1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
September 11, 2024, 5:40 pm
সংবাদ শিরোনাম :

যশোরে সবজির বীজতলায় বীজ অঙ্কুরে কৃষক লাখপতি

  • প্রকাশিত : শনিবার, এপ্রিল ১৬, ২০২২
  • 159 বার পঠিত

শীতকালীন সবজি উৎপাদন না করে, শুধুমাত্র বীজতলা নিবিড় পরিচর্যায় বীজ অঙ্কুরোদগমে চারা উৎপাদন করে লাখপতি
হয়েছেন যশোরের প্রায় ৫০০ কৃষক।

এ কাজে সম্পৃক্ত চাষীরা কেউ কেউ পাঁচ লাখ টাকা লাভের টার্গেট করেছেন। বীজতলায় বীজ বপন পর্ব শুরু হয়েছে। কেউ কেউ বীজতলা প্রস্তুত করছেন। চলতি মৌসুমে শুরু হওয়া বীজের অঙ্কুরোদগমে চারা উৎপাদন করে বিক্রি চলবে আগামী কার্তিক মাস পর্যন্ত। এ পাঁচ মাস সময়ে কৃষক একই জমিতে তিনবার পর্যন্ত বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে বিক্রি করতে পারবেন।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সবজির রাজধানীখ্যাত যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ও চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নে রাস্তার দুইপাশে হাজার পলিথিনে মোড়া বীজতলা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বীজতলার উপরের পলিথিন খুলে উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন কৃষক। এরপর ঝাঝরি দিয়ে পানি ছিটিয়ে এবং আগাছা পরিস্কারে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণী।

চুড়ামনকাঠি-চৌগাছা সড়কের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আব্দুলপুর মাঠে দেখা গেছে, গোটা মাঠজুড়ে হাজার হাজার বীজতলা। এসব বীজতলায় নারী-পুরুষ শতাধিক শ্রমিক বীজতলা পরিচর্যার দৃশ্য নিয়মিত দেখা যায়। এদের কেউ পানি দেয়, কেউ নিড়ানির মাধ্যমে আগাছা পরিচর্যা করেন, কেউবা নতুন করে বীজতলা তৈরি করে বীজবপন কিংবা পলিথিনে মোড়ানো ঘর তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন।

স্থানীয়রা জানান, চুড়ামনকাঠি ও হৈবতপুর ইউনিয়নে কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়, এসব এলাকার বিল ব্যতিত অন্য জমিতে ধানের আবাদ নেই বলা যায়। অধিকাংশ জমিতে উন্নত পদ্ধতিতে মাচায় সবজি চাষ হয়। তবে সবজি চাষের পাশাপাশি দুই ইউনিয়নের কয়েক শত কৃষক ঝুঁকেছেন সবজির বীজ অঙ্কুরোদগমে চারা উৎপাদনে বীজতলা।

চুড়ামনকাঠি ও হৈবতপুর ইউপির বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানান, মৌসুমের বৈশাখ মাস থেকে বীজতলা প্রস্তুত করে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বীজ বপন করছে কেউ কেউ। তবে আষাড় মাস মূল সিজন। ওই বীজ অঙ্কুরোদগমে চারা গজালে তা পরিচর্যা করে এক মাস বয়সে তুলে অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বাজারে ভালো মানের প্রতিটি ফুলকপির চারা ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং বাঁধাকপির চারা মানভেদে ৬০ পয়সা থেকে ৭৫ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

যশোর জেলার ঝিকরগাছা, গদখালী, নাভারণ, চৌগাছা, মণিরামপুর, রাজগঞ্জ, ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার জীবনডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, নড়াইল, লোহাগড়া, সাতক্ষীরা, শ্যামনগর, কালীগঞ্জ এলাকার কৃষক ও সবজি চারা পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেন।

সংশ্লিষ্ট চাষীরা জানান, গত ২/৪বছর শতাধিক কৃষক মৌসুমের পাঁচ মাস বীজ থেকে চারা তৈরির কাজ করেন। এদের মধ্যে ৬০/৭০ জন কৃষক ৫ থেকে ১০ বিঘা জমিতে বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে উপার্জন করছেন। তবে বিদেশি বীজের তুলনামূলক বেশি দাম হওয়ায় চারা উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে।

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের পোলতাডাঙ্গা গ্রামের কৃষকরা জানান, গত বছর এলাকায় প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন এবং বিক্রি করা গেছে। একেক কৃষক গড়ে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ করেছেন। চলতি বছর সবেমাত্র এক চালান ফুলকপি এবং বাঁধাকপির চারার বীজতলা করা হয়েছে। মৌসুম শেষে হিসাব-নিকাশ না করে লাভ ক্ষতির হিসাব নয় বলেছেন কৃষক।

সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের কৃষকরা জানান, বছর তিন আগে চারা উৎপাদন করে ৩০ থেকে ৪০ জন কৃষক বিক্রি করতো। বর্তমানে এই সংখ্যা অন্তত ২০০/২৫০ জন। চারা উৎপাদনকারী কৃষকরা জানান, প্রতিবিঘা জমিতে ফুলকপির বীজ বপন করে চারা উৎপাদন পর্যন্ত (এক মাস) অন্তত দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়। এতে তিন লক্ষাধিক চারা উৎপাদন করে আনুসাঙ্গিক খরচ বাদে অন্তত আড়াই লাখ টাকা বিক্রি হয়। পরবর্তীতে ওই চারা অন্য কৃষকরা কিনে তিনমাস পরিচর্যা করে বিক্রির উপযোগী করে তোলে।

এছাড়া প্রতিবিঘা জমিতে বাঁধাকপির বীজ বপন করে চারা উৎপাদন পর্যন্ত (এক মাস) প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়। এতে উৎপাদিত চারা ২ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে বিক্রি হয়। কিছু কৃষক এসব চারা কিনে রোপন করে আগাম সবজি উৎপাদন (খাওয়ার উপযোগী) করে বাড়তি আয় করছেন। এমনকি, মৌসুমের শুরুতে বাঁধাকপি- ফুলকপি, মুলা চারগুণ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া মৌসুমে ফলন বাড়ানো গেলে এসব সবজি মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, সৌদিআরবে পাঠানো হবে। কৃষকদের মতে, ধানের তুলনয় তারা সবজি চাষাবাদে বেশি লাভবান হওয়ায় দিন দিন চাষের জমি ও পরিধি বাড়ছে।

যশোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এস এম খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, সারাদেশের মধ্যে যশোরের আব্দুলপুর এলাকায় বীজ অঙ্কুরোদগমে চারা তৈরি করে বেশি বিক্রি হয়। এখানকার কৃষাণ-কৃষাণী চারা উৎপাদনে অত্যন্ত পারদর্শী। তারা কৃষির সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে চারা তৈরি করেন। গতবছর এখানকার সবজি বাণিজ্যিকভাবে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদিআরব, তাইওয়ান এবং ইউরোপ মহাদেশে গেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park