রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন এবং মিয়ানমারে তাদের সুন্দর ও সম্মানজনক জীবন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কীভাবে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসন হতে পারে, রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে এবং সেখানে সুন্দর ও সম্মানজনক জীবন পেতে পারে বিশ্বের উচিত সে বিষয়ে চিন্তা করা। রোববার সকালে গণভবনে যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন বাংলাদেশের ভাইস চেয়ার ও লেবার পার্টির এমপি বীরেন্দ্র শর্মার নেতৃত্বে ব্রিটিশ ক্রস পার্টির সংসদীয় একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালে অমানবিক নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভাবে দেশত্যাগের পর বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলেও ছয় বছচআ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বৈশ্বিক আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুতরাং রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে উঠছে। পাঁচ সদস্যের সংসদীয় প্রতিনিধি দলে রয়েছেন- প্রাক্তন টেক ও ডিজিটাল অর্থনীতির কনজারভেটিভ মন্ত্রী পল স্কুলি এমপি, ইউকে হাউস অফ কমন্স সিলেক্ট কমিটির মেম্বার ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স নীল কোয়েল এমপি, হাউস অফ কমন্সের বিরোধীদলীয় হুইপ অ্যান্ড্রু ওয়েস্টার্ন এমপি এবং হাউস অফ কমন্সের সিনিয়র সংসদীয় সহকারী ডমিনিক মফিট। শেখ হাসিনা বলেন, জোর করে দেশ থেকে বিতারিত করার সময় বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার গর্ভবতী নারী ছিল। রোহিঙ্গারাও এখন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। ঘটছে রক্তপাতও। শেখ হাসিনা আরও বলেন, ভাসানচর দ্বীপে সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। সেখানে তারা অনেক ভালো আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা কয়েকটি ছোট ছোট দলে বিভক্ত। এক দল ভাসানচরে যেতে চাইলে আরেক দল বাধা দেয়। প্রতিনিধি দল মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের উদার আতিথেয়তা ও দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে তাদের সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করতে ৩০ জানুয়ারি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব এম সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলটির আগামী ৩১ জানুয়ারি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।