স্পোর্টস ডেস্ক
আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে বাংলাদেশে ইমার্জিং দলের টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল দুটি। তবে শেষে এসে বাগড়া দিল আয়ারল্যান্ডের নতুন কোয়ারেনটাইন নিয়ম। তাই তো একটি টি-টোয়েন্টি শেষেই ফিরে যাচ্ছে আয়াল্যান্ড উলভস। আর শেষটাই উলভসদের সুখকর হতে দিলেন না টাইগার তাওহিদ হৃদয় ও সুমন খান। ব্যাট হাতে হৃদয়ের দুর্দান্ত ইনিংসের পর বল হাতে সুমনের তোপের সামনে টিকতে না পেরে একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ড উলভসের হার ৩০ রানের।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৫ রানের মাথায় আনিসুলকে জশুয়া লিটলের ক্যাচ বানান গ্যারেথ ডেনালি। ওয়ানডে সিরিজে দারুণ ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয়ও উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ১০ বলে ৮ রান করে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন জয়। এরপর ইয়াসির আলি রাব্বি ব্যাট করতে নেমে ২ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ১৬ বলে ২২ রান করে ফিরে যান। তাকে উইকেটের পেছনে লর্কান টাকারের ক্যাচ বানান কার্টিস ক্যাম্ফার।
উইকেটের একপ্রান্তে অন্যরা যাওয়া আসার মিছিলে থাকলেও সাইফ হাসান উইকেটের অপরপ্রান্ত আগলে রাখেন। তবে ইনিংসের ১৩তম ওভারের ৪র্থ বলে অর্ধশতক থেকে মাত্র দুই রান দূরে থাকতে ফিরতে হয় সাইফকে। আউট হবার আগে ৫ চার ও ১ ছয়ের সুবাদে ৩৬ বলে তিনি করেন ৪৮ রান।
সাইফ ফিরলে উইকেটে আসেন শামিম হোসেন। ইনিংসের শুরুটা করেন ছক্কা হাঁকিয়ে, এরপর তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় শামিমকে। এর আগে ৪টি ছক্কায় মাত্র ১১ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি।
এরপর পাঁচে নামা হৃদয়ের ঝড় দেখে মিরপুর। দুর্দান্ত ইনিংস খেলে মাত্র ২৮ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। ৭টি চার আর একটি ছয়ের হৃদয়ের ইনিংস থামে ৩৫ বলে ৫৮ রান করে বাংলাদেশের ইনিংসের ১৯তম ওভারের ৪র্থ বলে। শেষ পর্যন্ত সাইফের ৪৮ আর হৃদয়ের ৫৮ রানে ভর করে বাংলাদেশ দল ৭ উইকেটে ১৮৪ রান তোলে।
১৮৫ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই গ্যারেথ ডিলানিকে আনিসুল ইসলাম ইমনের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন সুমন। রানের খাতা খোলার আগেই তাই বিদায় নিতে হয় ডানহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৫ রান যোগ করে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন উলভেস অধিনায়ক হ্যারি টেক্টর এবং স্টিফেন দোহানি। কিন্তু ৩টি চারের সৌজন্যে ২২ রান করা টেক্টরকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ বাতলে দেন বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম।
এর ৮ রান পরেই দোহানিকে ফেরান লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। ২৪ বলে ২৯ রান করে আবারো ইমনের হাতে ক্যাচ দেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। অপরপ্রান্তে ডানহাতি ব্যাটসম্যান লরকান টাকার লক্ষ্য টপকাতে লড়াই চালিয়ে যান। এর মধ্যেই ১ রান করা কার্টিস ক্যাম্ফারকে শামিম হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান তানভীর। ১৬ রান যোগ করে ফিরে যান উইককেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নেইল রকাও। তার উইকেটটি শিকার করেন শামিম। ফলে ১০০ রানের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
৪ নম্বরে নেমে উলভসের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করা টাকারকে ফেরান বিপ্লব। এই লেগ স্পিনারকে সুইপ করে মারতে গিয়ে সাইফের হাতে কাটা পড়েন তিনি। আউট হবার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২২বলে ৩৮ রানের ইনিংস। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যান বলার মতো রান করতে পারেননি। তাতেই নির্ধারিত ওভারের ১১ বল বাকি থাকতেই ১৮.১ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড উলভস। আর বাংলাদেশ ইমার্জিং দল জয় তুলে নেয় ৩০ রানের।
বাংলাদেশের জয়ে ৪ টি উইকেট শিকার করেন সুমন। ২ টি করে উইকেট তানভীর ও বিপ্লবের।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
বাংলাদেশ ইমার্জিং: ১৮৪/৭; ২০ ওভার; (তাওহিদ হৃদয় ৫৮, সাইফ হাসান ৪৮, শামিম ২৮); (পিটার চেজ ২/৩৬, মার্ক অ্যাডায়ার ১/২০)।
আয়ারল্যান্ড উলভস: ১৫৪/১০; ১৮.১ ওভার; (লরকান টাকার ৩৮, স্টেফান ডোহানি ২৯); (সুমন খান ৪/২৮, তানভির ২/৩২, আমিনুল ২/৩৭)।
ফলাফল: বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ৩০ রানের ব্যবধানে জয়ী।