বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম ও খ্রিস্টান একসঙ্গে বসবাস করছে। এদেশে ভারতের সাম্প্রদায়িক সরকারের রাষ্ট্রপ্রধানকে সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতে দেব না। মুজিববর্ষের বক্তা হিসেবে মুসলিম নিধনকারী মোদিকে বাংলার জমিনে পা রাখতে দেয়া হবে না। দল-মত নির্বিশেষে ভারতের দিল্লিতে মুসলিম হত্যা ও মসজিদ পোড়ানোর বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামি কানুন বাস্তবায়ন কমিটির আমির মাওলানা আবু তাহের জিহাদী।
সোমবার বাদ আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে সংগঠনটি। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুসলমান হত্যা ও মসজিদের ওপর চলমান সহিংসতার প্রতিবাদে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মোদিকে আমন্ত্রণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটি।
ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির আমির মাওলানা আবু তাহের জিহাদী বলেন, ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করা কূটনীতিক পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলার আগমন ও সোমবার ঢাকায় এসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে মোদির ঢাকা সফর অনেকটাই নিশ্চিত। এমতাবস্থায় নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা জীবন দিয়ে হলেও তাকে প্রতিহত করতে চাই।
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ভারতকে মুসলিম নিধন বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বলেন, দেশের শান্তি শৃংখলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে ভারত সরকারের মুসলিম বিদ্বেষী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিল করতে হবে। একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে আমরা জীবন দিয়ে রুখে দেব।
উলামা মাশায়েখ পরিষদের সমন্বয়ক ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, ভারতের চলমান মুসলিম গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ, ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভারতীয় সরকারের ছত্রছায়ায় এই গণহত্যার প্রতিবাদ জানানো সকল ঈমানদারদের সোচ্চার হওয়া ঈমানী দাবি।
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী কাউকে আনা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য বেমানান। নরেন্দ্র মোদি মুসলিম নিধন ও ইসলাম বিদ্বেষী কার্যক্রম বন্ধ করলে আমরাই তাকে ফুলের মালা দিয়ে রিসিভ করব। অন্যথায় এদেশে তাকে বরদাশত করা হবে না।
মোদির সফরকে ফলপ্রসূ করার জন্য আগত ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে আমরা বলতে চাই আমাদের দেশের মেহমান হিসেবে আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন। তবে এদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ মুসলিম উম্মাহ, বিশ্ব মুসলিম সমাজ যেহেতু এদেশে তাকে চায় না সেহেতু সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর ওয়াস্তে মোদির সফর বাতিল করুন।
ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি মাওলানা আবু তাহের জিহাদীর সভাপতিত্বে ইসলামী দলসমূহের সমূহের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদের ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা আহমদ উল্লাহ কাসেমী, ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব মাওলানা ফয়জুল্লাহ আশরাফী, বেফাকের কেন্দ্রীয় উস্তাদ মুফতি বাহউদ্দীন, মুফাসসির পরিষদের কেন্দ্রিয় নেতা মাওলানা জাকির হোসাইন।
এ ছাড়া হক্কানী পীর মাশায়েখ পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেম, গণসভা আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা বনী ইয়ামিন, কাসেমী পরিষদের আমীর শায়খ আবু বকর কাসেমী, খতীব পরিষদের আমীর শায়খ মুফতি মাসউদুর রহমান, জাতীয় ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা লুৎফর রহমান, ইসলামী অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্টস ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা শেখ মহিউদ্দীন, আহকামে শরীয়া হেফাজত কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সবুর মাতুব্বর, অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, অধ্যক্ষ মাওলানা রফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, মুহাদ্দিস আবুল হাসান, মাওলানা ফয়জুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার রাতে ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির পাঠানোর এক বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।