নওগাঁর পোরশায় পারিবারিক কলহের জেরে আবদুল খালেককে (৫৪) শ্বাসরোধে হত্যার পর গুম করেও রক্ষা পেলেন না তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও জামাই। খালেককে হত্যার দায় স্বীকার করায় মঙ্গলবার (৯ মার্চ) পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে।
রহস্যজনক গুম হওয়া আবদুল খালেকের হত্যার ঘটনায় এক মাস পর সঠিক কারণ উদঘাটনসহ জড়িতদের বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পোরশা উপজেলার গঙ্গুরিয়া ইউনিয়নের বালিয়াচান্দা গ্রামের লোমহর্ষক এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। নিহত আবদুল খালেক ওই গ্রামের মৃত মালেকের ছেলে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন খালেকের স্ত্রী ফাইমা(৪৫), ছেলে খাইরুল ইসলাম(২৮), মেয়ে নাজমা খাতুন (২৫) ও জামাই একই উপজেলার ঘাটনগর শাহুপাড়া গ্রামের মৃত হোসেন মোল্লার ছেলে মোদাচ্ছের(৩০)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজ বাড়িতে খালেকের ছেলে খাইরুল ইসলাম, মা, মেয়ে ও বোন জামাই মিলে খালেকের গলায় মাফলার পেঁচিয়ে তাকে শ্বাস রোধে হত্যা করে। হত্যার পরে লাশ গুম করার জন্য খাইরুল মোটরসাইকেল যোগে মাদরাসা শিক্ষক খাইরুলের কর্মস্থল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের শ্রীরামপুর হাফেজিয়া মাদরাসার পিছনে ড্রেনের মধ্যে ফেলে দিয়ে আসেন। এর কয়েকদিন পরে এলাকার লোকজন একটি মৃতদেহ দেখতে পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশ নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে বেওয়ারিশ হিসাবে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করেন। এ ঘটনায় ২৭ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য হত্যার বিষয়টি গোপন রেখে খালেকের ছেলে খাইরুল ৮মার্চ পোরশা থানায় একটি জিডি করেন। এ সময় খাইরুলের কথাবার্তায় অসঙ্গতি দেখে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এক পর্যায়ে খায়রুল জানান, মা-বাবার বিবাদ মিটাতে না পেরেই তিনি, তার মা, বোন ও বোন জামাই মিলে শ্বাস রোধে করেছে তাদের বাবাকে। এরপর রাতের অন্ধকারে মরদেহ বস্তাবন্দী করে ফেলে আসে পার্শ্ববর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের একটি ড্রেনে।
পোরশা থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ শফিউল আজম জানান, খাইরুল ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে তার বাবাকে হত্যা ও মরদেহ গুম করার সত্যতা স্বীকার করেন। এরপর জিডিটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হওয়ায় মঙ্গলবার অভিযান পরিচালনা করে অপর তিনজনকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
নওগাঁর পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রাকিবুল আকতার জানান, নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতাকৃতদের বুধবার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।