1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
June 16, 2025, 12:38 am

সেন্টমার্টিনকে গিলে খাচ্ছে অবৈধ স্থাপনা, অভিযানকে গুনছে না প্রভাবশালীরা

  • প্রকাশিত : শনিবার, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
  • 173 বার পঠিত

মো: রিদুয়ানুল হক: প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রতিনিয়ত অবৈধ স্থাপনায় ছেয়ে যাচ্ছে। গত দুই বছরেই নির্মাণ হয়েছে ৬৭টি নতুন স্থাপনা। দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্থাপনা বন্ধের নির্দেশ থাকলেও বর্তমানে আরও ১৮টি স্থাপনার নির্মাণ কাজ চলছে। প্রভাবশালীদের আধিপত্যে প্রশাসনও যেন নীরব ভূমিকায়। কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের দাবি এমন চলতে থাকলে দ্বীপের অস্তিত্ব থাকবে না।

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ২০২০ সালে একটি জরিপ পরিচালনা করে কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল। ওই জরিপে বলা হয়েছিল দ্বীপটিতে ছোট-বড় ১২৩টি আবাসিক হোটেল ও কটেজ ছিল। এরমধ্যে ৩২টির মতো ২ ও ৩ তলা বিশিষ্ট পাকা ভবন। পাকা ভবনগুলোর ৯৫ ভাগের মালিক দ্বীপের বাইরের। ১২৩ আবাসিক হোটেলের প্রায় প্রত্যেকটিতে নিজস্ব রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়া জেটি ঘাট ও রাস্তার পাশে স্বতন্ত্র রেস্তোরাঁ রয়েছে ৪২ টি।

কিন্তু জরিপের তিন বছরে পরে এসে সেই দৃশ্যটি ভিন্ন। বর্তমানে ওখানে আবাসিক হোটেল ও কটেজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯০টির বেশি। বর্তমানে দ্বীপটিতে নতুন আরও করে ১৮টি স্থাপনার কাজ চলমান থাকার তথ্য জানিয়েছেন, পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ।

তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আন্তরিক নয়। প্রকাশ্যে টেকনাফ থেকে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সেন্টমার্টিনে অবৈধভাবে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের লোকজন গিয়ে এসব স্থাপনা বন্ধে মৌখিক নির্দেশ দিয়ে আসেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। প্রশাসন আজ পর্যন্ত একটি স্থাপনার কাজও বন্ধ রাখতে পারেনি। প্রশাসন ফেরার পরই পুরোদমে চলে নির্মাণ কাজ।’

এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে দ্বীপটিতে সরেজমিনে ঘুরে, গত ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি ঘুরে দ্বীপটিতে অবৈধভাবে প্রকাশ্যে অসংখ্য স্থাপনা নিমার্ণের দৃশ্য দেখা যায়। অথচ গত ২০ থেকে ২৭ জানুয়ারি ৩ দফায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। অভিযানে ১৮টি হোটেল ও কটেজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করার তথ্য জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু মৌখিক নির্দেশ দেয়া ওই সব স্থাপনার কাজ চলমান রয়েছে।

গত বছর মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) ঘোষণা করা দ্বীপটিতে প্রতিরাতেই নেয়া হয় নির্মাণ সামগ্রী। আর এসব ইট, বালু, সিমেন্ট আনার ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। যে সিন্ডিকেটটি সবস্তরের প্রশাসন ম্যানেজ করে নির্মাণ কাজ পরিচালনায় সহযোগিতা করেন। ফলে প্রশাসনের নির্দেশ দেয়ার পরও ড্রিমার্স প্যারাডাইস বিচ রিসোর্ট, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাগনে হেলালের নিজস্ব তিন তলা রিসোর্ট (নাম উল্লেখ্য নেই), আটলান্টিক রিসোর্টসহ নাম না থাকা ১৮টির বেশি স্থাপনার নিমার্ণের কাজ চলমান দেখা গেছে।

স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে কথা বলতে রাজী নন কাজে নিয়োজিত কোনো শ্রমিক। এমনকি অনেকেই মালিকের নাম বলতেও অপরাগতা প্রকাশ করেছেন।

সেন্টমার্টিনের মেরিন পার্কে নামের একটি রিসোর্টে থাকা পরিবেশ অধিদফতরের কার্যালয়ে গত ২৯ জানুয়ারি দুপুরে দেখা হয় পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আজহারুল ইসলামের সঙ্গে।

তিনি জানান, দ্বীপে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে তার করার কিছুই নেই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলে অভিযান হয়। কার্যালয়ে তিনি একা থাকেন। প্রশাসনিক শক্তিও নেই যে কাজ বন্ধ করে দেবার। ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ ছাড়া আর কিছু তার পক্ষে সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

টেকনাফের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী জানান, দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছেন তারা। স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান চলছে। সরকারের নির্দেশনা মানতে যা করণীয়, সবই করা হবে।

সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহে তিনি কোনভাবেই জড়িত নন দাবি করে বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে পোস্ট অফিস, কোস্টগার্ড কার্যালয় ও লাইট হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। বাকি সব ইকো সিস্টেমে করা হচ্ছে।’

ইট-বালির ভবন ইকো হয় কিভাবে তার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি চেয়ারম্যানের কাছে। ভাগনের ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে মুজিব বলেন, ‘আমার আত্মীয়স্বজন কেউ ভবন বানালে সেটি তার ব্যাপার। এর দায় আমার নয়।’

পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আজহারুল ইসলাম জানান, কৌশলে ইট, সিমেন্ট, বালির ভবন তৈরি করে বাঁশ-গাছ আর সনপাতা নিয়ে ঢেকে এখানে নাম দেয়া হয় ইকো রিসোর্ট। এর তথ্যও সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে।

এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ জানান, হাস্যকর ইকো প্রচারণায় একে একে আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে, যা এ দ্বীপের জন্য হুমকি স্বরূপ। সরকারি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমোদন ছাড়া অস্তিত্বের সংকটে থাকা একমাত্র প্রবাল দ্বীপে এভাবে প্রকাশ্যে স্থাপনা তৈরি হওয়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলা ও সমন্বয়হীনতা রয়েছে। দ্বীপ রক্ষায় অবশ্যই দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি মানতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park