আম্পায়াররাও মানুষ, ‘ক্রিকবাজ’-এ এমন শিরোনামে একটি কলাম লিখেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক সাংবাদিক। তার নাম- টেলফোর্ড ভাইস। সেই কলামে বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ক্ষমা চাইতে বললেন ভাইস।
সদ্য শেষ হলো বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ডারবান টেস্ট। টেস্টে অন-ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার আড্রিয়ান হোল্ডস্টক ও মারাইস ইরাসমাস। টিভি ও রিজার্ভ আম্পায়ারও ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার। ম্যাচ রেফারি শুধুমাত্র জিম্বাবুয়ের। তবে মাঠের পরিচালনাটা করছেন হোল্ডস্টক ও ইরাসমাসই।
সেই টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে নেয়া অন-ফিল্ড আম্পায়ারদের অনেক সিদ্বান্ত চোখে পড়েছে। টাইগার বোলারদের নেয়া এলবিডব্লুর আবেদন নাকচ করে দেয়া, পরে রিভিউতে সাফল্য পাওয়া ছিলো বাংলাদেশের অর্জন। এছাড়া বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বিপক্ষে মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার স্লেজিংরের অভিযোগও আমলে নেননি অন-ফিল্ড আম্পায়াররা। তাই আম্পায়ারিং নিয়ে আইসিসির কাছে লিখিত অভিযোগ করার সিদ্বান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।
তবে ডারবান টেস্টে অন-ফিল্ড আম্পায়ারদের নেয়া সিদ্বান্তগুলো চোখ এড়ায়নি সাকিবের। পারিবারিক সমস্যা কারনে দলের বাইরে আছেন তিনি। তার মতে, ডারবান টেস্টে অন-ফিল্ড আম্পায়ারদের অনেক সিদ্বান্তই বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিলো। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে টুইটও করেছেন সাকিব।
ডারবান টেস্ট চলাকালীন সাকিব লিখেছিলেন, ‘আমার মনে হয়, আইসিসির এখন আবার নিরপেক্ষ আম্পায়ারিংয়ের নিয়মে ফিরে যাওয়া উচিত। কারণ বেশিরভাগ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশেই এখন কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।’
সাকিবের এমন কথা পছন্দ হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার সাংবাদিক ভাইসের। আম্পায়ারদের নিয়ে ক্রিকবাজে একটি কলাম লিখেন তিনি। সেই কলামের শিরোনাম ছিলো- ‘আম্পায়াররাও মানুষ’।
এরপর স্বদেশি দুই আম্পায়ার হোল্ডস্টক ও ইরাসমাসের আম্পায়ারিং রেকর্ড তুলে ধরেন ভাইস। কত শতাংশ সঠিক সিদ্ধান্ত বা কত শতাংশ ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো, আম্পায়ারিংয়ের জন্য কি কি পুরস্কার বা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, সেগুলো তুলে ধরেন ভাস। তিনি জানান, আম্পায়াররাও মানুষ এবং ভুল তাদেরও হতে পারে।
এরপর সাকিবকে উদ্দেশ্য করে ভাস লিখেন, ‘সাকিবের ভালোভাবেই জানা উচিত, ম্যাচে ৪টি করে ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৪টি গেছে বাংলাদেশের পক্ষে। আর চারটি তাদের বিপক্ষে। এজন্য হোল্ডস্টক ও ইরাসমাসের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত সাকিবের। তবে আম্পায়ারদের প্রতি যে ভয়াবহ ইতিহাস আছে, তাতে এটা খুব দ্রুত পাবেন বলে মনে হচ্ছে না।’
পুরো টেস্টে ১২টি বির্তকিত ও ভুল সিদ্ধান্ত দেন দুই অন-ফিল্ড আম্পায়ার হোল্ডস্টক ও ইরাসমাস। টেস্টের প্রথম চারদিন ১১টি বির্তকিত ও ভুল সিদ্বান্ত ছিলো। তাই বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছিলেন, ‘আম্পায়াররা ভুল না করলে ২৭৪ এর পরিবর্তে ১৮০ টার্গেট পেত বাংলাদেশ।’
২৭৪ রানের জবাবে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে ২২০ রানের বড় ব্যবধানে হার মানে টাইগাররা।
আগামী ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।