কেশবপুরের পর এবার যশোরের শার্শা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বারোমাসি কালো ও হলুদ জাতের তরমুজের চাষ। উৎপাদনে খরচ কম হওয়ার পাশপাশি ফলন তুলনামূলক বেশি হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে এর চাষাবাদ। এছাড়া স্থানীয় বাজারে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। ফলে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই তরমুজ চাষ। সঙ্গত কারনে তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়ছেন এই অঞ্চলের কৃষক।
কৃষি বিভাগ সূত্রমতে, চলতি বছর উপজেলায় এই প্রথম ৪০ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কালো ও হলুদ জাতের তরমুজের চাষ হয়েছে। একবার মাচা করলে তা অন্তত তিন সীজন তা ব্যবহার করা যায়। তরমুজগুলো সাধারণত তিন থেকে চার কেজি ওজনের হয়। বছরে তিনবার ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বিঘায় ফলন হয় ১০০- ১২০ মণ। পাশাপাশি এই মৌসুমে ফলনও হয়েছে প্রত্যাশামতো। স্থানীয় বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। কালো-হলুদ তরমুজ চাষ করে শার্শায় প্রথমবারের মতো চাষ করে সফল হয়েছেন উপজেলার উলাশী গ্রামের রেন্টু হোসেন, কাঠশিকড়া গ্রামের
মোমিনুর রহমান ও সুবর্ণখালি গ্রামের আলি রেজা। উপজেলার সফল তরমুজ চাষি মোমিনুর রহমান জানান, মাত্র ৫৫-৬০ দিনেই প্রতিটি তরমুজ তিন কেজি পর্যন্ত হয়। এই জাতীয় তরমুজ বিক্রি করে বিঘা প্রতি জমিতে মাত্র দুই মাসে এক লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
আলী রেজা বলেন, প্রথমবার নয় হাজার টাকা খরচ করে লাগিয়েছিলাম। আম্পানে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তারপরও ২৯ হাজার টাকা লাভ হয়। দ্বিতীয়বার আবার লাগিয়েছি। এর মধ্যে ৪৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। বাদ বাকি যা আছে তা ৫০-৫৫ টাকা বেচা-বিক্রির আশা করছি। এক বিঘা ১২ কাঠা জমিতে পরীক্ষামূলক চাষে সফল হয়েছেন রেন্টু হোসেন। তিনি বলেন, কালো ও হলুদ তরমুজ চাষে প্রথম ধাপে খরচ হয় লক্ষাধিক টাকা খরচ হলেও খরচ বাদ দিয়ে লাভের পরিমাণ আরও বেশি থাকে।
এ প্রসঙ্গে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল বলেন, বর্তমানে ধান, গম, পাটসহ অন্য ফসল চাষে ফলন ভালো হলেও, কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। তাই কালো ও হলুদ তরমুজে চাষে সফল হওয়ায় এর চাষ বাড়াতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। আশা করা যায়, আগামী মৌসুমে শার্শায় অন্তত: ২০০ বিঘা জমিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ হবে।