রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তার অক্সিজেন লেভেল ওঠানামা করছে। করোনা ছাড়াও বেশ কিছু জটিল রোগে আক্রান্ত বেগম জিয়া বুধবার সকাল থেকে কিছুটা শ্বাসকষ্ট অনুভব করছেন। তার ডায়াবেটিসের মাত্রা ওঠানামা করছে। এ ছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমেছে।
এসব তথ্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন। তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বুধবার আবার নতুন করে আরও কিছু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। তার জরুরি চিকিৎসা সেবা পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে নার্স, ডাক্তার, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্টসহ সংশ্লিষ্টরা সার্বক্ষণিক যুক্ত রয়েছেন। তারা জানান, অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করার পর তার অক্সিজেন লেভেল ৯০ শতাংশের নিচে নেমে যায়। তবে আবার অক্সিজেন দেওয়ার পর তা ৯৯ শতাংশে চলে আসে। ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার জটিলতাগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। কিছু নতুন ওষুধও দেওয়া হয়েছে।
আপাতত হাসপাতালে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তাকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারেও তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। করোনায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন, সেরে ওঠার পর তারা কমবেশি সবাই কিছু না কিছু জটিলতায় ভুগেছেন। খালেদা জিয়ারও সেটিই হয়েছে।
এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। সবুজ সংকেত পেলেই পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হবে।
এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিদেশে যেতে বা বিদেশি চিকিৎসা নিতে পারবেন না- সরকারের দেওয়া সেই শর্ত শিথিল করলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনগত কোনো বাধা থাকে না।
খালেদা জিয়া গত ১০ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সোমবার শ্বাসকষ্ট অনুভব করায় খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়। পরে আরও দু’দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়।