হাইকোর্ট বলেছে, চট্টগ্রামের মিতু হত্যা মামলার তদন্তে অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। চলছে এখনো তদন্ত। আমরা চাচ্ছি সময়ক্ষেপন না করে দ্রুত তদন্ত শেষ করা হোক। তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ মন্তব্য করেন।
এদিকে হাইকোর্টে দাখিল করা তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদনে মামলার দুই আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে জবানবন্দিতে আসামি ওয়াসিম বলেছেন, এসপি বাবুল আক্তারের মেইন সোর্স মুসা আমাকে গুলি করতে বলেছিলো। কিন্তু আমি গুলি করিনি। তখন সে আমাকে ধমক দিয়ে বলে কাজটা শেষ কর। কিন্তু আমি গুলি না করায় মুসা আমার কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে মহিলার মাথায় গুলি করে। অপরদিকে আসামি আনোয়ার জবানবন্দিতে বলেছেন, ওয়াসিমই মহিলাকে গুলি করে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মুসাসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করা গেলেই চার্জশিট দিতে বেশিদিন লাগবে না।
তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, আমি তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যেই চার্জশিট দাখিল করা সম্ভব হবে।
ওয়াসিমের আইনজীবী শংকর প্রসাদ দে বলেন, দুই আসামির জবানবন্দির উপর ভিত্তি করার দরকার নাই। কারন এরা একজনের উপর আরেকজন দোষ চাপিয়েছে। তিনি বলেন, সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার বাদি ছিলেন। পরবর্তীকালে মিতুর বাবা দাবি করেন বাবুলই তার মেয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত। এখন সন্দেহের তীর বাবুলের দিকেই। কারন উনি বাদি হলেও তাকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। কি কারনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলো? নিশ্চয়ই কোন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনজীবী বলেন, ৪ বছর কেন ১০ বছর ধরে তদন্ত চলুক, আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আসামির জামিন পেতে কোন সমস্যার হওয়ার কথা নয়।
আদালত বলেন, ওয়াসিমের একটা জবানবন্দি রয়েছে। সেখানে তার সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে। আইনজীবী বলেন, মিতু হত্যার পর দুজন ক্রসফায়ারে মারা যায়। এই দুই আসামি জীবন বাঁচাতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওয়াসিমের জামিন আবেদনের শুনানি ৬ মে পর্যন্ত মুলতুবি করেন। এ সময়ের মধ্যে তদন্তের সর্বশেষ কি অবস্থা তা জানাতে তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছে আদালত।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে।