যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান খান দেশটির ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। শনিবার (২২ মে) বিকেলে ফ্লোরিডার ওরল্যান্ডোতে একটি নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। ফরিদপুরের সন্তান জিল্লুর আর খান স্ত্রী, ৩ পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। তিনি সম্পর্কে ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেনের দুলাভাই।
জিল্লুর খানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্থানীয় সময় রবিবার বাদ যোহর এবং এরপর তাকে সেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হবে।
তিনি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ইউএস-এর সভাপতি ছিলেন ১৯৮২ সাল থেকে ৩৯ বছর। তিনি সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা আওয়ামী লীগের একজন উপদেষ্টা ছিলেন।
এক সময় যুক্তরাষ্ট্র তথা সারাবিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন ‘শিকাগো টাওয়ার’র স্থপতি এফআর খানের ভাই জিল্লুর আর খান শিক্ষকতা এবং মৌলিক লেখালেখির জন্যে বহু পুরস্কার পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের রোজবুশ প্রফেসর এমিরিটাস ছিলেন। অধ্যাপক জিল্লুর গত ৬০ বছর ধরে শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন অত্যন্ত সুনামের সাথে। তার লেখা ১২টি গ্রন্থ সারাবিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে তার কমপক্ষে ৫০টি গবেষণা-প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছে।
খ্যাতনামা এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর চিন্তার প্রতিফলন হিসেবে প্রকাশিত গ্রন্থের অন্যতম হচ্ছে: ‘লিডারশিপ ইন দ্য লিস্ট ডেভেলপমেন্ট ন্যাশন : বাংলাদেশ’ (১৯৮৩), ‘মার্শাল ল’ টু মার্শাল ল’ : লিডারশিপ ক্রাইসিস ইন বাংলাদেশ’ (১৯৮৪), ‘দ্য থার্ড ওয়ার্ল্ড কারিশমা : শেখ মুজিব এ্যান্ড দ্য স্ট্রাগল ফর ফ্রিডম’ (১৯৯৬) ইত্যাদি। ২০১৪ সাল থেকে তিনি বাংলাতেও লেখালেখি শুরু করেছিলেন। ঢাকার মওলা ব্রাদার্স প্রকাশিত তার গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সম্মোহনী নেতৃত্ব ও স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনের ধারাবিবরণী হিসেবে সমাদৃত হচ্ছে।
জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে দেশে-বিদেশে অবস্থিত বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টজনেরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।