1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
September 12, 2024, 6:07 am
সংবাদ শিরোনাম :

বঙ্গবন্ধু কন্যার ৭৫ তম জন্মদিনে ❤️ আমার শ্রদ্ধা

  • প্রকাশিত : বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২
  • 343 বার পঠিত
আপার সাথে আমার পরিচয় ৭৩এর শেষ কিংবা ৭৪এর শুরুতে। এর আগে তিনি আমাকে দেখেছেন শুধু চোখের দেখায়। ৩২সে তাঁর ছবি তোলাটা আরও অনেক আগে থেকেই।পরিচিত হয়েছিলাম পরে ছবি তোলার কারনেই। যেমনটা হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর সাথে। শুরুতে বঙ্গবন্ধুর ছবি তুললেও কামাল ভাই পরিচয় করিয়ে দিলেন পরের দিকে। শুরুতে হাসিনা আপাকে আমার কেন জানি ভয় ভয় করতো। ভয়টা কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আমার কখনোই করেনি। হাসিনা আপাক ভয় লাগার কারন ছিল তিনি ছিলেন কামাল ভাইয়ের বড় আর ঐ বাড়ির বড় সন্তান। তাছাড়া তাঁর সামনে দিয়ে গেলেই তিনি আমার দিকে ভুরু কুঁচকে তাকাতেন আর আমি তাতেই ভয় পেতাম। তাই দূরে দূরে থেকেছি, এড়িয়ে চলেছি।
এক সকালে ৩২সে সিঁড়ি টপকিয়ে তিনতালায় কামাল ভাইয়ের রুমে যাবো এমন সময় দেখি তিনি দোতালা থেকে নিচে নামছেন। আর কটি ধাপ সিঁড়ি পেরুলেই তিনি আর আমকে পেতেন না। কিন্তু তাঁর সাথে আমি মুখোমুখি হয়ে যাই। আমাকে দেখেই নিয়ম মাফিক তিনি ভুরু কুচকালেন। ব্যস, তাতেই আমি ’ ফ্রিজ ‘ ! সিঁড়ি ছেড়ে পারলে দেয়ালে মিশে যাই। কি আর করা দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে সটান, আমার চোখ নামিয়েছি পায়ের পাতায়। তিনি আমার সামনে দিয়ে নেমে যেতেই আমি এক দৌড়ে তিন তালায় কামাল ভাইয়ের রুমে। আমার এমন এন্ট্রি দেখে কামাল ভাই বললেন , ‘ কীরে হাঁপাচ্ছিস কেন‘ ? আমি বললাম, দৌড়ে সিঁড়ি উঠেছি তাই।
৭৫ সালের কাল রাত্রির হত্যা কাণ্ডে সবাই বাক রুদ্ধ আমরা। কান্না ভেজা ভোরে আমি কামাল ভাইয়ের রুমে আর রিসিপ্সনের ফোনে বারবার চেষ্টা করেও খবর নিতে ব্যর্থ হলাম। তারপর দীর্ঘ সময়। হাসিনা আপা দেশে ফিরে এলেন। এতো বড় একটা হত্যাকাণ্ডে মানসিক বিপর্যয় ঘটে ছিল আমাদের।দেশে ফিরেই ৩২ নাম্বারের বাড়ী ফিরে পেতে সংগ্রামে তাঁকে পথে নামতে হলো। সেই থেকে তাঁর পাশে ক্যামেরা নিয়ে সময় সময়ে থেকেছি। বাড়িটির তালা খোলার দিনটি ছিল অবিস্মরণীয় একটি দিন। সিঁড়িতে ঘরের মেঝে সিলিং এ লেগে আছে শুকিয়ে যাওয়া প্রিয় জনদের রক্ত। যত্র তত্র বুলেট বিদ্ধ হয়ে আটকে আছে মেঝেতে বুলেটের খোসার ছড়াছড়ি। সবচে কষ্টের ছিল জাতির পিতার ক্ষতবিক্ষত শোবার বিছানাটা।
বেয়োনেটের খোঁচায় খোঁচায় ছিন্নভিন্ন। সেই দিন হাসিনা আপা কেঁদে ভাসিয়েছিলেন বুক। বিভীষিকাময় সেই ধানমণ্ডির বাড়ীতে বসবাস করতে এলেন আপা। যে বাড়িটি এক সময় ছিল প্রাণোচ্ছল, নিজের চোখে দেখেছিলাম যে বাড়ি ভালোবাসার মোড়কে মোড়া সেই বাড়ীটি আজ মরুভুমির মত প্রাণহীন, প্রাণহীন এক নিঃশব্দতা গ্রাস করেছে পুরো ৩২ নাম্বারের বাড়ীতে। আপা বাড়ীটি ‘ বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টেকে ‘ লিখেদিলেন এবং তৈরি করলেন ‘ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ‘। আমি সে সময় বঙ্গবন্ধুর এবং তাঁর পরিবারের প্রতিটি সদস্যের রেখে যাওয়া প্রতিটি জিনিষের ছবি তুলেছি। ঐ কাজ করতে হাসিনা আপা আমাকে একটা ক্যামেরার লেন্স কিনে দিয়েছিলেন।
