নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনায় অনেকেই গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার (১০ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ঝিনাইদহে কাজী কামাল আহমেদ (বাবু) নামের আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, সে আনার হত্যাকাণ্ডের অর্থের বিনিময়ে জড়িত ছিল— তার বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি তো বললাম, তদন্ত শেষ হোক। অনেকে গ্রেপ্তার হতে পারেন। তদন্তের আগে আমার মনে হয়, এগুলো বলা উচিত হবে না।’
আপনি এর আগে একটি আইনশৃঙ্খলার বৈঠকে বলেছিলেন, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সত্যের খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন। বিষয়টি এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে— জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখনো বলছি, আমরা সত্যের কাছাকাছি এসে গিয়েছি। মরদেহের বিষয়টি নিশ্চিত হলেই আমরা আপনাদের কাছে অনেক কিছু প্রকাশ করতে পারব। মরদেহ নিশ্চিত হওয়ার জন্য যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের জবানবন্দি শুনেছি। তারা বলেছে যে, মরদেহ তারা খণ্ডবিখণ্ড করেছে। কোথায় রেখেছে, সেটা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।’
‘ভারতীয় ও আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী সেখানে গিয়েছিল, সেখান থেকে তারা যেগুলো পেয়েছেন সেগুলো উদ্ধার করেছেন। ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত হতে পারব না যে এগুলো তার মরদেহের অংশ।’
মূল আসামি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, তাকে গ্রেপ্তার করতে না পারলে আসামিদের বিচার কোথায় হবে— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, মামলা দুটো হয়েছে। যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে একটি মামলা হয়েছে। সেটা হতেই হবে। আর ওই সংসদ সদস্যের মেয়ে ঢাকায় একটি মামলা করেছেন। কাজেই এ ঘটনাগুলো দুদেশেই সম্পৃক্ত হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, তাদের দেশে যেহেতু ঘটনা ঘটেছে, তাদের আসামিকে ফেরত নেওয়া ও বন্দি করার দায়িত্ব তাদের। আমি যতটুকু জানি, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দিবিনিময় চুক্তি আছে। সেক্ষেত্রে হয়ত সেই সুবিধা ভারত সরকার পাবে। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দিবিনিময় চুক্তি নেই। তবে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সব কাজেই তারা সহযোগিতা করছেন এবং ভবিষ্যতে করবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের একটা প্রমাণ লাগবে যে এই খণ্ডবিখণ্ড মাংসগুলো তার। তার ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার মেয়ের সঙ্গে যদি মিলে যায়, তাহলে ভারত সরকার আমাদের জানাবে, তখন আমরা বলতে পারব।
রাজধানীর কূটনীতিক এলাকা বারিধারায় পুলিশ কনস্টেবলের গুলিতে আরেক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত যা শুনেছি হয়তো তার পারিবারিক কোনো অসুবিধা থাকতে পারে বা অন্য কোনোকিছু থাকতে পারে। কাজেই এখনই সুনির্দিষ্টভাবে কোনোকিছু আমরা বলতে পারছি না।
‘আমরাও উদ্বিগ্ন এ কারণে যে, একজন পুলিশের কাছে অস্ত্র ছিল, কী এমন কারণ ঘটেছিল তাকে ওপেন ফায়ার করতে হয়েছে। আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে তদন্ত করবো। কেউ ইচ্ছাকৃত এ ঘটনা করে থাকে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে করে থাকে, কিংবা কেন ঘটেছে- এগুলো সবই আমরা দেখব।’
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক প্রশ্নই সামনে আসছে। এর মূল মোটিভটা, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটতে পারে। এজন্য কী করণীয়, সবকিছু নিয়েই আমরা বসব। বসে আমরা দেখব কোনো জায়গায় আমাদের গাফিলতি ছিল কি না।