নিজস্ব প্রতিবেদক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিচারপতি আবদুর রউফ (৯২) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার একান্ত সহকারী তাওহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সকাল দশটার দিকে মগবাজার ইনসাফ বারাকা কিডনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিচারপতি আবদুর রউফ মারা গেছেন। পরিবারেরর সদস্যরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। দুই মাস ধরে তিনি অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিচারপতি আবদুর রউফ পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে সেই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ই প্রথমবারের মতো তিন সদস্যের ইসি পায় বাংলাদেশ। বিচারপতি সুলতান হোসেন খান সরে যাওয়ার পরদিন সিইসি হিসেবে যোগ দেন বিচারপতি মো. আবদুর রউফ।
নির্বাচন কমিশনার আমিনুর রহমান খান কয়েক দিনের মাথায় পদত্যাগ করলে তার জায়গায় আসেন বিচারপতি সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন হোসেন। তার সঙ্গী হন আগের কমিশনার বিচারপতি নঈম উদ্দিন আহমেদ।
ওই কমিশনের অধীনে পঞ্চম সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে বিএনপি ১৪০ এবং আওয়ামী লীগ ৮৮ আসন পায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের ওই সময়ে রউফ কমিশন নির্বাচনী আইনে ব্যাপক সংস্কার আনে, জারি করা হয় নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ।
বহু কাঙ্ক্ষিত সেই নির্বাচন করে প্রশংসিত হলেও ১৯৯৪ সালে বিএনপির শাসনামলে মাগুরা উপ নির্বাচন নিয়ে বিতর্কিত হন সিইসি রউফ।
মেয়াদ শেষ হওয়ার আট মাস আগেই সিইসির পদ ছেড়ে বিচারপতি মো. আবদুর রউফ ফিরে যান আবার আদালতে।
এদিকে বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক শোকবার্তা তা জানানো হয়। শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
গণ আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরাতে বিচারপতি রউফের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশর গণতান্ত্রিক পথচলার ক্ষেতে বিচারপতি রউফ বার বার উদাহরণ হয়ে আসবেন। তিনি তার কাজের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকবেন চিরকাল।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, বিচারপতি রউফ ছিলেন নাগরিক সমাজের একজন বড় স্তম্ভ। ভোটাধিকার, সংস্কার এবং গণতন্ত্রের জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন যা জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।