দ্বিতীয় ধাপে প্রাণঘাতী করোনার হানায় উদ্বিগ্ন ইতালির সরকার এই ভাইরাসের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ থেকে সেদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। ফলে বাংলাদেশে আটকে পড়া দশ সহস্রাধিক ইতালি প্রবাসী সেদেশে যেতে পারছেন না। অনেকের ভিসার মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। উদ্বিগ্ন প্রবাসীরা তাদের ভিসার মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধির দাবিতে মাঠে নামতে যাচ্ছেন। তারা তিন দফার বাস্তবায়ন চান।
তাদের দাবিগুলো হচ্ছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি করা, বাংলাদেশ থেকে ইতালির ফ্লাইট চালু করা এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতালি প্রবাসীদের সহায়তা করা। এদিকে ঢাকা থেকে নিয়মিত ইতালিতে চলাচলরত বাণিজ্যিক ফ্লাইট কাতার এয়ারওয়েজ গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ইতালি সরকারের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে ইতালিতে বাংলাদেশি বহন করবে না এই সংস্থাটি। তবে নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইতালির পাসপোর্ট হোল্ডাররা কাতারের ফ্লাইটে উঠতে পারবেন।
বায়রার সূত্র মতে, কোভিড-১৯-এর জন্য বাংলাদেশে আটকা আছে এখনো ১০ হাজারের বেশি ইতালি প্রবাসী। এদের অনেকে গত বছর শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার আগে ডিসেম্বরের দিকে বাংলাদেশে বেড়াতে এসে এবং জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ইতালিতে করোনা মহামারি শুরুর পর দেশে এসে আর যেতে পারেননি। ইতালি দূতাবাস বলছে, বাংলাদেশি যাদের পরিবার-পরিজন, স্বামী-স্ত্রী কিংবা সন্তান ইতালিতে রয়েছে তারা সহজেই প্রবেশ করতে পারবেন দেশটিতে। এ সময়ের মধ্যে যাদের ইতালিতে রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদেরকে দূতাবাস থেকে ভিসা নিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করতে হবে। যাদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে তাদেরও ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসার জন্য নতুন করে আবেদন করতে হবে। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেক প্রবাসী।
প্রবাসীরা জানিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি ইতালির নাগরিকত্ব পেলে পরিবারের জন্য তিনি ফ্যামিলি ভিসা পাবেন। অনেকের ফ্যামিলি ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এখন ভিসার মেয়াদ না বাড়ালে তাদের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। অথচ সেখানে তাদের পরিবারের সবকিছু পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। ইতালি প্রবাসীদের অভিযোগ, বাংলাদেশে ইতালি দূতাবাসে যোগাযোগ করেও কোনো তথ্য পাচ্ছেন না তারা। ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, কবে বাড়াবে এ বিষয়ে ইতালি দূতাবাস সিদ্ধান্ত দেয়নি। ইতালিতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকার দূতাবাসে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু দূতাবাসে যোগাযোগ করলে একেক সময় একেক জন ফোন রিসিভ করেন এবং একেক জন একেক ধরনের উত্তর দেন। ইতালির ভিসা সেন্টার ভিএফএস গ্লোবালও কোনো তথ্য দিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে আজ রবিবার ঢাকায় ইতালির দূতাবাসের সামনে মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে আন্দোলন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। মানববন্ধন শেষ করে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে আরেকটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। মানববন্ধন থেকে তিন দফা দাবি উপস্থাপন করা হবে বাংলাদেশ ও ইতালি সরকারের কাছে।