বরেণ্য অভিনেতা ড. ইনামুল হক আর নেই। সোমবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে নিজ বাসায় মৃত্যু হয় তার। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর বেইলি রোডে। তারপর মরদেহ নেওয়া হয়েছে শিল্পকলা একাডেমিতে। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হবে ড. ইনামুল হকের মরদেহ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানী বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে গুণী এ অভিনেতাকে।
১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনীর সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ইনামুল হক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে বুয়েটে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭০ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছিলেন তিনি।
শুরুটা মঞ্চ থেকে। নটর ডেম কলেজে পড়াশুনা কালীন সময়ে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেন। ১৯৬৮ সালে বুয়েট ক্যাম্পাসেই ‘নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়’র যাত্রা শুরু হয়, এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি। ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো’, ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘নূরুল দীনের সারা জীবন’সহ আরো বহু নাটকে অভিনয় করেন স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি। ১৯৯৫ সালের তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন নামে আরেকটি নাট্যদল। লিখেছেনও বিস্তর। মঞ্চ ও টেলিভিশনের নাটক। লিখেছেন সাহিত্যও।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াসে নাটকে অংশগ্রহণ করেন ইনামুল হক। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে ট্রাকে করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে পথনাটক করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো, ‘নির্জন সৈকতে’, ‘গৃহবাসী’, ‘মুক্তিযুদ্ধ নাটকসমগ্র’, ‘মহাকালের ঘোর সওয়ার’, ‘বাংলা আমার বাংলা’ ইত্যাদি।
ড. ইনামুল হকের দাম্পত্য সঙ্গী বরেণ্য নাট্যজন লাকী ইনাম। তাদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক আর প্রৈতি হক। হৃদি হকের স্বামী অভিনেতা লিটু আনাম। আর প্রৈতি হকের স্বামী অভিনেতা সাজু খাদেম।