বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিং নৈপুন্যের পর পোর্ট এলিজাবেথে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। তবে নিজেদের ইনিংস শুরু করে বিপদে পড়েছে টাইগাররা। ৫ উইকেটে ১৩৯ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ৩১৪ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। বল হাতে ১৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন তাইজুল।
তিন ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৭৮ রান করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। কাইল ভেরিনি ১০ ও ওয়াইন মুল্ডার খালি হাতে দিন শেষ করেছিলেন।
আজ খালেদ আহমেদের করা দিনের প্রথম ওভারের শেষ বলে ভেরিনির বিপক্ষে লেগ বিফোর আউটের আবেদন করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু তাতে আম্পায়ার সাড়া না দিলে, রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু রিভিউতে সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ।
দিনের সপ্তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৩শ স্পর্শ করে। ঐ ওভারের চতুর্থ বলে ভেরেনিকে দারুন ডেলিভারিতে বোল্ড করেন খালেদ। ৪৮ বলে ২২ রান করেন ভেরেনি।
এরপর উইকেটে এসে বাংলাদেশ বোলারদের উপর চড়াও জন কেশব মাহরাজ। তাইজুলকে পরপর দুই ওভারে ২টি ছক্কাও মারেন তিনি। বাদ যাননি মিরাজও। তার একটি ওভারে একটি করে চার-ছক্কা মারেন মহারাজ। বাংলাদেশের দুই স্পিনারকে সাচ্ছেন্দ্যে খেলেছেন মহারাজ। ১১২তম ওভারে মিরাজকে ছক্কা মেরে ৫০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মহারাজ।
মহারাজের হাফ-সেঞ্চুরির মাঝে বাংলাদেশকে উইকেট উপহার দেন তাইজুল। নিজের ৩৯তম ওভারে মুল্ডারকে বোল্ড করেন তাইজুল। ৩৩ রানে থামেন তাইজুল। সপ্তম উইকেটে ১০০ বলে ৮০ রান যোগ করেছিলেন মহারাজ ও মুল্ডার।
রানের গতি ধরে রেখে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন মহারাজ। তবে তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান তাইজুল। ব্যক্তিগত ৮৪ রানে মহারাজকে বোল্ড করেন তাইজুল। তার ৯৫ বলের ইনিংসে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো। মহারাজকে থামিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে দশমবারের মত পাঁচ উইকেট নেন তাইজুল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম।
দলীয় ৪১৮ রানে মহারাজের বিদায়ের পর, ৪৫৩তে শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। প্রোটিয়াদের শেষ দুই উইকেট নেন তাইজুল ও মিরাজ।
বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে ৫০ ওভারে ১৩৫ রানে ৬ উইকেট নেন তাইজুল। ১০০ রানে ৩ উইকেট নেন পেসার খালেদ আহমেদ। ৮৫ রানে ১ উইকেট নেন মিরাজ।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ইনিংসের পঞ্চম বলেই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে হারায় টাইগাররা। খালি হাতে ফিরেন প্রথম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান জয়। এরপর ৭৯ রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ও তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত।
তামিমকে ৪৭ ও শান্তকে ৩৩ রানে থামান মুল্ডার। ৫৭ বলে ৮টি চারে তামিম এবং ৭৪ বলে ৬টি চারে নিজের ইনিংস সাজান শান্ত।
মিডল-অর্ডারে অধিনায়ক মোমিনুল ৬ ও লিটন ১১ রানের বেশি করতে পারেননি। এতে ১২২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে ইয়াসির আলিকে নিয়ে দিন শেষ করেছেন মুশফিকুর রহিম। মুুশফিক ৩০ ও ইয়াসির ৮ রানে অপরাজিত আছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার মুল্ডার ৩টি ও ওলিভিয়ের ২টি উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড (টস- দক্ষিণ আফ্রিকা) :
দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস (আগের দিন ২৭৮/৫, ৯০ ওভার, ভেরিনি ১*, মুল্ডার ০*) :
এলগার ক লিটন ব তাইজুল ৭০
এরইউ ক লিটন ব খালেদ ২৪
পিটারসেন এলবিডব্লু ব তাইজুল ৬৪
বাভুমা এলবিডব্লু ব খালেদ ৬৭
রিকেলটন ক ইয়াসির ব তাইজুল ৪২
ভেরেনি বোল্ড ব খালেদ ২২
মুল্ডার বোল্ড ব তাইজুল ৩৩
মহারাজ বোল্ড ব তাইজুল ৮৪
হার্মার স্টাম্প লিটন ব তাইজুল ২৯
উইলিয়ামস এলবিডব্লু ব মিরাজ ১৩
ওলিভিয়ের অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (লে বা-৩, নো-১, ও-১) ৫
মোট (অলআউট, ১৩৬.২ ওভার) ৪৫৩
উইকেট পতন : ১/৫২ (এরইউ), ২/১৩৩ (এলগার), ৩/১৮৪ (পিটারসেন), ৪/২৬৭ (রিকেলটন), ৫/২৭১ (বাভুমা), ৬/৩০০ (ভেরেনি), ৭/৩৮০ (মুল্ডার), ৮/৪১৮ (মহারাজ), ৯/৪৫৩ (হার্মার), ১০/৪৫৩ (উইলিয়ামস)।
বাংলাদেশ বোলিং :
খালেদ : ২৯-৬-১০০-৩,
মিরাজ : ২৬.২-৪-৮৫-১,
এবাদত : ২৮-৩-১২১-০ (ও-১),
তাইজুল : ৫০-১০-১৩৫-৬ (নো-১),
শান্ত : ৩-০-৯-০।
বাংলাদেশ ইনিংস :
তামিম ইকবাল এলবিডব্লু ব মুল্ডার ৪৭
মাহমুদুল হাসান জয় ০
নাজমুল হোসেন শান্ত এলবিডব্লু ব মুল্ডার ৩৩
মোমিনুল হক এলবিডব্লু ব মুল্ডার ৬
মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ৩০
লিটন দাস বোল্ড ব ওলিভিয়ের ১১
ইয়াসির আলি অপরাজিত ৮
অতিরিক্ত (বা-৪) ৪
মোট (৫ উইকেট, ৪১ ওভার) ১৩৯
উইকেট পতন : ১/৩ (জয়), ২/৮২ (তামিম), ৩/৮৫ (শান্ত), ৪/১০০ (মোমিনুল), ৫/১২২ (লিটন)।
দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং :
ওলিভিয়ের : ৯-৪-১৭-২,
উইলিয়ামস : ৮-২-৩০-০,
হার্মার : ৭-১-৩১-০,
মহারাজ : ১১-১-৪২-০,
মুল্ডার : ৬-৩-১৫-৩।