কুষ্টিয়ায় ভাঙচুর করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ভাস্কর্য এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সম্প্রতি এই ভাস্কর্যের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। এখন মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে ভাস্কর্যটি। নির্মাণকালে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে এই ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। যশোর চারুবিদ্যার প্রাক্তন অধ্যক্ষ ভাস্কর মাহবুব জামান শামীম ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন।
জানা যায়, চলতি মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্মাণ সম্পন্নের পর নান্দনিক ভাস্কর্যটি শোভাবর্ধনের পাশাপাশি শহরবাসী-পথচারীদের দৃষ্টি কেড়েছে। ভূমি সমতল থেকে ২১ ফুট উচ্চতায় ভাস্কর্যটি নির্মিত হয়েছে। মূল বেদির ওপর নির্মিত পৃথক তিনটি ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের অগ্নিঝরা ভাষণসহ ঐতিহাসিক ঘটনাবলির চিত্র পৃথক পৃথকভাবে উপস্থাপন করা হয়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তত্কালীন রেসকোর্স ময়দানে অগ্নিঝরা ঐতিহাসিক ভাষণ, পাকিস্তান কারাগারের বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি মহাকালের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ নামে খ্যাত ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের লাহোরে পেশকৃত ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি সংবলিত ভাষণের চিত্র ভাস্কর্যে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া ভাস্কর্যের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে স্বাধীনতার অব্যবহিত পর জতিসংঘের সভায় বাংলায় দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ, তত্কালে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসন, পৃথক মুদ্রা ও ৭ই মার্চে তর্জনী উঁচিয়ে আগ্নিঝরা ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; জয় বাংলা…’ রঙিন কালির লেখায় ফুটে উঠেছে।
অন্যদিকে ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল নক্ষত্রসম জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে মহান মুক্তিযুদ্ধে যে অবদান রেখেছিলেন, তাদের প্রতিকৃতিও ভাস্কর্যের দেওয়ালে চিত্রায়িত করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ, লড়াই-সংগ্রাম ও গৌরবগাথা ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ভাস্কর্যটিতে ফুটে উঠেছে।