আমি লক্ষ্য করতাম ৩২সে প্রায় সময় তিনি বিমর্ষ থাকতেন। এতো বড় একটা পৈশাচিক হত্যা কাণ্ডের কথা ভাবলে চোখ বন্দ করে রাতের ঘুমটাও ছিল কঠিন, ঐ বাড়িটি তখন ছিল ভয়ার্ত ভয়ংকর। সেই সাথে যোগ হয়েছিলো ভয়ংকর একাকীত্ব। জয় আর পুতুল পড়াশুনার জন্য দূরে। একমাত্র বোনকে কাছে না পাওয়া পুরোটা সময় কেটেছে বিমর্ষতায়। সে সময় স্মৃতি বিজড়িত ৩২শের প্রতিটি ইঞ্চি প্রতিটি ঘর তাঁকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল। সেই কঠিন সময় গুলিতে যে কজনা ছিলেন তাঁর মধ্যে আপন হয় উঠে বান্ধবী বেবি মওদুদ। বেবি আপা দীর্ঘ একটা সময় তাঁকে সহায়তা করেছিলেন। আমার সুযোগ হয়েছিল সেই কঠিন সময়ে তাঁর পাশে থাকার, কাজ করার। ১৫ই আগস্টের হত্যা কাণ্ডের ঘটনায় বাড়ীটি যে ভাবে রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিলো তা সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের কারো ছিল না। কাছের মানুষ হয়ে হাসিনা আপা কি করে পেরেছেন তা ছিল অবিশ্বাস্য। সে সময় তাঁর মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করাই ছিল কঠিন। আল্লাহ্‌র রহমতে তিনি রক্ষা পেয়েছেন।আল্লাহ্‌র অশেষ মেহেরবানিতে তিনি শুধু ১৫ আগস্টে রক্ষা পাননি পেয়েছেন ২১ আগস্টের প্রাণঘাতী হামলা থেকে। চট্টগ্রামের হত্যাকাণ্ড কিংবা ঈশ্বরদীর ট্রেনে হামলাসহ অসংখ্য বার রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
নিজের বিপদ থেকে আল্লাহ্‌ তাঁকে যে ভাবে রক্ষা করেছেন সে কারনেই বুঝি তিনি মানুষের বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ান। ঠিক যেমনটি তিনি বিরোধী নেত্রি হিসেবে থেকেছেন তেমনটি থেকেছেন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহনের পরও।
এক সন্ধ্যায় আমি গনভবনে। রাত পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হাসিনা আপা গনভবনে অফিস করতেন। রাত দশটার দিকে তিনি দোতালায় নিজের ঘরে ফিরে যাবেন। এমন সময় গণভবনের নিরপত্তা অফিসারের বেতার বার্তা এলো এডিসি মেজর নাসিমের কাছে। গেটে কিছু সংখ্যক মুসল্লি হজ্বে গমন উচ্ছুক যাত্রী ভিড় করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের আর্জি নিয়ে। তাঁরা বলছেন তাঁদের হজ্বযাত্রায় ট্রাভেল এজেন্সির গাফলতিতে ফ্লাইট জটিলতায় তাঁরা কাল হজ্বে যেতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনার আর্জি নিয়ে সাক্ষাৎ প্রার্থী হয়েছেন, এতো রাতে।
ডিউটিরত অফিসিয়ালসরা বিপাকে। সারা দিন ক্লান্তির পর দোতালায় ঘরে ফিরার মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীকে কেউ তাঁকে বাঁধা দিতে চান না। আর প্রধানমন্ত্রী দোতালায় উঠে গেলে মুসল্লিদের সাক্ষাৎ দেয়া তখন আরো অনিশ্চিত হয়ে পরবে। হাতে সময় কম দ্রুত সিধান্ত নিতে হবে। কি করা যায় ভাবতেই সহজ একটা উপায় এলো আমার মাথায়। দর্শনার্থী মুসল্লিদের লবিতে বসানো হবে। প্রধানমন্ত্রী দোতালা ফেরার পথে সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সামনে দিয়েই যাবেন। তখন তিনি নিশ্চয়ই কথা বলবেন !
দ্রুত ভিতরের লবিতে বসানো হলো দর্শনার্থী মুসল্লিদের আর কিছু পরেই তাঁদের সামনে পৌঁছে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মুসল্লিদের কান্না বিজড়িত অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন এবং উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৎক্ষণাৎ আবার অফিসে ফিরে এলেন। অফিসে ফিরেই তিনি রাত ৩টা পযন্ত ফরেন অফিস , সৌদি দূতাবাস, সৌদি আরবের বাংলাদেশ মিশনে কথা বলে পরদিন সকল হাজীকে হজ্বে পাঠানো নিশ্চিত করে তবেই ফিরেছিলেন ডিনারে এবং তাহাজ্জুতের নামাজ পরে অপেক্ষা করেছিলেন ফজরের।
বঙ্গবন্ধু কন্যার ৭৫ তম জন্মদিনে ❤️ আমার শ্রদ্ধা।
পাভেল রহমান
ধানমণ্ডি, ঢাকা।
সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park