ভারতে করোনা মহামারীর মধ্যেই ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এভিয়েন ইনফ্লুয়েজ্ঞা বা বার্ড ফ্লু। পাঁচ রাজ্যে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে কয়েক লাখ হাঁস-মুরগি মারা যাওয়ার পর দেশব্যাপী সতর্কতা জারি করেছেন ভারতের পরিবেশমন্ত্রী।
হরিয়ানার পঞ্চকুলায় জেলাতেই গত ১০ দিনে মারা গেছে ৪ লাখ হাঁস-মুরগি। তবে এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর হানার কথা নিশ্চিত করেনি সেখানকার সরকার। খবর আনাদোলুর।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। বিপদ আন্দাজ করে কেরালা সীমানায় ২৬টি চেকপোস্ট তৈরি করেছে তামিলনাড়ু সরকার, যাতে হাঁস-মুরগি এবং পোলট্রিজাত পণ্য সরবরাহের ওপর নজরদারি চালানো যায়।
ভারতজুড়ে গত ১০ দিনে হাজার হাজার পাখির মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক রাজ্য বার্ড ফ্লু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকারও।
তাতেই নড়েচড়ে বসেছে দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। হাঁস-মুরগি থেকে মানুষের দেহে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, তার জন্য প্রস্তুতি নেয়া শুরু হয়ে গেছে।
বার্ড ফ্লুকে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জাও বলা হয়। এখনও পর্যন্ত কেরালা, হিমাচলপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং রাজস্থানেই বার্ড ফ্লুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার শুধু কেরালাই ২৪ হাজারের কাছাকাছি হাঁস এবং অন্য পাখির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানকার কোট্টায়ামেই প্রথম এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের এইচ৫এন৮ স্ট্রেন ধরা পড়ে।
কেরালার চারটি এলাকাকে এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের পর মঙ্গলবার হিমাচলপ্রদেশ বার্ড ফ্লুর হানার কথা নিশ্চিত করে।
সেখানকার ক্যাংরা শহর এলাকাতেই শুধু ২৭ হাজার রাজহাঁসের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্যাংরাকে হিমাচলের বার্ড ফ্লু কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া হরিয়ানার পঞ্চকুলায় জেলাতেই গত ১০ দিনে ৪ লাখ হাঁস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ পর্যন্ত যেসব এলাকায় বার্ড ফ্লু সতর্কতা জারি হয়েছে, সেখানে হাঁস-মুরগি-ছাগলের মাংস, সব ধরনের মাছ, ডিম এবং অন্য পোলট্রিজাত পণ্যের কেনাবেচা ও সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ইনডোরে একসঙ্গে শতাধিক কাকের মৃত্যু হওয়ার পর তাদের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হাই সিকিউরিটি অ্যানিমেল ডিজিসেস যে পরীক্ষা হয়, সেই পরীক্ষার রিপোর্টে এইচ৫এন৮ স্ট্রেনের হদিস মেলে।
সংক্রমণের ছড়িয়ে পড়া রুখতে ইতিমধ্যে সব জাতীয় উদ্যান ও অভয়ারণ্যকে সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় মৎস্য এবং প্রাণী কল্যাণ দফতর। দিল্লিতে বিশেষ কন্ট্রোলরুম চালু করা হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর কোনো অস্তিত্ব মেলেনি।