২০২২ শুরুর মধ্যে ২১ কোটি টিকা আসবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বর্তমানে সরকারের হাতে এক কোটির ওপরে করোনার টিকা রয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই আরও দুই কোটি টিকা আসবে। এভাবে চীন থেকে তিন কোটি, রাশিয়া থেকে সাত কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসনের সাত কোটি, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটিসহ আগামী বছরের শুরুর মধ্যেই সরকারের হাতে প্রায় ২১ কোটি টিকা চলে আসবে। এর মাধ্যমে দেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবে সরকার।
আজ শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘কোভিডের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সংকট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামীতে ভারত থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২০০ টন তরল অক্সিজেন আমদানি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে ৪৩টি অক্সিজেন জেনারেটর অর্ডার করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে চার হাজার চিকিৎসক, চার হাজার নার্সসহ বিপুলসংখ্যক টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কাজও এগিয়ে চলেছে।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বিঘ্ন রাখতে এবং অধিকাংশ নাগরিককে টিকার আওতায় আনতে এখন থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের নাগরিককে টিকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই সরকারের আইসিটি বিভাগের আওতাধীন জাতীয় সুরক্ষা অ্যাপে ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকেরা যেন নিবন্ধন করতে পারেন, সে ব্যাপারে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
খাদ্যে ভেজাল কেমিক্যাল মিশানো, নদী দখল, মানব পাচারের মতো বিষয়গুলো রেখে দেশের অতিমারি চলাকালীন অবস্থায় স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে যেভাবে ঢালাওভাবে সমালোচনা করা হচ্ছে সেটিকে দুঃখজনক আখ্যা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের কাছে কোভিডের তৃতীয় ধাপ মোকাবিলায় আরও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ জানালে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি মুবিন খান স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অন্তত দুই হাজার নতুন কোভিড ডেডিকেটেড শয্যা বৃদ্ধি করার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশিদ আলম, জাপান ইষ্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, গ্রীণ লাইফ মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাঈনুল আহসান, পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্ত্তী প্রমুখ।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘প্রতিটি দেশেই নিজ দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে, প্রশংসা করছে। শুধু আমাদের দেশেই এই মহামারির সময়েও দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সমালোচনা করে চিকিৎসক, নার্সদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে বিশেষ কিছু মহল। দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে গোটা বিশ্ব যখন প্রশংসা করছে তখন দেশের কিছু মহল স্বাস্থ্য খাত নিয়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে যাচ্ছে, যা মোটেও কাম্য ছিল না।’