দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ বুলবুলি বেগমের (২৮) পেটে লাথি মারার ৯দিন পর বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেল ৪টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার গর্ভপাত ঘটেছে। গর্ভপাতে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানটি মৃত ছিল।
বুলবুলি বেগমের স্বামী ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, গত ১১ মে সকালে তার বাড়ির সামনে প্রতিবেশি মিজানুর রহমান লাল্টুর স্ত্রী রুবিনা খাতুন ধানের খড় শুকাতে দেন। ওইদিন সন্ধ্যার আগে বুলবুলি বেগম খড়গুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য রুবিনা খাতুনকে বললে রুবিনা ক্ষিপ্ত হয়ে বাকবিণ্ডার এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এরই এক পর্যায়ে রুবিনার বাড়ির আলী হোসেনের ছেলে মেহেদুল, বুদু ও মোতালেব বুলবুলি বেগমকে মাটিতে ফেলে পেটানোর জন্য হুকুম দেয় রুবিনা। এ সময় রুবিনা বুলবুলিকে মাটিতে ফেলে দিয়ে তার পেটে লাথি মারে। এতে অন্তঃস্বত্ত্বা বুলবুলি পেটের ব্যাথায় মাটিতে ছটপট করতে থাকলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার (১৯ মে) ছাড়পত্র নিয়ে বুলবুলি বেগম নিজ বাড়িতে আসেন।
এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বুলবুলি বেগমের পেটে অসনীয় ব্যথা উঠলে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানেই দুপুর আড়াইটায় মৃত নবজাতকের গর্ভপাত ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিডওয়াইফ আফরোজা বেগম বলেন, বুলবুলিকে ভর্তি করার সময় পেটের শিশুটির পা থেকে কোমড় পর্যন্ত বের হয়েছিল। জন্ম নেওয়া কন্যা শিশুটির হাত পা ও শরীরের ত্বক ফাটা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটি গর্ভে আগেই মারা গিয়েছিল। ঝুঁকির মধ্যেই আড়াইটা থেকে চেষ্টা চালিয়ে বিকাল ৪টায় বুলবুলির নবজাতক গর্ভপাত করানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোছাঃ নাফিসা আলম বলেন, বুলবুলি প্রায় ৭ মাসের গর্ভবতী ছিলেন। কিন্তু অকারণেই তার অপরিপক্ক নবজাতকের গর্ভপাত ঘটে। গর্ভপাতের বহুপূর্বেই তার বাচ্চাটি মারা গিয়েছিল। তবে বুলবুলিকে ২৪ ঘন্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।