মোশাররফ হোসেন: বাংলাদেশ ছুটছে সম্মুখ পানে।চলছে মেট্রো রেল।আসছে পাতাল রেল। নদীর তলদেশ সুড়ংগে চলছে গাড়ি। প্রমত্তা পদ্মা নদী জয় করে সেতুর উপরে গাড়ি নীচে রেল। সোনাদিয়ায় তৈরি হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর, পায়রাতে সমুদ্র বন্দর। বরিশালে যাবে রেল, কক্সবাজারে চলাচল করছে। ঢাকার চারদিকে বুড়িগঙ্গা শীতালক্ষা, বালু ও তুরাগ নদীতে ভেনিসের এর আদলে নৌ ভ্রমণ কাজ চলছে। ২০৪১ সালে পৌছাতে হবে মধ্যম আয়ের দেশে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হার বাড়িয়ে মানুষের জীবন যাপন মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের উদ্যোগ এগিয়ে নিতে নিজ অর্থ ও বিদেশী সহায়তা জরুরি।
এরকম অবস্থায় ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নির্ধারিত হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এজন্য চাই স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা ও প্রযুক্তির ব্যবহার। আধুনিক যোগাযোগ ও বহিরগমণে ডিজিটাল পদ্ধতি।
সবার সাথে বন্ধুত্ব রক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বনেতরি শেখ হাসিনা।
এসব বাস্তবায়নে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বজুড়ে চলাচল, ব্যবস্থা ,চাকুরী পড়াশোনার , সুবিধার্থে যুগোপযুগী আধুনিক পাসপোর্ট করা হচ্ছে। হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে মেশিন রিডেবল, এখন ই পাসপোর্ট। এসবই শেখ হাসিনার উদ্যোগ ।
অটোয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে গত ১৫ জানুয়ারি এবং শনিবার টরেন্টোর বাংলাদেশ কনসুলেটে ই- পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। কানাডার মনট্রিয়ালে আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশনের সভায় যোগ দিতে এসে বাংলাদেশের সনদপত্র গ্রহণ করেন বাংলাদেশ পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ নুরুল আনোয়ার। এসময় খায়রুল কবির মেনন, অতিরিক্ত সচিব, সুরক্ষা ও সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ একটি চুক্তির সই করেছে সিএসসিএ র সংগে।
এর আলোকে বাংলাদেশের ই পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ১৯৩টি দেশ ভ্রমণে আধুনিক সুবিধা পাবেন। তারা অটোয়া ও টরনটোর ই পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ।
অটোয়ায় রাষ্ট্রদূত ডঃ খলিলুর রহমান ও টরনটোর কনসুলেটের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল ফাহমিদা সুলতানা সভাপতিত্ব করেন।
টরেন্টোর অনুষ্ঠানে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ নুরুল আনোয়ার বলেন, বিদেশে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরুর পর টরেন্টোয় ৪৩ তম। এ সেবা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। ২০১০সালে মেশিন রিডেবল ২০১৯ সালে ই পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ই ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকরা সহজে ভ্রমণ করার সুবিধা পাবেন। এটাই আধুনিক যুগের নিরাপদ পদ্ধতি। পাচ আংগুলের ছাপ পরিবর্তন করা যাবেনা। ডাটাবেজ বদলানোর সুযোগ নেই। এরকম যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন বেবসথা রয়েছে। বাংলাদেশের পাসপোর্টে ভ্রমণে নো ভিসার সুযোগ দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউরোপের মত বাংলাদেশের পাসপোর্টের আধুনিক ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, অটোয়া ও টরেন্টোতে নো ভিসার পদ্ধতি সহজ করা হয়েছে। ই পাসপোর্ট পেতে অনলাইনে ফর্ম পূরণের পর প্রয়োজনীয় ফি দিয়ে তালিকাভুক্ত হলে কাঙ্খিত ৫বছর, ১০বছর, ৪৮পৃষ্ঠা, ৬৪পৃষ্ঠার ই পাসপোর্ট রেগুলার ২১দিন, ,এক্সপ্রেস ১০দিন, সুপার এক্সপ্রেস দুই কার্য দিবসে পাওয়া যাবে । বাংলাদেশের ভেতর নির্ধারিত ব্যাংক সমূহে এবং বিদেশের দূতাবাস ও মিশনে ভিসা ,ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ফি জমা দেয়া যাবে। এজন্য পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট দেখে অনলাইনে ফর্ম পূরণ করার জন্য তিনি দেশে ও বিদেশে বসবাস কারি বাংলাদেশের সকল নাগরিককে একান্ত অনুরোধ করেন।
তবে বাংলাদেশে আগারগাও পাসপোর্ট অফিস দিনে ২০০০ পাসপোর্ট কাজ শেষে সরবরাহ করতে পারে। আগামীতে নতুন ভবন নির্মাণ শেষ হলে এটি বাড়বে।
পুলিশি তদন্ত সম্পর্কে বলেন, একাধিক পাসপোর্ট থাকা ও দালাল থেকে রক্ষার জন্য এটা জরুরি। সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ ফর্ম পূরণকে ঝামেলা মনে করে। তারা দালাল দিয়ে পাসপোর্ট করায়। এজন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও দায়িত্ব পালনে সৎ এর বিকল্প নেই।
তবে এন আইডি ও জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম জন্মের পরই করা গেলে এসব নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
অতিরিক্ত সচিব খায়রুল কবির মেনন বলেন, পুলিশি অনুসন্ধান লাগবেই। একজন নাগরিকের একাধিক পরিচয় থাকার কারণেই এটি দরকার। অপরাধের সুযোগ যখন শূন্য হবে তখন এটি লাগবেনা। তবে এজন্য আইন অমান্য কারিদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান দরকার।
প্রবাসীদের জন্য
বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিক জন্ম সনদ, পিতামাতার সূত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র, কিংবা আগের পাসপোর্ট সহ আবেদন ফর্ম পূরণ করতে পারেন।
এজন্য ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ফি ডলারে ভিসা ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে জমা দিয়ে নাম তালিকাভুক্ত করে পাচ আংগুলের ছাপের তারিখ জেনে দূতাবাস ও মিশনে যেতে হবে। এরপর রেগুলার, এক্সপ্রেস ও সুপার এক্সপ্রেস সময়েই পাসপোর্ট পাবেন বলে পাসপোর্ট মহাপরিচালক জানিয়েছেন। তবে ছাত্র ও লেবারদের ফি ৪৮পৃষ্ঠা ৫ছর মেয়াদে রেগুলার ৩০ ও এক্সপ্রেস ৪৫৷ ডলার। ৬৪পৃষ্ঠা যথাক্রমে ১৫০ ও ২০০ডলার। ১০বছর মেয়াদের ২৫ডলার বেশি।
ওয়েবসাইটে সকল নাগরিকদের মেয়াদ, পৃষ্ঠা ও নিয়মিত, ও জরুরি পাসপোর্ট ফি দেয়া আছে। জেনে শুনে ই পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করার জন্য আহ্বান জানান মহাপরিচালক।