যুক্তরাষ্ট্রের ভাণ্ডারে থাকা পারমাণবিক বোমার সংখ্যা প্রকাশ করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তথ্য গোপন করার পর গেল চার বছরের মধ্যে এই প্রথম মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) নিজেদের পরমাণু অস্ত্রের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ডিফেনস পোস্টের খবরে বলা হয়, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাতে তিন হাজার ৭৫০টি সক্রিয় ও নিস্ক্রিয় পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে। এক বছর আগের তুলনায় ৫৫টি ও ২০১৭ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭২ অস্ত্র ওয়ারহেড কম দেখিয়েছে তারা।
১৯৬৭ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ঠাণ্ডাযুদ্ধের সময় মার্কিন পরমাণু ওয়ারহেডের সংখ্যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। তখন দেশটির ভাণ্ডারে ৩১ হাজার ওয়ারহেড ছিল। এরপর থেকে এই প্রথম সর্বনিম্নসংখ্যক ওয়ারহেডের সংখ্যা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা ফের শুরু করতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের চেষ্টার অংশ হিসেবে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অস্ত্র সম্প্রসারণ বন্ধ ও নিরস্ত্রীকরণ চেষ্টায় পরমাণু ভাণ্ডার নিয়ে স্বচ্ছতা থাকতে হবে।
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়ে এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তি থেকেও সরে আসে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার সঙ্গে নিউস্টার্ট চুক্তিকেও ঝুঁকিতে ফেলে দেন তিনি।
চীনকে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন চুক্তি করতে চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ওয়ারহেডের তুলনায় চীনের ভাণ্ডার বেশ ছোটই বলা চলে।
চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি নিউ স্টার্ট চুক্তির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে প্রস্তাব দিয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাতে সায় দিয়েছেন। এ চুক্তি অনুসারে মস্কো ও ওয়াশিংটন ১৫৫০টি পরমাণু ওয়ারহেড মোতায়েন করতে পারবে।
নিউ স্টার্ট চুক্তির পরবর্তী পর্যায় নিয়ে গেল বছর রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছিলেন রুশ ও মার্কিন কূটনীতিকরা। এছাড়া প্রচলিত অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও তারা কথা বলেন। ওই আলোচনাকে ফলপ্রসূ বলে আখ্যায়িত করেন মার্কিন কূটনীতিকরা। দুপক্ষই তখন বলেছেন, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চলতি বছরের জানুয়ারির হিসাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ হাজার ৫৫০ ওয়ারহেড আছে। আর রাশিয়ার মালিকানায় ওয়ারহেডের সংখ্যা ছয় হাজার ২৫৫টি। চীনের কাছে সাড়ে ৩০০, ব্রিটেনের ২২৫ ও ফ্রান্সের ২৯০টি ওয়ারহেড রয়েছে।
আর ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়ার ৪৬০টি ওয়ারহেড রয়েছে।