স্কুলগামী মেয়েদের উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা যশোর শহরতলীর চাঁচড়া খামারপাড়া এলাকার শ্রমিক নেতা বাবু মুন্সির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। গত ২৩ অক্টোবর বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বাবু মুন্সি ১৬জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০জনের নামে থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ এই ঘটনায় ছয়জনকে আটক করেছে। সন্ত্রাসীদের পক্ষে হুমকি ধামকি দিচ্ছে একটি চক্র।
ভূক্তভোগীর পক্ষে চাঁচড়াবাসী এই অভিযোগ করেছেন। আটককৃতর হলো, শংকরপুর সরকারি মুরগীর খামার এলাকার মোহম্মদ মিন্টুর দুই ছেলে আশিকুর রহমান টুটুল (২৮) ও আবু জাহিন শাহরিয়ার বিপ্লব (২২), শাখাওয়াত হোসেনের ছেলে লিয়ন হোসেন (২৮), শংকরপুর আফরিন তেল পাম্পের পেছনের নুরুল হুদার বাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত আকবর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বি (২৭), শংকরপুর গোলপাতা মসজিদের সামনে আতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে ইয়াছিন মোল্লা (২৮), শংকরপুর কবরস্থান এলাকার শিমুল ডাক্তারের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমির হোসেন বাবুর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ইমন (২৩)।
মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছে, শংকরপুর এলাকার সানজু (২২), আলম সরদারের ছেলে দিপু (২৫), আলতুর ছেলে অনি (২৩), একই এলাকার নয়ন (২০), শিপন (২২), মাহফুজ (২৩), খড়কী এলাকার কুয়াশা ইমন (২২), চাঁচড়া রায়পাড়ার তামিম (২৫), শংকরপুরের সাকিব (২৩) এবং শিবলী (২৩)।
যশোর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং খুলনা/ ৪৬২)’র কোষাধ্যক্ষ বাবু মুন্সি কোতয়ালি মডেল থানায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা চাঁচড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মেয়েদের স্কুলে যাতায়াতের পথে উত্যক্ত ও বিরক্ত করে থাকে। তারা কারো নিষেধ মানে না। কেউ প্রতিবাদ করলে তার ওপর আক্রমন করে। ভয়ে অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারে না। গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে ওই এলাকার বিপ্লব নামে এক তরুণ স্কুলের সামনে ৫টি বখাটেকে দেখে প্রতিবাদ করে।
এ সময় তার ছেলে বাদশাও সেখানে ছিলো। ওই ৫ বখাটে তাদের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে রাত ৮টার দিকে আসামিরা একযোগে তার বাড়িতে ঢোকে এবং অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করে। আসামিরা তার ভাইয়ের
স্ত্রী সাজেদা (৩৫), মেয়ে রুকসানা (১৮) ও রেকসনাকে (৭) পেয়ে মারপিট করে তাদের কাছ থেকে সোনার গহনা ছিনিয়ে নেয়। এরপর আসামিরা তার ঘরের মধ্যে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর তান্ডব চালায়। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার ক্ষতি করে। এছাড়া আরো ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার সোনার গহনা লুট করে। সে সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ফের হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, ঐ ঘটনার পর ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সোমবার ভোর ৫টার দিকে শংকরপুর বটতলা জিডিএল হাসপাতালে সামনে থেকে ছয়জনকে আটক করা হয়। সোমবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রাত পর্যন্ত আরো কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকায় চাঁচড়াবাসী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এর আগে তারা প্রশাসনের এত সার্ভিস পায়নি বলেও অনেকে মতামত প্রকাশ করেছেন। এতে তারা যারপরনাই খুশি।