1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
October 4, 2024, 2:58 am
সংবাদ শিরোনাম :

ভূমিকম্পে ধসে পড়বে নিচতলা, ঢাকায় ভবনের দুর্বলতা গ্যারেজ

  • প্রকাশিত : বুধবার, জুন ১৬, ২০২১
  • 392 বার পঠিত

১৮৯৭ সালে ভারতের আসামে স্মরণকালের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ১২৪ বছর পূর্ণ হয়েছে গত ১২ জুন। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭। এ ঘটনার প্রভাব পড়েছিল ২৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা ঢাকাতেও, ভূমিকম্প তীব্রতার স্কেলে সেসময় রাজধানীর কম্পন ছিল সাতের বেশি। বর্তমান সময়ে একই দূরত্বে এই মাত্রার ভূমিকম্প হলে সেটার তীব্রতায় ঢাকায় কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে সাজানো হয়েছে অনলাইনের তিন পর্বের বিশেষ প্রতিবেদন। আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

মোটাদাগে দেশের সাধারণ মানুষ ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন নয়। আসামের ভূমিকম্পের কথাও তাদের স্মৃতিতে নেই। আলাপচারিতায় সংখ্যাগুরু মানুষ বিশ্বাসই করতে চাননি যে ১০০ বছর আগে ঘটা ভূমিকম্প একই বা অধিক শক্তিতে আবার ফিরতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই মাত্রার একটি ভূমিকম্প নিশ্চিতভাবে আসবে। তবে কবে আসবে বা কখন আসবে তা বলা সম্ভব না হলেও দুর্যোগটি নিজের অস্তিত্ব জানান দেবেই। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভূমিকম্পের সম্ভাব্য উৎপত্তিস্থল আসামের ডাউকি ফল্টের ৫০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে সব স্থাপনা ভূমিকম্প সহনশীল হওয়া বাঞ্ছনীয়।

ঢাকার বহুতল ভবনগুলোর মূল দুর্বলতা কোথায়? দেখা গেছে, ঢাকার বহুতল ভবনের কার পার্কিং থাকে নিচতলায়। এই তলাটি শুধু কলাম বা পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। ভাবতে হবে যে- বিল্ডিংয়ের ওজন আছে, বসবাসরত মানুষের ওজন আছে, জিনিসপত্রের ওজন আছে। বিল্ডিংয়ের নিজের ওজনকে বলা হয় ডেডলোড, অন্যান্য সবকিছুর ওজনকে বলে লাইভ লোড।

যেখানে শুধু কলাম থাকে সেটা বিল্ডিংয়ের বাকি তলাগুলোর তুলনায় দুর্বল। কারণ উপরের ফ্লোরগুলোয় কলামের পাশাপাশি পাঁচ ইঞ্চি দেওয়াল থাকে। নিচতলায় দেওয়াল নেই, শুধু কলাম। এই দুর্বলতাকে প্রকৌশলের ভাষায় বলে সফট স্টোরিড। অথচ ভূমিকম্পের সময় যে ফোর্স কাজ করে তা সবচেয়ে বেশি নিচতলায় প্রভাব পড়ে। তখন নিচের পিলার ভেঙে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ঘটনা প্রতিরোধ করতে নিচতলাকে শক্তিশালী করতে হবে। একে বলে রেট্রোফিটিং। কলামকে স্টিল জ্যাকেটিং করে এবং দুই কলামের মাঝে ব্রেসিং, সিয়ারওয়াল বা উইংওয়াল নির্মাণ করে দুর্বল কার পার্কিংয়ের তলাটিকে শক্তিশালী বা রেট্রোফিটিং করা যায়। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ভবনের নিচে পাইলের ক্যাপগুলো (মাথা) টাইবিম দিয়ে সংযুক্ত না করা। কম্পনের মুহূর্তে পাইলগুলো পার্শ্বশক্তির বিরুদ্ধে যাতে একজোট হয়ে কাজ করে, সে জন্য পাইলের ক্যাপগুলো টাইবিম দিয়ে সংযুক্ত করে দেওয়া অত্যাবশ্যক। বেশির ভাগ ভবনেই এই ত্রুটি বিদ্যমান।

