেকে এই সুরক্ষা সরঞ্জামাদি বিতরণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস।