নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই সপ্তাহ ধরে চলছে পানি সঙ্কট। গত দুইদিনে তা চরম আকার ধারণ করেছে। এতে রোগীসহ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পানির তীব্র সঙ্কটে অস্ত্রোপচারসহ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর শৌচাগারগুলো নোংরা হয়ে আছে। দুর্গন্ধ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।
হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে ভর্তি একাধিক রোগীর স্বজনরা জানান, পানির তীব্র সঙ্কট থাকায় চরম কষ্টে হচ্ছে। বাথরুম করে পরিষ্কার হওয়ার পানিটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবহারের জন্য পুকুর থেকে পানি বয়ে নিয়ে আসতে হয়। খাবার জন্য পানির জার কিনে কোনোমতে চাহিদা মেটাচ্ছেন তারা।
একাধিক রোগী জানান, রোববার রাত থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সোমবার দুপুরে কিছু সময়ের জন্য পানি সরবরাহ করা হয়েছিল। সেই পানি ছিল দুর্গন্ধযুক্ত। পানির সঙ্গে বালুও ছিল। ওই পানি খাওয়া এবং ব্যবহার উপযোগী নয়। পানির সঙ্কটে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। খাওয়া-দাওয়া, গোসল কিছুই ঠিকমতো করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কবে নাগাদ এই সঙ্কট কাটবে, তা নিয়ে কিছুই বলছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম বাকির হোসেন বলেন, মেডিকেলে প্রতিদিন দেড় লক্ষাধিক গ্যালন পানির প্রয়োজন। দুটি গভীর নলকূপ দিয়ে পাম্পের মাধ্যমে এই পানি উত্তোলন করে হাসপাতালের ওভারহেড ট্যাংকে রাখা হয়। সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি পৌঁছে যেতো। তবে দুই সপ্তাহ আগে থেকে একটি নলকূপ দিয়ে পানি উঠছে না। অন্যটি দিয়ে পানি পাওয়া গেলেও তা দুর্গন্ধযুক্ত। পানির সঙ্গে বালুও উঠে আসছে।
ডা. এসএম বাকির হোসেন বলেন, ঈদের পর ব্যবহারকারী কম ছিল বলে পানির চাহিদাও কম ছিল। এখন রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। বর্তমানে ৮২ জন করোনা রোগীসহ প্রায় এক হাজার ২০০ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। কোনো কোনো রোগীর সঙ্গে দুই-তিনজন করে স্বজনও থাকছেন। প্রতি শিফটে পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী রয়েছেন। তাই পানির চাহিদা বেড়ে গেছে। যে কারণে সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগের মেডিকেল উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সেলিম তালুকদার বলেন, নার্সিং হোস্টেল ও ডাক্তার কোয়ার্টারের সামনে দুটি গভীর নলকূপ দিয়ে পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে হাসপাতালের চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। তবে কিছুদিন আগে ডাক্তার কোয়ার্টারের সামনের গভীর নলকূপে পানি উঠছে না। সে কারণে পানির সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে।