1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
July 7, 2025, 11:35 pm

সংসদে অফশোর ব্যাংকিং বিল পাস

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, মার্চ ৫, ২০২৪
  • 120 বার পঠিত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: দেশে প্রথমবারের মতো অফশোর ব্যাংকিং আইন করছে সরকার। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদে বিল পাস করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ‘অফশোর ব্যাংকিং বিল-২০২৪’ পাসের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপন করলে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটির জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি হয়।
বিলের কারণ ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত না থাকায় বিলটি নিয়ে সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, অফশোর ব্যাংকিং সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। আইনটি আগে ছিল না। উদ্দেশ্য ও কারণে বিস্তারিত থাকলে আমরা বলতে পারতাম। আমার মনে হয় না সরকার ও বিরোধী দলের এমপিদের আইনটি সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা আছে। আইনটির সুবিধা কী আর অসুবিধা কী তা সরকারের কাছে জানতে চান তিনি।
চুন্নু বলেন, অফশোর ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য ছিল সমুদ্র দূরবর্তী তীরে বাহামা দ্বীপের মতো দ্বীপে সেখানে বড় বড় চোর, রাঘব-বোয়ালরা, রাষ্ট্র নায়কেরা, চোরকারবারিরা অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হালাল করে তারপর বিদেশে ট্রান্সফার করত। বাংলাদেশেরও কোনো কোনো ব্যক্তির নাম এসেছে পত্রিকায়। তাও অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হালাল করেছেন, বিদেশে বাড়ি করেছেন, হোটেল করেছেন। যে সমস্ত চোর বাংলাদেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে তারা যদি এ ফাঁকে কর ছাড়া টাকা ফেরত আনেন ভালো। টাকা পাচারকারীরা ফেরত আনবে বলে মনে হয় না। তিনি অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার বাড়ার আশঙ্কা করেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অফশোর ব্যাংকিং সম্পর্কে আমরা যেটা শুনি যে বিভিন্ন জায়গায় আছে টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার করে বারমুড়া, এখানে-সেখানে রাখা হয়। এ ব্যাংকিং সম্পর্কে আমাদের নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেছে। এ আইনের মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ট্র্যাক্স ফ্রি আসতে পারবে। কিন্তু এটার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াটা কীভাবে অ্যাড্রেস করবো? এ জিনিসটা আমাদের জানা দরকার। আইনটির তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন মাসুদ উদিন চৌধুরী।
সংশোধনী আলোচনায় হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর কী অবস্থা? আমরা দেখছি সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংকের কঠিন অবস্থা। সাধারণ মানুষ যদি তাদের টাকা তুলে নেয় ব্যাংকগুলোর চালানোর গতি নেই। চেক দিলে বলে টাকা নেই বসেন, পরে আসেন।
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, এসআলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের টাকা নিয়ে চলে গেছে সিঙ্গাপুরে। কালকে দেখলাম চট্টগ্রামে তার গুদামে কয়েক লাখ টন চিনি পুড়ে গেছে। আল্লার মাইর কি রকম! এখন চিনির দাম বাড়বে। সামনে রোজার মাসের জন্য গুদামজাত করে রেখেছেন। আইন করি, কিন্তু তার প্রয়োগ নেই।
তিনি বলেন, দেশীয় ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকি করবে কিনা জানি না। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকাই বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, তারা নিজেরাই খোঁজ রাখে না। ব্যাংকগুলোর খোঁজ তারা কীভাবে করবেন? ব্যাংক তদারকি করে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে সেটা জানতে চান হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ।
বিলে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং অর্থ বহিউৎস এবং অনুমোদিত বিশেষায়িত অঞ্চলে পরিচালিত শতভাগ বিদেশি মালাকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় প্রাপ্ত তহবিল দিয়ে এই আইন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী অনিবাসী বা ক্ষেত্রমত বাংলাদেশে নিবাসী ব্যক্তির সঙ্গে পরিচালিত ব্যাংকিং কার্যক্রম।
তফশিলি ব্যাংকগুলো অফশোর ব্যাংকিং করতে পারবে। এ বিষয়ে বিলে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে সংশ্লিষ্ট তফশিলি ব্যাংক পর্ষদের অনুমোদিত নীতিমালা থাকতে হবে। তফশিলি ব্যাংকের অফশোর কার্যক্রমের জন্য পৃথক হিসাবপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ অনুমোদনে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ইউনিট থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে তহবিল স্থানান্তর করা যাবে বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট যেকোনো অনুমোদিত বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব পরিচালনা করতে পারবে। অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট কর্তৃক আমানতকারী বা বৈদেশিক ঋণদাতাদের প্রদেয় সুদ বা মুনাফা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করমুক্ত থাকবে। আমানতকারী বা বৈদেশিক ঋণদাতাদের হিসাব যেকোনো প্রকাশ শুল্ক ও লেভিমুক্ত হবে।
আমানত ও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে বিলে বলা হয়েছে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কগুলোর শতভাগ বিদেশি মালাকিনাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আমানত গ্রহণ করা যাবে। পাশাপাশি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট এই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে স্বল্প মেয়াদি ঋণ ও অগ্রিম বা বিনিয়োগ, ঋণপত্র ও গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান, বিল ডিসকাউন্টিং, বিল নেগোশিয়েটিং এবং অন্যান্য বৈদেশিক বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট বহিঃলেনদেন সেবা দিতে পারবে। বিলে বলা হয়েছে, অনিবাসী বাংলাদেশি, বিদেশি ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট আমানত ও ঋণগ্রহণ করতে পারবে।
আইন না থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশে একভাবে অফশোর ব্যাংকিং চালু আছে ১৯৮৫ সাল থেকে। পরে ২০১৯ সালে অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর কয়েকটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। এখন এ বিষয়ে আইন করা হচ্ছে।
অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বৈদেশিক উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল সৃষ্টি হয় এবং প্রচলিত ব্যাংকিং আইনকানুনের বাইরে আলাদা আইনকানুনের মাধ্যমে এ তহবিল পরিচালিত হয় ও হিসাব সংরক্ষণ করা হয়। অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের ভেতরে আলাদা এক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। স্থানীয় মুদ্রার বিপরীতে নির্ধারিত বৈদেশিক মুদ্রায় অফশোর ব্যাংকিংয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park