খাবারের সন্ধানে যশোরের কেশবপুরের হনুমানের দল এখন যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে পার্শ¦বর্তী এলাকা হওয়ায় মণিরামপুর, অভয়নগর, চুকনগর, কলারোয়ায় তার ঘোরাফেরা বেশি।
গত কয়েক বছর ধরে হনুমান দলবেঁধে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থানীয়রা সাধ্যমত তাদের খাবারের ব্যবস্থা করলেও হনুমানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন তারা। হনুমান বাড়িতে বা সবজি খেতে ঢুকে উৎপাত চালাচ্ছে বলে গ্রামবাসী অনুযোগ করছেন।
যশোর রেলগেটের চায়ের দোকানদার আরমান জানান, প্রায়ই শ্রমিক ইউনিয়ন ৪৬২ কার্যালয়ের টিনশেডের উপর আমাগাছে হনুমান দেখা যাচ্ছে। ওরা আসলেই কলা পাউরুটি, বিস্কুট এসব খায়। তারপর ঘন্টা খানেক থেকে চলে যায়। আবার আসে। সাধারনত খেতে আসে ওরা।
অভয়নগর উপজেলার পৌর ভাঙ্গাগেট এলাকার হাজী রিয়াজ বলেন, তার মার্কেট এলাকায় প্রায় হনুমান এসে এটা সেটা খেতে চায়। প্রচন্ড ক্ষিদায় তারা এটা করে। মানুষজন তাদের সাধ্যমত খেতেও দেয়। তথ্য মেলে, মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড়ের যমযমিয়া দাখিল মাদরাসায় গত এক সপ্তাহ ধরে হনুমান ঘোরাফেরা করছে। প্রথমে তারা মাদরাসার প্রাচীরে অবস্থান নেয়।
যমযমিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক আনিছুর রহমান জানান, প্রায়ই হনুমানের দল মাদরাসায় ঘোরাঘুরি করে। এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ২০টি হনুমান একসাথে এসেছে। শিক্ষার্থীরা ওদের খাবার দিয়েছে। আরো খাবারের আশায় ওরা শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ে। পরে হনুমান তাড়িয়ে দিয়ে ক্লাস করাতে হয়েছে।
এ শিক্ষক আরো জানান, গত দুই মাস ধরে হনুমাদের দল এ অঞ্চলে আছে। রাতের বেলায় ওরা গাছে থাকে। সকাল হলে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। পরে খাবার খুঁজতে শ্রেণি কক্ষে ঢুকে পড়ে। শার্শা ও সদর উপজেলা, এমনকি যশোর পৌরসভার রেলগেট, পালবাড়ী, পুলেরহাট, শেখহাটী জামরুলতলায়ও তাদের দেখা যাচ্ছে। কালামুখো হনুমানের আদিবাস যশোরের কেশবপুরে। সেখানে তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারিভাবে ব্যবস্থা রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে সরকারি খরচে নিয়মিত হনুমানের খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও তা সঠিকভাবে বিতরণ করা হয় না। ফলে খাবারের খোঁজে বছরের অধিকাংশ সময় হনুমানের দল মণিরামপুরসহ আশপাশের এলাকায় ঢুকে পড়ে। মণিরামপুর কেশবপুর অঞ্চলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, খাবার না থাকায় অভ্যাসগত কারণে হনুমানগুলো আশপাশের এলাকায় বিচরণ করে। কেশবপুরে ছোটবড় অন্তত: ৩৫০টি হনুমান রয়েছে বলে জানান তিনি।