1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
February 12, 2025, 8:33 am
সংবাদ শিরোনাম :
বাংলাদেশের সংস্কার কাজে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা পুনর্ব্যক্ত এ‌প্রিলে থাইল্যান্ডে দেখা হবে ইউনূস-মোদির রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা বাংলাদেশের জনগণকে অগ্রাধিকার দিতে ভারতের প্রতি শশী থারুরের আহ্বান আহত ও শহীদ পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু ডিগ্রি পেতে কানাডা পাড়ি, তারপর ‘উধাও’ ২০ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে ততই আমাদের মঙ্গল: সুপ্রদীপ চাকমা রঙ করে ঢেকে দেওয়া হলো শেখ মুজিবুরের ‘সবচেয়ে বড়’ ম্যুরাল কোনো দলের পক্ষে বা বিপক্ষে থাকতে চাই না: সিইসি সোনা পাচারের সময় বেবিচকের নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার

স্ত্রীর মৃত্যুর পর বিয়ে করেননি, মেয়ের শোক সইবেন কী করে?

  • প্রকাশিত : শুক্রবার, মার্চ ১, ২০২৪
  • 155 বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় ৬ বছর আগে প্রিয়তমা স্ত্রীকে হারিয়েছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি নাসিরুল ইসলাম নাসির। স্ত্রীর মৃত্যুর পর দুই সন্তানকে নিয়েই ছিল তার জগত। সময়, সুযোগ পেলেই মেয়েদের নিয়ে ঘুরতে বের হতেন তিনি।
মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিয়েও করেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা। সহকর্মী থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যরাও বিয়ের কথা বললে সে কথা কানেই তোলেননি কখনো।
নাসির ইসলামের বড় মেয়ে লামিশা ইসলাম ছিলেন বুয়েটের ২২তম ব্যাচের মেকানিক্যাল বিভাগের ছাত্রী। এই তরুণী স্কুলজীবনেও ছিলেন দারুণ মেধাবী। রাজধানীর হলিক্রস কলেজ থেকে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেড়িয়ে বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পান গেল বছরে।
মায়ের অভাব কখনোই বাবা ও ছোট বোনকে অনুভব করতে দেননি লামিশা। পুরো পরিবারকে আগলে রাখতেন। ঘুরতে পছন্দ করতেন বলে প্রায়শই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন।
তবে এসবই এখন স্মৃতিময় অতীত। রাজধানীর বেইলি রোডের ৭ তলা একটি ভবনের অগ্নিকাণ্ডে শ্বাসনালি পুড়ে মারা গেছেন লামিশা। তার মৃত্যুশোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বাবা নাসিরুল ইসলাম। ঠিক যেন ৬ বছর আগে স্ত্রীকে হারানোর সেই অন্ধকারতম দিন আবারও নেমে এলো তার জীবনে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাড়ির পাশেই ওই ভবনের কোনও একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন লামিশা। আগুন লাগার পর তিনি দৌড়ে ছাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাদে উঠতে পারেননি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে ধোঁয়া গিয়ে শ্বাসনালি পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।


জানা যায়, ২০১৮ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে রমনার পুলিশ কমপ্লেক্সে থাকতেন নাসিরুল ইসলাম। একইসঙ্গে বাবা-মা উভয়ের ভূমিকাই পালন করতেন দুই মেয়ের জীবনে। কত স্বপ্ন ছিল তাদের নিয়ে! সেই স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্নতে পরিণত করল সর্বনাশা আগুন।
চাকরি জীবনে বর্তমানে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত রয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি নাসিরুল ইসলাম। সেখানে কর্মরত এক পুলিশ সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘স্যারের মতো মানুষ হয় না। তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পরেও দুই মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিয়ে করেননি। স্যার ঘুরতে ভালোবাসতেন। সময় পেলেই দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়তেন। আমাদের অফিসে প্রায়সময়েই তার বিয়ে নিয়ে কথা উঠতো, কিন্তু বরাবরই সে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দিতেন।’
ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি রুহুল আমিন শিপার লিখেছেন, ‘প্রায় ৬ বছর আগের কথা। নাসির পাথরের মতো মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে বিএসএমএমইউ (পিজি) হাসপাতালের ডি ব্লক এর সামনে। সেখানে একটি ফ্রিজার ভ্যানে তার স্ত্রীর মরদেহ রাখা। নাসিরের জিম্মায় ছোট্ট দুইটি মেয়েকে রেখে ভাবি একা চলে গেলেন।’
এক ঘটনা উল্লেখ করে ডিআইজি লেখেন, কয়েক বছর আগের কথা। তখন বেনজির আহমেদ স্যার র‌্যাবের মহাপরিচালক। পুলিশ সদরদপ্তরে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নাসিরের একটা প্রেজেন্টেশন দেখে প্রকাশ্যে বলে ফেললেন, ‘ইউ আর সো ইন্টেলিজেন্ট। কিন্তু আমি তোমাকে চিনি না কেন?’ এরপর বেনজির স্যার আইজিপি হয়ে পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কারে হাত দিলেন। এআইজি রিক্রুটমেন্ট হিসেবে মেধাবী নাসির একটি অসাধারণ নিয়োগ কাঠামো তৈরি করে দিল। যেখানে চাইলেও দুর্নীতি কিংবা পক্ষপাতিত্ব করা প্রায় অসম্ভব। বর্তমানে সেই কাঠামোতেই নিয়োগ চলছে।
ডিআইজি তার স্ট্যাটাসে আরও লিখেছেন, দুই মেয়ে নিয়ে নাসিরের একার সংসার। একদিন শুধু বলেছিলাম, ‘আর বিয়েশাদি করলে না?’ একটু হেসে মাথা নেড়ে ও বললো, ‘না, স্যার।’ ওর মেয়েরা খুবই মেধাবী। বড় মেয়ে সম্ভবত ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ফার্স্ট গার্ল ছিল। কলেজ শেষ করে সে বুয়েটে ভর্তি হয়েছিল।
নাসিরের জীবনে ছয় বছর আগের সেই রাত আবার ফিরে এলো। গতরাতে আগুন লাগার সময় বেইলি রোডের সেই রেস্তোরাঁয় ওর বুয়েট পড়ুয়া মেয়েটা ছিল। সে আর ফেরেনি, চলে গেছে জীবনের ওপারে। বছর ছয়েক আগে বউ মরে যাওয়ার রাতে নাসিরের সেই চেহারার কথা স্পষ্ট মনে আছে আমার। এবার অবশ্য ওর সাথে দেখা হয়নি। মেয়ের মরদেহ নিয়ে ফরিদপুরের পথে আছে সে।
ওকে ফোন দিতে মন চাইছে না। তাই হোয়াটসঅ্যাপে শুধু এই মেসেজটা দিয়েছি- ‘নাসির, আমার অন্তরটা ছিড়ে যাচ্ছে। বাসায় বসে এখন কাঁদছি। এক জীবনে আর কত কষ্ট বাকি তোমার?’

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park