যশোরে ভারতীয় ভিসা অফিসে মানুষের ঢল নেমেছে। গভীর রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে বা শুয়ে থাকছেন। করোনা মহামারীতে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ভারত টুরিস্ট ভিসা ছাড়ায় মানুষ ভিসা নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। ফলে অতিরিক্ত চাপ বেড়ে গেছে ভিসা অফিস কর্মীদের উপর। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খেতে দেখা যাচ্ছে তাদের।
জানা যায়, গত ২০/২১ দিনে যশোর ভিসা অফিসে জমা পড়েছে ২০ সহস্রাধিক আবেদনসহ পাসপোর্ট। এছাড়া প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ আবেদনকারী ফিরে যাচ্ছেন।
২০২০ সালে মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ভারতের জনজীবন। ওই বছর তারা ভারতের সকল প্রকার ভ্রমণ ভিসা বাতিল করে। এরপর তারা গত দুই বছর ভ্রমণ ভিসা দেয়নি। শুধুমাত্র জরুরি মেডিকেল ভিসা চালু রেখেছিল। সেক্ষেত্রে বিমানযোগে যাতায়াতের শর্ত বেধে দেয়া হয়।
দুই বছর এ জটিল পরিস্থিতে সবচেয়ে বেশি সঙ্কটে পড়েন ব্যবসায়ীরা। তাদের মালামাল আনা-নেয়ায় ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এরপর ভারতে করোনা সংক্রমণ কিছুটা স্বাভাবিক হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুরিস্ট ভিসা অবমুক্ত করার ঘোষণা দেয়। গত ৩০ মার্চ থেকে সারাদেশের ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টারে আবেদন জমা নেয়া শুরু হয়। এ কারণে যশোর অফিসে টুরিস্ট ভিসার আবেদন পড়তে থাকে। এক পর্যায়ে বাড়তে থাকে আবেদনকারীদের ভিড়। চলতি সপ্তাহে ভিড় রীতিমত বিশৃঙ্খলায় রুপ নিয়েছে।
প্রতিদিন গভীর রাত থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের নড়াইল রোডের নীলগঞ্জ ভারতীয় ভিসা সেন্টারের সামনে অন্তত ২/৩ হাজার মানুষের ভিড় থাকছে। তারা যশোর-নড়াইল সড়কের পাশে ভারতীয় ভিসার আবেদন নিয়ে ৫/৬ লাইনে দাড়িয়ে থাকছেন।
প্রতিদিন ভিসা সেন্টারে মানুষের ভিড় আগের তুলনায় বাড়ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এ চাপ এখন কয়েক গুণ বেশী। কর্তৃপক্ষ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভিসা আবেদন জমা নিচ্ছেন। এ হিসেবে গত ৩০ মার্চ টুরিস্ট ভিসা ছেড়ে দেবার
পর ২১ দিনে অন্তত ২০,০০০ আবেদন জমা পড়েছে। প্রতিটি আবেদনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ফি জমা দিতে হচ্ছে ৮০০ টাকা। এর সাথে ভ্যাট, ট্যাক্সসহ অন্যান্য ফি যুক্ত হচ্ছে আরো ৪৩ টাকা।
আবেদনকারীদের বক্তব্য, কাউন্টারে আরো একটু দ্রুত কাজ করতে পারলে লাইনে দাঁড়ানো সবাই সহজে আবেদন জমা দিতে
পারতেন। তখন ভিড় এড়ানো সম্ভব হতো। এছাড়া আরো পরিকল্পিতভাবে এ কাজটি করা প্রয়োজন বলে অনেকে মন্তব্য করেন। তবে ভিসার মতো স্পর্শকাতর বিষয় দেখেশুনে না করলে উল্টো ভোগান্তির আশঙ্কা করেছেন অনেকে।
আবেদনকারীদের ব্যাপক ভিড় এড়াতে কর্মীদের সাথে কাজ করছেন ভিসা সেন্টারের প্রধান বিপ্লব কুমার। তাকে কখনো কখনো নিচে নেমে এসে আবার কখনো উপরের লাইন সামলাতে দেখা যাচ্ছে। আবার নিজেই কাউন্টারে বসে জমার কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন এই ভিসা কর্তা।