এদিকে মধুপুর গড়ের দক্ষিণ প্রান্তে ঢাকা শহর অবস্থিত। গড়টা লালমাটির যেটা ইমারত নির্মাণের জন্য ভালো। জানা গেছে, বর্তমান ঢাকা মহানগরীর ৩৫ ভাগ হচ্ছে লালমাটির ওপরে এবং ৬৫ ভাগ হচ্ছে ভরাটকৃত জায়গায়। এগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে যেভাবে ভরাট করা উচিত ছিল তা করা হয়নি। যদি লেয়ার বাই লেয়ার কমপ্যাক্টভাবে এটা ভরাট করা হতো তাহলে ফাউন্ডেশন ভালো করা যেত। ঢাকার যে ৬৫ ভাগ ভবন নতুন মাটির ওপর গড়ে উঠেছে তা ঝুঁকিপূর্ণ।

একটি বড় ভূমিকম্প আসবেই তা জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন ভূ-তত্ত্ববিদ প্রফেসর ড. সৈয়দ হুমায়ূন আখতার। তিনি বলেন, আসামের ডাউকি ফল্টের পূর্বপ্রান্তে গত ৫০০ বছরেও বড় ভূমিকম্প হয়নি। সেখানের সেই শক্তিটা এখনো বের হয়নি। এটা সেখানে সঞ্চিত হয়ে আছে। শক্তিটা আজ হোক, কাল হোক বের হবেই। এর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। পশ্চিমপ্রান্তে অনেকগুলো ভূমিকম্প হয়ে শক্তি বের হয়ে গেছে। এ প্রান্তে নতুন করে শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রথমদিকে ঢাকা নগরীর পুরোটাই লাল মাটির ছিল। পরে যখন শহর বড় হওয়া শুরু করে তখন অনিয়ন্ত্রিত এবং অপরিকল্পিতভাবে আশেপাশের নিচু এলাকা ভরাট করে বহুতল ভবন হতে থাকলো। বৈজ্ঞানিকভাবে যেভাবে ভরাট করা উচিত ছিল অনেক ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।

কাঠামো প্রকৌশলী ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. আলী আকবর বলেন, ভূমিকম্পের তীব্রতার স্কেল এবং মাত্রা মাপার রিখটার স্কেল আলাদা। আসাম বেসিনে যে ভূমিকম্প হয়েছিল সেটা রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার হয়েছিল। এখন হলে সেই মাত্রার হতে পারে। কিন্তু তীব্রতা মাপা হয় মডিফায়েড মার্কেলি ইন্টেনসিটি স্কেলে। এটাতে রোমান অক্ষর ব্যবহার করা হয়। আর রিখটার স্কেলে ভগ্নাংশ হলেও ইন্টেনসিটি স্কেলে কখনো তা হয় না। আসাম ভূমিকম্পে ঢাকা ইন্টেনসিটি স্কেলে ৭-এ কেঁপেছিল। কেউ কেউ বলেন- এটা ৮ ছিল। এখন শ্রীমঙ্গল, আসাম বেসিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মিয়ানমার অথবা বঙ্গোপসাগরের মধ্যে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকা ৭ থেকে ৮ মধ্যে কাঁপবে।

পাইলিংয়ের ক্যাপে টাইবিম লাগানো সম্পর্কে এই বিশেষজ্ঞ ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, পাইলিংয়ের ত্রুটি আর সংশোধনের উপায় নেই। কারণ এটি ভবনের নিচে মাটির তলের সমস্যা। নতুন ভবন তৈরির সময় তাই পাইলের মাথাগুলো আরসিসির টাইবিম দিয়ে সংযুক্ত করে দেওয়া দরকার।

রেট্রোফিটিং প্রসঙ্গে এই কাঠামো প্রকৌশলী বলেন, এটা করানোর জন্য ফ্ল্যাট মালিকদের রাজি করানো একটা বড় সমস্যা। ১৫ জন মালিকের মধ্যে ৭ জন রাজি হলে বাকি ৮ জন হয় না। তাই রেট্রোফিটিংও করা হয় না। এটা না করার ফলে বড় ভূমিকম্প হলে ঢাকার বেশিরভাগ ভবন ধসে পড়বে।

এমন ভূমিকম্পে ঢাকার পরিণতি সম্পর্কে ড. মল্লিক বলেন, বড় ঝাঁকি আসলে ঢাকা শহরের খুবই করুণ পরিণতি হবে। আর ৭ তীব্রতার কম্পন হলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। ৭ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে এমন বিল্ডিং খুব কম।

একই প্রসঙ্গে প্রফেসর হুমায়ুন আখতার বলেন, ঢাকায় যদি বড় কম্পন হয় তাহলে যা ক্ষয়ক্ষতি হবে তা কল্পনার অতীত। হয়তো ঢাকাকে পরিত্যাক্ত নগরীও ঘোষণা করতে হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park